Ameen Qudir
Published:2019-01-15 11:07:04 BdST
গৌরবজীবনরক্ষাকারী ও প্রয়োজনীয় ৯৮ শতাংশ ঔষধ প্রস্তুত হচ্ছে বাংলাদেশেই
ডা.অসিত মজুমদার
______________________
সবার জন্য এটা খুবই সুখের সংবাদ যে বাংলাদেশ এখন প্রয়োজনের ৯৮% ঔষধ প্রস্তুত করতে সক্ষম। এটি মনগড়া কোন কাহিনী নয়। পত্রিকায় প্রকাশিত জনগুরুত্বপূর্ণ রিপোর্ট। এছাড়াও বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগের ঔষধও বাংলাদেশে প্রস্তুত হয়।কিছু কিছু রোগের ঔষধ বিদেশীরা এদেশ থেকে নিয়ে যায়। বেশ কিছু ঔষধ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানী হয়। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য কেউ কেউ কম খরচের চিকিৎসার জন্য প্লেন ভাড়া খরচ করে বাংলাদেশে আসে সময় ম্যানেজ করে। বাংলাদেশী যারা বিদেশে থাকে চাকুরী কিংবা অন্য কারণে তারাও সুযোগ হলে বাংলাদেশে এসেই চিকিৎসা নেয়।
বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে এখন আর কোন সংশয়ে থাকার সুযোগ নেই অথচ বিশ্বমানের সাথে তুলনা করলে খরচ অনেক কম।আপনি সিঙ্গাপুর বা থাইল্যান্ড গেলে চিকিৎসকের ভিজিট কত দিয়ে থাকেন ? প্রায় আট থেকে দশ হাজার টাকা। আর অস্ট্রেলিয়া বা আমেরিকায় খরচ কত একবার ভাবুন ?
ভাবছেন আমি বাংলাদেশে বসে বিদেশের কথা কেন বলছি? বাংলাদেশের চিকিৎসক যাঁরা ওসব দেশে যাবার সুযোগ পেয়েছেন তাঁরা বেশ দক্ষতার সঙ্গেই চিকিৎসা পেশা চালিয়ে যাচ্ছেন। সবাই ইউএসএমএলই পাস করেই ওখানে চিকিৎসা করছেন। একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় ডেডিকেশন এবং স্ট্রং আর্থিক সাপোর্ট থাকলে বাংলাদেশের প্রায় সব চিকিৎসকই ইউএসএমএলই সম্পন্ন করার যোগ্যতা রাখেন যারা শুরুতেই বাৎসরিক ৭০ - ৮০ হাজার ইউ এস ডলার দিয়ে কাজ শুরু করে থাকেন। এটা না হলেও বিভিন্ন প্যারাক্লিনিক্যাল বা প্রি-ক্লিনিক্যাল বিষয়ে ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে রয়েছে সুবর্ণ সুযোগ। তাছাড়া গবেষণা করার ক্ষেত্রেও আছে অবিশ্বাস্য যোগ্যতা প্রয়োজন যথাযথ যোগাযোগ বা তথ্যের আদান প্রদান। সবাই না জানলেও এটাই সত্য যে সঠিক যোগাযোগ মেইনটেন করতে পারলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই ক্যারিয়ার গড়তে পারেন বাংলাদেশী চিকিৎসকগণ। দেশে ক্রমাগতভাবে মেধাবীদের মূল্যায়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হলে চিকিৎসকগণের বিদেশে পাড়ি দেয়া এখন বোধ হয় সময়ের ব্যাপার মাত্র।
রোগ নিরূপণের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশে অসামান্য উন্নতি হয়েছে। অত্যাধুনিক ডায়াগনস্টিক যন্ত্রপাতি, দেশে বিদেশে প্রশিক্ষিত দক্ষ চিকিৎসক ও টেকনোলজিস্ট দল রোগ নিরূপণে ঈর্ষণীয় সাফল্যের অংশীদার। চিকিৎসা সেবার এই শাখায় বাংলাদেশের উন্নতি সত্যিই অভাবনীয় ও প্রশংসনীয়। নিজ দেশে বিদ্যমান এই সুযোগকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। বিদেশে অবশ্যই যাবেন তবে প্রয়োজনে। যেসব রোগের চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব তার জন্য বিদেশ যাওয়াটা কতখানি যুক্তিসংগত? বাংলাদেশে চিকিৎসকের দেয়া নিয়মাবলী মেনে চলুন। আপনার অভিযোগ থাকতে পারে। তার সমাধানও আছে। এটা একটা ভিসিয়াস সাইকেল ( vicious cycle) । আসুন দেশের অর্থ দেশেই খরচ করি। নতুবা এক সময় এই উন্নত ব্যবস্থাটাই মুখ থুবড়ে বসবে।
চিকিৎসার সহযোগী হিসেবে নার্সিং পেশাটাও যথেষ্ট সুসংহত বাংলাদেশে। প্রয়োজন যথাযথ মর্যাদা ও ভালবাসা। যথাযথ মর্যাদা ও ভালবাসা দিয়ে পেশাটির আরও উন্নয়ন সম্ভব। লাভবান হবে এদেশের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম।
সবক্ষেত্রে সঠিক সিস্টেম ও নীতিমালার মধ্য দিয়ে এগুতে পারলে বাংলাদেশের রয়েছে অফুরন্ত সম্ভবনা। আসুন দেশকে ভালবাসি। দেশের চিকিৎসা সেবার উন্নয়নে সহযোগিতা করি। মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাই। না হলে একদিন পশ্চাতে হবে আমাদেরই।
______________________________
ডা.অসিত মজুমদার
MBBS, CCD (BIRDEM), Steno Diabetes Course (Denmark)
Senior Medical Officer
Bangladesh Institute of Health Sciences (BIHS) & Hospital
আপনার মতামত দিন: