Ameen Qudir

Published:
2018-02-18 20:10:57 BdST

রাবি শিক্ষকের ঈভ টিজিং : রাজশাহী মেডিকেলে সেদিন যা ঘটেছিল


 

 

ডেস্ক রিপোর্ট

_______________________


রাজশাহী মেডিকেলে রাবি শিক্ষকের ঈভ টিজিং এবং তার প্রতিবাদে ইনটার্ন ডাক্তারদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা দেশ জুড়ে। কি ঘটেছে সেদিন ; তার প্রত্যক্ষদর্শী বিবরণ জানা যাচ্ছে উপস্থিত ইন্টার্ন ডাক্তারদের কাছে। : সেদিন যা ঘটেছিল জানাচ্ছেন ইনটার্ন চিকিৎসক রহমান আশিক।
নিচে তার বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হল।

 

গত ১৪/০২/১৮ ইং রাত ১০:৩০ মিনিটে (আনুমানিক) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অর্থোপেডিক্স ও ট্রমাটোলজি সার্জারি ইমার্জেন্সি অপারেশন শেষে আমাদের কর্তব্যরত ইন্টার্ন চিকৎসকগণ ৩১ নং ওয়ার্ডের অভিমুখে যাবার সময় ওটি ব্লকের সামনে একজন নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের সাথে একজন অজ্ঞাত লোকের মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। এতে উক্ত নারী চিকিৎসক অজ্ঞাত লোককে একটু সংযত হতে বলায় তিনি চিকিৎসককে পাল্টা ‘nonsense' বলে গালি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত চিকিৎসক তাকে তার ভাষা সংযত রেখে কথা বলতে বলায় তিনি পুনরায় দূর্ব্যবহার এবং দাম্ভিকতাপূর্ণ আচরণ প্রকাশ করেন। কথাগুলো বলার সময় তিনি ঐ নারী চিকিৎসকের উদ্দেশ্যে ‘fuck you', ‘fucking girl' এবং এ ধরণের অরুচিকর, অসংলগ্ন এবং অশালীন শব্দচয়ন করতে থাকেন। এমতাবস্থায়, আশেপাশের সকল চিকিৎসকবৃন্দ তাকে উক্ত নারী চিকিৎসকের নিকট ক্ষমা চাইতে অনুরোধ করেন যা তিনি বারবার নিজের দাম্ভিকতা বজায় রেখে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেন।

অতঃপর চিকিৎসকেরা হাসপাতাল প্রশাসনের শরণাপন্ন হলে হাসপাতালের পরিচালক মহোদয় আরো দুজন অধ্যাপকের উপস্থিতিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে তৎক্ষণাৎ চলে আসেন। পরবর্তীতে উক্ত অজ্ঞাত ব্যক্তি তার পরিচয় জানান যে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক জনাব এনামুল হক জহির। এমতাবস্থায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনধিসহ রা.মে.ক.হা.-এর প্রশাসনিক প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে উক্ত ব্যক্তিকে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে অনুরোধ করা হয়। তিনি সেই মুহূর্তে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন এবং নিজের কৃতকর্ম স্বীকার করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সম্মানার্থে এবং ভবিষ্যতে এ ধরণের অশালীন কর্মকান্ড পুনরায় করবেন না কথা দেয়ায় তাকে সসম্মানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর করা হয়।

এর পরের ঘটনা:
সেই নারী চিকিৎসকের ফেসবুক আইডি খুঁজে বের করে মহান শিক্ষকের আইন বিভাগের আইন বিশারদ মহান শিক্ষার্থীগণ একের পর এক ইনবক্স পাঠিয়ে যাচ্ছেন।
শিষ্যদের বাণী দেখেই বোঝা যাচ্ছে তাদের পিতৃসম শিক্ষক তাদেরকে কী শিক্ষা দিয়েছেন। 'fuck you' ভাষী ইভটিজার শিক্ষকের ছাত্রছাত্রীরা যে তারও দু কাঠি উপর দিয়ে যাবে... এটা খুবই স্বাভাবিক।

.
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়... একটা ঐতিহ্যের নাম। ক্যাম্পাস আলাদা হতে পারে কিন্তু রাজশাহী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরাও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র... এটা মাথায় রাখতে হবে। কাজেই একটা সামান্য ডিপার্টমেন্টের একজন জামাতপন্থী, শহীদ জামিল আখতার রতন হত্যা মামলার শীর্ষ আসামী, ইভটিজার শিক্ষক এবং তার কতিপয় গুন্ডাপান্ডা ছাত্রছাত্রীর উদ্ধত আচরণের জন্যে পরিস্থিতি এমন উশকানিমূলক পর্যায়ে নিয়ে যাবেন না যাতে উত্তরবঙ্গের সবচাইতে বড় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সব ধরণের ইমার্জেন্সি কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে হয়।
আপনাদের একটি অবস্থান ধর্মঘট গতকাল ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে ৫ কি.মি. যানজট সৃষ্টি করেছিল, আমাদের একটি ধর্মঘটে কতো বড় বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে... সেটা দেখিয়ে দিতে চাইনা।

আইন বিভাগের ছেলেমেয়েদের বোধহয় নিজেদের পাঠ্যবিষয় নিয়ে আরেকটু ভালো করে পড়াশোনা করা উচিৎ। সাইবার বুলিং, সাইবার ক্রাইম, আত্মহননের উশকানি মামলার বিচার ও সাজার ব্যাপারটা ভালো করে বুঝে পড়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়