Ameen Qudir

Published:
2017-02-24 01:12:05 BdST

একরাশ ঘৃণা আর একদলা থু থু মিথ্যা সাংবাদিকতার প্রামান্য ভিডিও


 

 

 

 

ডা. তরফদার জুয়েল

 

_________________________


আগে জানতাম, সংবাদমাধ্যম হল সমাজের দর্পণ স্বরূপ। কিন্তু ইদানিং সেই দর্পণে সাংবাদিকমহল যা দেখাচ্ছে, তাতে সংবাদমাধ্যমকে আর দর্পণ মনে হচ্ছে না। তারা সত্যের পরিবর্তে মিথ্যা-বানোয়াট খবর দিয়ে সমাজের মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।

কয়েকদিন আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন নারী চিকিৎসক রোগির পুরুষ এটেন্ডেন্ট দ্বারা শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত হল, এটেন্ডেন্ট দ্বারা কাচের আঘাতে রক্তাক্ত হল কিন্তু তার প্রতিবাদ করায় দেশের প্রথম সারির এক দৈনিকে খবর আসল- "সহকর্মী আহত হবার খবর শুনেই উত্তেজিত হল ইন্টার্ন চিকিৎসক ও বন্ধ করে দিল চিকিৎসা, রোগিদের দূর্ভোগ।"

বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নারী চিকিৎসকের সাথে খারাপ ব্যবহার করায় ও ইভটিজিং করায় তার সহকর্মী প্রতিবাদ করেছিল। কিন্তু রোগির এটেন্ডেন্ট ক্ষমতার জোর দেখিয়ে চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করায় রোগির লোকের সাথে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ঝামেলা হয়। কিন্তু সংবাদমাধ্যম এখানেও ঘটনার প্রথম অংশ বাদ দিয়ে পরের অংশ ফলাও করে প্রচার করছে যে- "মহিলা ডাক্তারকে আপা ডাকায় রোগির লোককে চিকিৎসকদের মারধর"। ঘটনা শুনে মনে হবে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হা করে বসে থাকে কখন একজন রোগি আসবে আর আসা মাত্রই রোগির লোককে ধরে পিটাবে।

এই সংবাদমাধ্যমগুলোই সারাবছর নারীর অধিকার, নিরাপত্তা নিয়ে ম্যাতকার করে। কিন্তু রহস্যজনকভাবে নারী চিকিৎসকদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা যখন বিঘ্নিত বা নারী চিকিৎসকরা যখন প্রতিনিয়ত ইভটিজিংএর শিকার হচ্ছেন, তখন তারা নীরব।

দেশের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা যখন মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়, তখন সংবাদ মাধ্যমগুলো তাদেরকে নিয়ে ফিচার ছাপে, সবাইকে উৎসাহ দেয় ডাক্তারি পড়ার জন্য আবার ৫ বছর পর এই ছাত্র ছাত্রীরা যখন ডাক্তার হয়, তখন তারা জনগণের শত্রুতে পরিণত হয় এই মিডিয়ার কল্যাণেই।

আপনি কোন পত্রিকায় কোন খবর পড়লেই যে সত্য জানলেন, এমনটা নয়। আপনাকে সত্য জানার জন্য ওই পত্রিকা আগামী একমাস নিয়মিত পড়তে হবে, ঘটনার বিভিন্ন মোড় সম্পর্কে জানতে হবে। মাঝে মাঝে দেখবেন, একমাস আগে তারা যে খবর দিয়েছিল, একমাস পরের রিপোর্ট তার সম্পূর্ণ বিপরীত।

এদেশের অধিকাংশ সংবাদমাধ্যম সমাজের দর্পণ হিসাবে কাজ না করে ব্যক্তি স্বার্থে সংবাদ ব্যবসায়ী হিসাবে কাজ করছে, সর্বদা সংবাদের চুম্বক অংশ দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।

এইসকল সংবাদ ব্যবসায়ীদের চেহারা মনে হলেই মনের ভিতরে জমে একরাশ ঘৃণা আর মুখে আসে একদলা থু থু। সেই থু থু তাদের মুখে নিক্ষেপ করতে চাইনা, কারন- তাদের মুখের আদল মানুষের মুখের মতন, যে মুখে থু থু দিলে মানবসত্ত্বার প্রতি অপমান হয়।

মাটিতেই ফেললাম একদলা থু থু, সংবাদ ব্যবসায়ীরা গায়ে মেখে নিস।

(দু বছর আগের একটা ভিডিও আপলোড করলাম রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক সম্পর্কে হলুদ সাংবাদিকতা নিয়ে। ডাক্তাররা তো আর সাংবাদিকদের মত ক্যামেরা নিয়ে ঘোরে না, তাই সব ঘটনার ভিডিও করেও রাখতে পারে না। তাই ডাক্তারদের নিয়ে মিথ্যা বানোয়াট খবর রটালেও প্রমান করা কঠিন যে, সেখানে ঘটনার পিছনেও আরেকটা ঘটনা ছিল। এই ভিডিওটা পুরাটাই সাংবাদিকদের ক্যামেরায় রেকর্ড করা কিন্তু ব্যবসার স্বার্থে তারা কি করেছিল? দেখার আমন্ত্রণ রইল।)

ভিডিওটির লিঙ্ক দেয়া হল এখানে।


https://www.facebook.com/tarofdar.jewel/videos/1322092504515073/

 

 

 

 

https://www.facebook.com/tarofdar.jewel/videos/1322092504515073/

 

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়