Ameen Qudir
Published:2018-08-02 16:42:23 BdST
স্কুলশিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলন, হায়েনার হাসি: অাসুন ,সবাই সাবধান হয়ে যাই
ডা. গুলজার হোসেন উজ্জ্বল
__________________________
একটি রাষ্ট্রের স্কুল ছাত্ররা যখন সবচেয়ে যৌক্তিক আন্দোলনটি করে বা করতে বাধ্য হয় আমাদের তখন একই সাথে আনন্দ, আতংক, ও দুঃখ হয়। আনন্দ হয় এজন্য যে আমাদের সন্তানেরা জেগেছে৷
আর আতংক হয় একারণে যে যাদের এই কাজটি করার কথা ছিল সেই বৃদ্ধ বর্জ্য পদার্থগুলির ভার এই সমাজকে বইতে হবে। কি করে বইবে?
দুঃখ হয় এই ভেবে যে শেষ পর্যন্ত এই বাচ্চাগুলিকে পথে নামতে হলো!
______________
আপনারা কিছু করতে পারেননা। সারাজীবন আপোষ করে গেছেন। এখন ঘরে বসে প্রমিত ভাষা শিখাচ্ছেন। আর ছি ছিক্কার করেছেন৷
আপনারা যে বুড়ো হয়ে বট তলার খুড়ো হয়ে গেছেন তা বোঝেন? ভাষা শেখানোর সময় এটা না জনাব। যা শেখাতে পারেননি তার দায়ও আপনার।
আমরা আধমরা, আমাদের দান শেষ।
আসেন,আপাতত এই সবুজ অবুঝদের কাছে শিখি। লাইনে আসি। লাইসেন্স শো করি।
সবাই সাবধান হয়ে যাই ভাই৷
____________________
আহারে, এই রাষ্ট্রের সর্বাংগে ব্যথা।
জাতির বিবেকের গাড়ি চালায় যে ড্রাইভার তারও লাইসেন্স নাই। গাড়িতে কোন কাগজপত্র নাই। শুধু মিডিয়ার আইডি কার্ড আছে।
ভিডিও লিঙ্ক : https://www.facebook.com/shoaib.sculpture/videos/1380530972080406/?t=28
এরা এসেছিল আন্দোলনের নিউজ কাভার করতে। নিরাপদ সড়কের দাবীতে যে আন্দোলন সেই আন্দোলনের নিউজ কাভার করতে এসেছিল কাগজহীন গাড়ি নিয়ে।
এত ভন্ডামি সইবে কি করে এই মাটি।
_________________
একটা ভিডিও দেখলাম ছাত্ররা পুলিশের মোটর সাইকেল থামিয়ে দিয়েছে। তারপর বলছে "আপনার হেল্মেট কোথায়? "
পুলিশ ভাইটি প্রথমে একটু রাগ দেখানোর চেষ্টা করলে অনেক গুলো ছাত্র চলে আসে।
পুলিশ ভাই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়।
একছাত্র চাবি কেড়ে নেয়৷ আরেকজন পুলিশ ভাইটির টেকো মাথায় হাত দিয়ে বলে "হেলমেট কই আপনার?"
সাথে সাথে অন্যরা বলে "এই গায়ে হাত দিবিনা৷ "
পুলিশ ভাইটি বোকার মত হাসতে থাকে।
ভিডিও লিঙ্ক : https://www.facebook.com/bdchokh/videos/708852039447554/?hc_location=ufi
আরেকছাত্র পুলিশ ভাইয়ের মুখে চিপস তুলে দেয়। সেই চিপস খেয়ে পুলিশ হাসে ছাত্ররাও হাসে।
তারপর ছাত্ররা পুলিশ ভাইকে বলে " আংকেল আপনারা আমাদের আইন শেখাবেন আর আপনারাই কিনা....."।
এই সমাজের একজন দায়িত্বশীল মানুষ হিসেবে আমি খুব লজ্জা পাচ্ছি। যে কাজ আমাদের করবার কথা ছিল তা বাচ্চারা করছে। আমাদের স্কুলের বাচ্চারা।
সবাই সাবধান হয়ে যাই ভাই
_____________________
শাহবাগ আন্দোলন নিয়েও এরকম আশাবাদী হয়েছিলাম। নিজে অফিস শেষে দুই ঘন্টা করে শাহবাগে দাঁড়িয়েছি, শ্লোগান দিয়েছি৷
প্রায়ভেট ভার্সিটির ভ্যাট বিরোধি আন্দোলনেও আশান্বিত হয়েছিলাম।
কোটা আন্দোলন দেখেও এরকম আশান্বিত হয়েছিলাম।
আমাদের আগের প্রজন্মও নিশ্চয়ই নূর হোসেন, বসুনিয়াদের দেখে আশান্বিত হয়েছিল।
কিন্তু ঐ সব আন্দোলন ও আন্দোলনের নেতাদের কি পরিণতি হয়েছে তা ভাবলেই বুক ভেংগে যায়।
___________________
হায়েনা একটা প্রানী।
হায়েনার বৈশিষ্ট্য কি?
মানুষ ছাড়া হায়েনা নাকি আরেকটি প্রানী যে হাসতে পারে।
তবে হায়েনার হাসি মানুষের মতনা। এদের হাসি দেখলে পিলে চমকে যায়।
আমাদের কোন কোন মন্ত্রীর হাসি দেখলেও আমাদের পিলে চমকে যায়। আমাদের অসহায় লাগতে থাকে, ভয়ও লাগতে থাকে। আমরা তখন আকাশে সূর্য দেখতে পাইনা, পায়ের নিচে মাটি দেখতে পাইনা। আমরা তখন আমাদের শিশুদের শক্ত করে জড়িয়ে ধরি। আমাদের স্ত্রীরা আমাদের শক্ত করে জাপটে ধরে। আমাদের তখন মনে হয় আমাদের আসলে কোন মূল্য নেই। মানে নেই।
তখন আমাদের মনে হয় আমরা তো হায়েনার দেশে থাকি।
তখন আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে আমরা কেন পালাইনা এ জংগল থেকে?
তখন আমাদের মনে হয় আমরা আসলে দেশপ্রেমিক।
আমরা এভাবেই একদিন চাপা খেয়ে মরে গিয়ে হায়েনার হাসি হয়ে উঠব।
কারণ আমরা দেশপ্রেমিক। আমরা ভোটার।
_________________
ডা গুলজার হোসেন উজ্জ্বল। নন্দিত সঙ্গীতশিল্পী। লোকসেবী চিকিৎসক। সুলেখক।
আপনার মতামত দিন: