Ameen Qudir

Published:
2018-10-08 21:21:20 BdST

বিএমএ মহাসচিবের বক্তব্য চিকিৎসকদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে


 

 


ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ
_______________________________

গণভবনে রোববারের চিকিৎসক সম্মিলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরেই দ্বিতীয় যার বক্তব্যটি অংশগ্রহণকারী প্রতিটি চিকিৎসকের হৃদয় কেড়েছে তিনি হলেন বিএমএ মহাসচিব ডা. এহতেশাম চৌধুরী।

অনেকে হয়তো বিভিন্ন কারনে প্রকাশ্যে আমার এই বক্তব্যের সাথে দ্বিমত করতে পারেন কিন্তু আমি বাজি ধরে বলতে পারি সেই দ্বিমতকারী ব্যাক্তিটিও মনে মনে স্বীকার করবেন যে বিএমএ মহাসচিবের বক্তব্য তার হৃদয় ছুয়ে গেছে!

সেই দ্বিমতকারী ব্যাক্তিটিও স্বীকার করবেন যে,
বাস্তবায়িত হোক আর না হোক চিকিৎসকদের প্রাণের দাবিগুলো এমন করে হাজার হাজার চিকিৎসককে সামনে রেখে স্বয়ং নেত্রীর সামনে তুলে ধরেছেন আগে কে কবে!!

'বাচ্চা না কাঁদলে মা-ও দুধ দেয় না।'
ক্ষুধাটা তো আগে জানান দিতে হবে।
আমরা আমাদের ক্ষুধাটাই এতোদিন ধরে যথাস্থানে যথাসময়ে জানান দিতে পারিনি!

বিএমএ মহাসচিব যথেষ্ট গাটস নিয়ে প্রত্যায়দীপ্ত কণ্ঠে এবং জড়তাহীন ও তেজোদৃপ্ত শব্দচয়নে আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো অত্যন্ত সাবলীলভাবে তুলে ধরেছেন।

মহাসচিবের বক্তব্যটি নেত্রী অত্যন্ত ধর্য্য নিয়ে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত শুনেছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো নোটও করেছেন যেটা নেত্রী তার বক্তৃতায় স্বীকারও করেছেন।

নেত্রী কিন্তু মহাসচিবের যৌক্তিক দাবিদাওয়া সম্বলিত এই দীর্ঘ বক্তৃতায় বিন্দুমাত্র বিচলিত কিংবা বিরক্ত হননি এবং তাকে কোনরকম তিরস্কারও করেননি!

অনেকেই হয়তো এই ভয়ে নেত্রীর সামনে দাবিগুলো এর আগে তুলে ধরতে পারেনি।
কিন্তু চরম সত্য ও বাস্তবতা হলো দাবি যদি যৌক্তিক হয় তবে নেত্রী কখনোই বিরক্ত হননা, তিরস্কারও করেননা।
অভিজ্ঞতা অন্তঃত তাই ই বলে।

কিন্তু মহাসচিবের দাবিগুলো বড় অবেলায় বেলাশেষে রোদনের মতো হয়ে গেছে!
নেত্রী নিজেও বলেছেন,
'বেলাশেষে দাবি দিয়ে লাভ কি ?'
স্পষ্টতই প্রমানিত হয়েছে নেত্রী এতোদিন আমাদের এই প্রাণের দাবিগুলো জানতেই পারেননি!!

আমাদের সকল চিকিৎসক নেতারা এতোদিন ধরে আপ্রাণ চেষ্টা করলেও মন্ত্রণালয়ের আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারনে এই দাবিগুলো প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত পৌছাতে পারেননি!
এটাই আমাদের ব্যার্থতা।
এ ব্যার্থতা আমাদের সামষ্টিক ব্যার্থতা!
স্পষ্টতই কোন নেতার একক ব্যার্থতা নয়।

শ্রদ্ধেয় নেতারা যদি দাবিগুলো যথাসময়ে যথাস্থানে(সরাসরি প্রধানমন্ত্রী সমীপে) তুলে ধরতে পারতেন তাহলে হয়তো আমাদের অনেক সমস্যাই এতোদিনে সমাধান হয়ে যেতো!

যাইহোক, তারপরেও নেত্রী আমাদেরকে একেবারে নিরাশ করেননি।
তিনি বলেছেন, বারবার বলেছেন,
'আপনাদের এই ১৬দফা দাবি আমি ফেলে দিচ্ছি না।
রেখে দিচ্ছি। রেখে দিচ্ছি। ভবিষ্যতে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসলে বিবেচনা করবো।'

তিনি বলেছেন-
একমাসেরও কম সময় পরেই গঠিত হবে নির্বাচনকালীন সরকার।
তখন রুটিন ওয়ার্কের বাইরে আর কোন কাজ করা সম্ভব নয়। তখন এই দাবিদাওয়া পুরোন সম্ভব নয়।
আবার নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের আগে এই অল্প কয়েকদিনের মধ্যেও এই দাবিদাওয়া বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

ফিরিস্তি দিতে চাইনা।
প্রতিটি চিকিৎসকই জানেন এবং যদি নিতান্তই অকৃতজ্ঞ না হন তবে স্বীকারও করবেন-
বিগত একদশকে নেত্রী দেখিয়ে দিয়েছেন,
প্রমান করে দিয়েছেন,
চিকিৎসকদের জন্য এই সরকার যা যা করেছে স্বাধীনতার পর অদ্যবধি এই ৪৭বছরে আর কোন সরকারই তা করতে পারেনি।
আপনার কাছে কথাটি অপ্রিয় হলেও এটাই সত্য।
আপনার কাছে কথাটি রাজনৈতিক মনে হলেও এটাই অরাজনৈতিক নিরেট সত্য।

পরিশেষে বলতে চাই,
চিকিৎসকদের অমিমাংসিত সমস্যাগুলো যদি নিরসন করতে চান তবে এই সরকারের কোন বিকল্প নেই।
এটাই প্রমানিত সত্য।

তাই আসুন, এই সরকারকে আবারো নির্বাচিত করে আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো পুরোনের মাধ্যমে দেশকে এবং দেশের স্বাস্থ্যখাতকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাই।
____________________________

লেখক ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ
সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ;স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ
যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক;চিকিৎসক পরিষদ, বিএসএমএমইউ।

সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ শাখা ,দিনাজপুর।

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়