Ameen Qudir

Published:
2018-09-18 15:25:28 BdST

কোন পথে ডাক্তার সমাজ




 

বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. নাসির উদ্দিন আহমেদ
________________________________

আমি অনেক ডাক্তার সহকর্মী দের লিখা পড়ছি ইদানিং। সারসংক্ষেপ; হতাশা,চারিদিকে নিকষ কালো অন্ধকার। আসলে কোন অন্ধকার বা হতাশা জনক পরিস্থিতি নেই।তৈরী করা হয়েছে।কারণ গুলোর জন্য আমার বিবেচনায় ডাক্তার সমাজ অনেক ক্ষত্রেই দায়ী।এছাড়াও স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ডাক্তারদের পেশাজীবি সংগঠনের দায় আছে।

একজন পুলিশ সদস্য,উকিল বা আমলার ক্ষমতা বেশি।ডাক্তাদের সন্মান বেশি হওয়া উচিৎ এ জন্যে ডাক্তারগন ক্ষন গননা না করেই রোগীর জীবন বাঁচাতে সাহায্য করে। কিন্তু সে সন্মান ও সামাজিক মর্যাদা ডাক্তারগন পাচ্ছে না কেন। এটা অর্জন করতে হয়।কেউ দিয়ে দিবে না।

৩০ বছর আগেও এমন তো ছিল না।আমাদের নিজেদের বন্ধন সুদৃঢ় নেই।নেই পারস্পারিক সহানুভূতি। গ্রুপিং আর লেজুড় বৃত্তি এবং ব্যক্তিগত প্রাপ্তি নিয়ে ৫% ডাক্তার লাভবান হচ্ছে।নীতি বিবর্জিত কাজ করছেন।৯৫%ডাক্তার কোন অনৈতিক সুবিধা নেয় না।

ভারতে একজন সদ্য পাশ করা MBBS ডাক্তার ৪০ হাজার রুপি বেতন পায়।যারা অনারারি করেন ৫০ হাজার রুপি সন্মানি পান।সরকারি মেডিকেল কলেজ গুলো দুই বছর পর পর কোয়ালিটি ইন্সপেকশনে যেয়ে টিকে থাকতে হয়।

আর বাংলাদেশে কি হচ্ছে।একজন সহকর্মীর লিখায় তথ্যভিত্তিক ভাবে দেখলাম২০২১ সালে প্রায় ৫০ হাজার ডাক্তার কর্মহীন হয়ে পড়বে।

আমাদের এখানে একজন চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীর থেকে কম বেতনে ক্লিনিক গুলোতে ডাক্তাররা( ১৫ হাজার) বেতন পায়।

কিভাবেএকজন ডাক্তার এ সিস্টেম এ মানবিক ডাক্তার হবে।জন্মের শুরুতে প্রথম বর্ষ থেকে পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিগ্রি পেতে ১৫ বছর লেগে যায় অনাদর ও অবহেলায়।

সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শয্যা সংখার তিনগুণ রোগী ভর্তি থাকে।১০ আর ১৫ টাকার টিকেট।অনেক বড় লেভেলের অধিকারিক রা বিভিন্ন নির্দেশিনা দেয় বাথরুম ভিজিট করবে,আরো অনেক কিছু ভিজিট করবে।জনবল দিতে পারছে না অথচ মানসন্মত হাসপাতাল সবাই চায়।মাননীয় সরকার প্রধানের আন্তরিকতা র অভাব নেই।অভাব শুধু আধিকারিক দের আন্তরিকতার।

এখন সময় এসেছে সব কাজে নন ক্লিনিকাল যোগ্য ও পারদর্শী ডাক্তার দের দিয়ে মেডিকেল হাসপাতাল চালানো।সব লেভেলে নন ক্লিনিকাল পারদর্শী দক্ষ ডাক্তার দের দিয়ে সর্বচ্চো পর্যায় থেকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে দের হাসপাতাল ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দিলে বাংলাদেশের চিকিৎসা সংকট ৯০% শতাংশ কেটে যাবে।প্রশাসনিক কাজে যে ডাক্তারগন দায়িত্বে থাকবেন তারা প্রাইভেট প্রাক্টিসি করবে না।উনারা নন প্রেক্টিসিং ভাতা পাবেন।দক্ষ প্রশাসনিক ডাক্তারদের বিদেশ উচ্চতর প্রশিক্ষণ MD,MSC,Diploma in hosp management course এ পাঠাতে হবে।

নবীন ডাক্তারদের বলব ব্যবহারে বিনয়ী হবার বিকল্প নেই।পড়াশুনার বিকল্প নেই।তারপর বিদেশ চলে যাও।সরকারি চাকুরী প্রত্যাশা করো না।এত ডাক্তারকে সরকারি চাকুরী দেয়া রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব নয়।

ক্লিনিক বা বেসরকারি হাসপাতালের মালিক রা তোমাদের স্বগোত্রীয় বা অগোএীয় ধন্যাড্ড। এদের বিবেক মরে গেছে।এদের কে দেখার জন্য মহান সৃষ্টিকর্তা আছেন।এদের বিত্ত এদের রোগের চিকিৎসায় শেষ হয়ে যাবে।

ফ্রি মার্কেটের যুগে রোগীর অধিকার আছে সে কেথায় চিকিৎসা নিবে।ভোক্তাদের এখন জবাবদিহি করতে হবে।মানুষ আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি সচেতন।আইন অমান্য করলে ডাক্তারদের জবাবদিহি করতে হবে।তাই বুদ্ধিমান এর মত পেশেন্ট হেন্ডেল করতে হবে।আবেগ দিয়ে নয় মাথা দিয়ে কাজ করতে হবে। নিম্নমধ্যবিত্ত আর গরীবদের জন্য আল্লাহই ভরসা।উচ্চবিত্তদের জন্য সব সুযোগ ছিল এবং থাকবে।

আমারা ডাক্তাররা কমবেশি কিছুটা অসামাজিক, সন্মান জনক ব্যতিক্রম বাদে।যারা নগদ টাকা আয় করে চলে হয়তো তারা অনেকেই লোভী হয়। কিন্তু যারা একদিনে ঘুষ খেয়ে ডাক্তারদের একবছরের কামাই পকেটে নিয়ে নেয় অন্তত এ সমাজের মানুষ তাদের কষাই বলবে না।

চাকুরী জীবনের শেষলগ্নে প্রার্থনা করি আল্লাহ এর প্রতিবিধানের জন্য তুমি ব্যবস্থা করে দেও এবং পেশাজীবি সংগঠন গুলো বিশেষ করে বি এম এ কে জাগ্রত কর।
______________________________

বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. নাসির উদ্দিন আহমেদ

পরিচালক
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়