Ameen Qudir

Published:
2017-02-25 15:23:40 BdST

অসম্মানের সব থেকে বেশী শিকার চিকিৎসা পেশা




ডা.শিরিন সাবিহা তন্বী
_______________________

পে স্কেল বৈষম্যটা আমাদের জন্য ছিল কোমর ভেঙ্গে দেয়ার মত একটা আক্রমন!
আমাদের সুযোগ এসেছিল যদিওবা আবার কোমর সোজা করে দাঁড়ানোর!
অষ্টম পে স্কেল আন্দোলনটা যখন তুঙ্গে,,ষাট হাজার প্রথম শ্রেনীর সরকারী কর্মকর্তা একযোগে রাস্তায় নেমে এল!ঠিক আমরা আমাদের পাওনা গন্ডা আদায় করে নিতে পারতাম!

 

পারলাম না।কারন যুগ যুগ ধরে বাঙ্গালীর ইতিহাসে মীর জাফরদের যে কলংকিত ইতিহাস তা এখানেও হলো!প্রকৃচি নেতারা নিজেরা ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হলেন আর আমাদের ললাটে এঁকে দিলেন পরাধীনতার ছাপ!
একই ইস্যু নিয়ে আন্দোলনে নেমে বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্ব ঠিক ই কঠোর অবস্থান নিয়ে তাদের দাবী আদায় করে নিলেন!

 

আমরা মূল্য দিলাম নেতাদের বেঈমানীর!
গত এক বৎসরের ও কম সময়ে জনপ্রশাসন দেখিয়েছে তার কুৎসিৎ স্বরূপ টা।
আর এই অসম্মানের সবথেকে বেশী শিকার হয়েছে চিকিৎসা পেশা।এর কারন পরিষ্কার।হয়ত দু একজন অফিসার ও পাওয়া যাবে না যারা মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ব্যর্থ না হয়ে এই পথে হেঁটেছেন!

 

জনপ্রশাসন পদক নামে অলৌকিক পদক প্রদান এবং স্বাস্থ্যসহকারীদের ডাক্তার লিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়ে পুরষ্কার দিয়ে তাকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা,যখন তখন জেলা প্রশাসকদের স্বাস্থ্য সেন্টার ভিজিট এবং গনযোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো,মেডিকেল ভর্তী পরীক্ষায় জুনিয়র এসিদের সিনিয়র ডাক্তারদের সাথে অসৌজন্য আচরন এবং একটা নতুন সংযোজন!এটা হলো সিজিজেন জার্নালিষ্ট নামক অপসাংবাদিক কিছু চাঁদাবাজ তৈরী করে ফেসবুকে ডিসি পেজ ওপেন করা।

 

এতে এই এটেনশন সিকার জেলা প্রশাসক নিজেকে বাংলা সিনেমার একশন হিরো আর ঐ জার্নালিষ্টদের হিরোইন ভেবে সকাল বিকাল বিভিন্ন গান নাচের দৃশ্য আপ দেন।সকলে রাজসভার মত ডিসির গুনকীর্তন করে।আর নিজের ঘুষ দুর্নীতি লুকাবার জন্য ফোকাস করে হাসপাতালকে!

 

দিন রাত হাসপাতালের ট্রলী,ওয়াশরুম,বদনা,লিফট এই নিয়ে ডাক্তারদের এবং বিশেষত পরিচালককে দোষারোপ করে পোষ্ট এবং তা প্রিন্ট করে নিজের থেকে উপরের গ্রেডের কর্মকর্তা পরিচালককে প্রেরন করে এটাই প্রমাণ করতে চান যে ডাক্তার পরিচালক অক্ষম।
এই প্রশাসনিক পদগুলো ও জন প্রশাসন থেকে আসবে।

আমাদের অন্যান্য পেশাজীবীদের ভদ্রতার এবং অনেক্যের সুযোগে এরা আমাদের সিনিয়র পোষ্টগুলোর জন্য লালা ঝরায়।জনপ্রশাসন এখন নিজেদের সরকারের অফিসার কম, আর রাজনীতিবিদ বেশী ভাবেন!
কোন আমলার আত্মীয় ডাক্তার হয়ে মন্ত্রনালয়ে প্রভাব খাটিয়ে কিংবা কোন ধনীর সন্তানের থেকে বিশাল অর্থনৈতিক সুবিধা নিয়ে কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকতে বাধ্য করে।ভীত উধ্বত্বন চিকিৎসক মুখ বুজে সহ্য করেন।অনুপস্থিত ডাক্তারের ডিউটি করে সাধারন ডাক্তার,যিনি কোন সচিবের ভাই বোন বা সন্তান না।আর ঐ অনুপস্থিতির ক্ষোভ তাদের উপর পরে যেসব ডাক্তার কর্মক্ষেত্রে ডাবল কাজ করেন!

 

এই সকল অবিচারের বিরুদ্ধে শিড়দাঁড়া শক্ত করে দাঁড়াতে হবে।কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রনালয় পেশাজীবীদের এমন একটা দাবী যা বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেনের মত!


চিকিৎসকদের জন্য এর গুরুত্ব সর্বাধিক!সংবাদপত্রগুলো ডিসির নিয়ন্ত্রনাধীন।অপসাংবাদিকতা করিয়ে সমাজে চিকিৎসকদের ইমেজ নষ্ট করবার কোন দীর্ঘমেয়াদী ষড়যন্ত্র হলেও অবাক হবো না।।
তাই দেশের সকল ডাক্তারদের কাছে আকুল আবেদন,যেখানে যেভাবেই থাকুন।
কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রনালয়ের দাবী থেকে কখন ও সরে দাঁড়াবেন না।।


___________________________

ডা.শিরিন সাবিহা তন্বী । দেশের জনপ্রিয় কলামিস্ট। প্রতিভাবান কথাশিল্পী। মেডিকেল অফিসার, শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। পেশাজীবী নেতা।

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়