Ameen Qudir

Published:
2018-04-01 17:39:17 BdST

চিকিৎসকদের জন্যও একটি সুরক্ষা আইন অত্যন্ত জরুরী


 

 

ডা. কামদা প্রসাদ সাহা
___________________________________

প্রসংগ: কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নবজাতকের মস্তক কর্তনের জন্য চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অদ্ভুত-অবুঝ অভিযোগ।

সম্প্রতি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন অধ্যাপকের অধীনে ভর্তিকৃত একজন প্রসূতি মায়ের জীবন রক্ষার্থে বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্বীকৃত যথাযথ চিকিৎসা নির্দেশনা অনুযায়ী মৃত নবজাতকের শরীর থেকে মাথা আলাদা করে প্রসব করানো হয় এবং প্রসূতির জীবন রক্ষার্থেই তার জরায়ু কেটে ফেলতে হয়। এনিয়ে শুরু হয়েছে গন মাধ্যমে মহাতোলপাড়, আর মাননীয় আদালতের মাধ্যমে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে মামলা।
বাংলাদেশে একটি আইন রয়েছে, যার নাম জুডিশিয়াল অফিসারস প্রটেকশন অ্যাক্ট ১৯৫০।
এই আইনের মূল বক্তব্য হচ্ছে কোন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট বা জাজ বা বিচারক যখন বিচার সংক্রান্ত কোন কাজকর্ম করেন তখন সেই সকল কাজের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে কোন আদালতে কোন অভিযোগ বা মামলা করা যাবে না। এমনকি অনিচ্ছাকৃত ভাবে যদি তিনি কোন ভুল কাজ করেন বা ভুল সিদ্ধান্তও প্রদান করেন তবুও তাঁর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ বা মামলা করা যায় না। এ আইনটির উদ্দেশ্য হচ্ছে একজন বিচারক যাতে সকল ভয় ভীতির উদ্ধে উঠে, মুক্তমনে নিরপেক্ষভাবে বিচার করতে পারেন। একারনেই দেখা যায় নিম্ন আদালতে কোন মামলার একটি রায় বা সিদ্ধান্ত উচ্চ আদালতে সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হয়ে যাওয়ার পরেও নিম্ন আদালতের বিচারকের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ বা মামলা হয় না। এই আইনটি না থাকলে নিম্ন আদালতের বিচারকগন মুক্তমনে বিচার কার্য পরিচালনা করতে পারতেন না, কারন যখনই উচ্চ আদালতে আপিল বা রিভিউ বা রিভিশনের মাধ্যমে কোন মামলার রায় বা সিদ্ধান্ত পরিবর্তিত হতো তখনই নিম্ন আদালতের বিচারকের বিরুদ্ধে ভুল বিচার করার অভিযোগ উঠতো এবং তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হতো।
একজন চিকিৎসক কখনোই ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁর কোন রোগীর ক্ষতি চান না এবং ক্ষতি করেন না; তাঁর নিজের পেশাগত সুনাম রক্ষার স্বার্থেই তিনি তা করেন না। কিন্তু একজন চিকিৎসক যদি ভয় ভীতির উর্দ্ধে উঠে মুক্ত মনে চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে না পারেন তবে আখেরে ক্ষতিগ্রস্থ হবে দেশ-জাতি-আমজনতা। ইদানিং চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে দেশব্যাপি অহেতুক-অলীক-অপ্রমানিত অভিযোগে চিকিৎসকরা সন্ত্রাস-হামলা-মামলার স্বীকার হচ্ছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে চিকিৎসকরা হতাশ হয়ে পরবেন, তাঁদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেলে তা বাংলাদেশের সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলে দেবে।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণে এবং দেশের সুষ্ঠু চিকিৎসা ব্যবস্থার স্বার্থেই জুডিশিয়াল অফিসারস প্রটেকশন অ্যাক্ট এর আদলে চিকিৎসকদের জন্যও একটি সুরক্ষা আইন অত্যন্ত জরুরী ভিত্তিতে প্রনয়ণ করা প্রয়োজন।
_________________________

 ডা. কামদা প্রসাদ সাহা ।

 Head of The Department, Forensic Medicine, Comilla Medical College at Comilla Medical College & Hospital

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়