Ameen Qudir

Published:
2017-04-25 15:51:42 BdST

যাহা বলিব , সত্য বলিব: ডা. শাম্মীর মৃত্যু নিয়ে সব বলে এলাম বিএমডিসিকে


 



ডা.শাব্বির হোসেন খান
________________________


সত্য এবং ন্যায়ের স্বার্থে আজ আমি হাজির হয়েছিলাম বিএমডিসি'র ডিসিপ্লিন্যারী কমিটির সামনে।
আমি আমার বিবেকের কাছে পরিষ্কার!

গত বছর ১২ ডিসেম্বর বক্ষব্যাধি হাস্পাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ নাঈমুল হক শাম্মী অধ্যাপক ডাঃ আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরীকে দিয়ে এনজিওগ্রাম করাতে গিয়ে ল্যাবএইড স্পেশিয়ালাইজড হসপিটালে করুনভাবে মৃত্যুবরণ করেন।
সে সময় ফেসবুক সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় এই মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এবং দেশ-বিদেশের প্রখ্যাত কার্ডিওলজিষ্টরা এই মৃত্যুকে অনাকাংখিত এবং অসতর্কতা ও ইন এডিকোয়েট প্রস্তুতীর কারনে ঘটেছে বলে মন্তব্য করেন।
এনজিওগ্রাম চলাকালীন সময়ে ল্যাব এইডে উপস্থিত একাধিক ব্যাক্তির ( এদের মধ্যে চিকিৎসকও আছেন) বক্তব্যে উঠে আসে, ডাঃ শাম্মীর মৃত্যুর আগে সংশ্লিষ্ট কার্ডিওলজিষ্ট "এনাস্থেটিষ্ট" ও "ভেন্টিলেটার" এর জন্য ক্যাথ ল্যাবের ভিতরে চিৎকার করছেন, অথচ এর কোনটাই ক্যাথ ল্যাবে ছিল না। মনিটর রুমে উপস্থিত ডাঃ শাম্মীর এক আত্মীয়া চিকিৎসক
এনাস্থেটিষ্টকে ডেকে আনার জন্য সেখানকার ষ্টাফদের তাড়া দিয়ে ফোন করান। শেষ পর্যন্ত ৭/৮ মিনিট পর হেলেদুলে আসেন একজন এনাস্থেটিষ্ট, যাকে সেই মহিলা চিকিৎসক তাড়াতাড়ি ল্যাবে ঢোকার জন্য ধাক্কা দিতে বাধ্য হন। কিন্তু ততক্ষণে সবই শেষ। মারা গেছে ডাঃ শাম্মী। তার মৃতদেহকে আইসিইউ তে কিছু সময় রেখে এরপর মৃত্যুর ডিক্ল্যারেশন দেয়া হয়।

আমরা এসব কিছু জানতে পারি ফেবু এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রণিক মিডিয়া মারফত।
১৫/১২/২০১৬ তারিখ দুপুরে আমি ডা: ওয়াদুদ এর সাথে টেলিফোনে কথা বলি। যেখানে তিনি নিজে স্বীকার করেছেন, এন্যাস্থেটিষ্ট আসতে অনেক দেরী করেছেন ( এটার ইলেক্ট্রণিক রেকর্ড আমি বিএমডিসির ডিসিপ্লিন্যারী কমিটিকে শুনিয়েছি এবং লিংক হস্তান্তর করেছি)। দিস ইজ দ্যা পয়েন্ট। এই দেরীর কারনেই ক্যাথ ল্যাবে ডাঃ শাম্মীর মৃত্যু ঘটে। অবহেলা এটাই, যদি আর কিছু না থাকে। আর আছে অপ্রতুল প্রস্তুতী। অপ্রতুল প্রস্তুতি নিয়ে কার্ডিওলজিষ্ট কেন প্রসিডিওর শুরু করবে?

এসব কারনে আমি বিএমডিসি বরাবরে আবেদন করি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য। ২৪/০৪/২০১৭ তারিখ দুপুর ১২ টায় সেই বিষয়েই বিএমডিসি'র ডিসিপ্লিন্যারী কমিটি আমাকে ডেকেছিল। আমি যথাসময়ে উপস্থিত হই বিএমডিসি'তে। আমার বক্তব্য সুষ্পষ্ট ভাবে তুলে ধরি কমিটির সামনে এবং প্রমান করে দেই, এনাস্থেটিষ্ট ৭/৮ মিনিট দেরীতে এসেছিলেন, যদিও বিষয়টা ল্যাব এইডের একটা লিখিত বক্তব্যে এড়িয়ে গিয়েছে এবং ডাঃ ওয়াদুদ তার একটা লিখিত বক্তব্যে একটু ঘুড়িয়ে বলেছেন। আমার সাথে ফোনে তিনি বলেছেন, এনাস্থেটিষ্ট আসার আগেই তিনি ইনটিউবেশন করেছেন এবং যা যা দরকার করেছেন, অথচ তার লিখিত বক্তব্যে কিন্তু ঘুড়িয়ে বলেছেন, "এনাস্থেটিষ্ট ফুল ইন টিউবেশন করেন" ইত্যাদি।

প্রশ্ন থেকেই যায়, তাই না? আরো অনেক কিছুই আছে। বিএমডিসি'র ডিসিপ্লিন্যারী কমিটি আরো বিশদ তদন্ত করতে যাচ্ছে। কার্ডিয়াক সার্জন, কার্ডিওলজিষ্ট, মেডিসিন স্পেশিয়ালিষ্ট সহ আরো কয়েকজন নিয়ে একটা কমিটি বিষয়টা খতিয়ে দেখতে যাচ্ছে।
______________________________

ডা.শাব্বির হোসেন খান
প্রখ্যাত পেশাজীবী নেতা । সুলেখক। লোকসেবী ডাক্তার। মৌলভীবাজার।

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়