Ameen Qudir

Published:
2017-02-22 14:49:53 BdST

চিকিৎসকরা বড় একা, বড় অসহায়



 

ডা. কৃষ্ণ রায়
___________________________

চিকিৎসকরা বড় একা, বড় অসহায়।

চিকিৎসক বৈরিতা সর্বত্র। বৈরি রাষ্ট্র, বৈরি এমনকি চিকিৎসা প্রশাসন। একা চিকিৎসকরা এ লড়াইয়ে টিকতে পারবে কিনা জানা নেই।

ব্যক্তিগত হতাশা, ক্ষোভ জমা হতে হতে উঁচু স্তুপ হয়ে উঠছে।

এমতাবস্থায় নিজের সুস্থতাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

চিকিৎসা পেশা এবং সব পেশার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই বিনয়ের সাথে বলি, বহুবার মনে হয়েছে এরচেয়ে যদি সামান্য আয়ের ছোট কিছু করতাম তবুও হয়তো মানসিকভাবে তুলনামূলক ভালো থাকতাম।

চিকিৎসা পেশা এবং চিকিৎসক সম্পর্কে আমাদের অভিভাবক, সমাজের মানুষ যা ভাবে_যেভাবে দেখে তার বেশিরভাগ মারাত্মক রকমের অসত্য।

সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সিনেমায় একটি পেশা যেভাবে ফুটে উঠে, তা ন্যাক্কারজনক। অথচ শরীরবিজ্ঞান কি চমৎকার বিজ্ঞানের একটি শাখা। অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করে তুলতে পারার মধ্যে কি পরম সুখ। জোর দিয়ে বলতে পারি, অসুস্থ এ সমাজে এখনও পেশাজীবী হিসেবে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ভালো লোক এ পেশাতেই আছেন।

চিকিৎসা ব্যবস্থার ত্রুটির জন্য চিকিৎসকরা খুব সামান্যই দায়ী। দায়ী স্বাস্থ্য প্রশাসন, দায়ী রাষ্ট্র। পর্যাপ্ত চিকিৎসক, সেবিকা, অন্যান্য স্টাফ, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ঔষধ পত্র, ভালো কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করলে তবেই সুচিকিৎসা সম্ভব নতুবা নয়।

চিকিৎসা নিশ্চিতভাবেই একটি টিম ওয়ার্ক যার মূলে চিকিৎসক কিন্তু জেনে অদ্ভুত লাগবে হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডের একটি সেবিকা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতাও একজন অধ্যাপকের নেই।

জেনারেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই যখন একসময় সমাজের সর্বত্র ছড়ি ঘোরায় তখন মেডিকেল, বুয়েট, কৃষি শিক্ষার্থীরা প্রান্তিক হয়ে সমাজের একপাশে ঢাল তলোয়ারহীন সেবকের স্থানে নিপতিত পতিত হয়।

প্রকৌশলীরা বিদেশগামী হন, কৃষিবিদেরা বিশেষ বিশেষ ক্ষমতাবান ক্যাডার কর্মকর্তা হতে চান। ক্ষমতার জোর, চরম গোষ্ঠী প্রীতি, বেকার, বৈষম্যের এ সমাজে যা অবশ্য একেবারে অনাকাঙ্ক্ষিত ছিলনা। মনে পড়ছে কিছুদিন আগে বলা প্রধান বিচারপতির একটি কথা, "বর্তমানে রাষ্ট্রের প্রতিটি বিভাগ একে অপরের উপর আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে।" ভাবা যায়! কিন্তু এটা তো বাস্তবতা।
________________________

লেখক
ডা. কৃষ্ণ রায় । সুলেখক । MD, PSYCHIATRY, residency course, BSMMU

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়