Ameen Qudir
Published:2017-02-22 18:02:19 BdST
বগুড়া মেডিকেলে রোগী মৃত্যু: ডাক্তারবিরোধী ভয়ঙ্কর উস্কানি ও অপসাংবাদিকতা
আহির ফাহিয়ান বুবকা
________________________
একেই বলে ভয়ঙ্কর ডাক্তারবিদ্বেষ। ডাক্তারদের নিয়ে হিংসাত্মক নোংরা আক্রমনমূলক হলুদ সাংবাদিকতা এখন রীতিমত একটি পেশার বিরুদ্ধে হিংসা-বিদ্বেষের জেহাদে পরিনত হয়েছে।
বগুড়ার জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হৃদরোগে গুরুতর অবস্থায় ভর্তি এক আলোচিত বয়োবৃদ্ধ রোগীর অমোঘ মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ডাক্তারবিরোধী হিংসা বিদ্বেষ হামলায় উস্কানি দিল দেশের শীর্ষস্থানীয় মিডিয়া গুলো; এটা সত্যিই বিস্ময়কর।
হেডিং দেয়া হয়েছে , আক্রমনমূলক ও উস্কানিমূলক:
""
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কাণ্ড: মারা গেছেন সেই রোগী ""।
কলমের বা কী বোর্ডের এক খোঁচায় লিখে দিল, ওই শোকাবহ মৃত্যু ডাক্তারদের কারণে হয়েছে-- এই গোষ্ঠিহিংসা কী কেবল অজ্ঞতা প্রসূত। নাকি দেশের স্বাস্থ্য সেক্টরকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্রেরও অংশ।
একটি মানবসেবী পেশাজীবী গোষ্ঠির বিরুদ্ধে এই অপসাংবাদিকতা আগামী দিনে বাংলাদেশ ও জাতির জন্য ভয়ঙ্কর দুর্যোগ ডেকে আনবে।
এ দেশের যে কোন পর্যায়ের সাংবাদিকদের জানতে হবে, এটা কোন সাংবাদিকের না জানার কথা নয়_ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারদের শত চেষ্টা স্বত্ত্বেও গড়ে ১২ থেকে ২০ জন রোগী মারা যান। ডাক্তারদের অবহেলায় নয় , ডাক্তারদের সর্বাত্মক চেষ্টার পরেও এই মৃত্যুর কাফেলাকে ঠেকানো যায় না।
বগুড়া জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বিশাল হাসপাতাল। এখানে ডাক্তারদের সর্বাত্মক চেষ্টার পরেও গড়ে ১২ জনের বেশী মরনাপন্ন রোগী মারা যায়।
একজন নারী চিকিৎসককে ঈভ টিজিং , হামলা পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহে বর্তমানে সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে সত্য।ইন্টার্ন ডাক্তাররা কর্মবিরতি ক রেছেন। কিন্তু মানবতাসেবী ডাক্তাররা শত অপমান লাঞ্ছনা যন্ত্রনা সহ্য করেও রোগী সেবা অব্যাহত রেখেছেন।
কিন্তু হাসপাতালের গড় মৃত্যুর যে হার , সেটা কম বেশী হয় নি।
মনে রাখতে হবে, ডাক্তাররা কষ্ট পান, অভিমান করেন, কিন্তু রোগী সেবা বন্ধ রাখেন না। সেটা করলে দেশে সমাজে মহামারী দেখা দেবে। মরণের ঢেউ লাগবে।
বগুড়ার নারী ডাক্তার ঈভটিজিং ঘটনার বখাটের সঙ্গে যে রোগীর সংযোগ রয়েছে , তিনি এমনিতেই ছিলেন মরনাপন্ন।
এর আগেই জাতীয় পত্রিকায় খবর এসেছে, যে রোগীর বাঁচার আশা ক্ষীন ছিল।
ইনটার্ন ডাক্তারদের কর্মবিরতি কোন বিষয় নয়, বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা এই রোগীকে চিকিৎসায় সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেন।
মন্ত্রনালয় থেকে বিশেষ নজরদারির পর বিশেষ যত্নে কোন ত্রুটি ছিল না।
কিন্তু দু:খজনক শো্ক সংবাদ হল, রোগীটি প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে মৃত্যুবরণ করেছেন।
শোকাবহ ঘটনা। মৃতের স্বজনদের প্রতি গভীর সহানুভূতি ও সহমর্মিতা রইল সকলের।
কিন্তু এই অমোঘ মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশের বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্রে হিংসাত্মক , ডাক্তার বিদ্বেষী উস্কানিমূলক খবর সত্যিই দু:খজনক।
যেখানে পরিস্থিতির নিরসনে সংবাদ পত্র ও মিডিয়ার কল্যানী ভূমিকা দরকার, সেখানে মিডিয়া যদি ডাক্তারদের হামলার উস্কানির ভূমিকা পালন করে -- তার চেয়ে বিপর্যয়কর আর কি হতে পারে জাতির জন্য।
এমন একটি খবরের বিবরণ সংশ্লিষ্ট শীর্ষ জনপ্রিয় পত্রিকার নাম না বলে আমরা পাঠকের জন্য দিলাম ।
_____________________
"""বগুড়া অফিস
______________
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কাণ্ড: মারা গেছেন সেই রোগী
বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের সেই রোগী আলাউদ্দিন সরকার (৬০) মঙ্গলবার সকালে মারা গেছেন।
গত রোববার সকালে তুচ্ছ ঘটনায় সোমবার বিকাল পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করেন তারা।
এদিকে ছেলেকে পুলিশে দেয়ার খবর শুনে আলাউদ্দিন সরকার আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে সোমবার তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই মঙ্গলবার সকালে তিনি মারা যান।
বগুড়া ছিলিমপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ টিএসআই শাহ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিরাজগঞ্জের কোনাগাঁতি গ্রামের আলাউদ্দিন সরকার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অবস্থায় গত শনিবার রাত ৩টার দিকে বগুড়া মেডিকেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। """
_________________________
খবরটি কী ভয়ঙ্কর ! কী উস্কানিমূলক ভাবুন।
রিপোর্টার রোগীর গুরুতর অবস্থার কথা অস্বীকার করে নি। কিন্তু প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে ঘটিত একটি মৃত্যুর দায় কলমের খোঁচায় কিভাবে ডাক্তার সমাজের ওপর চাপিয়ে দিয়ে কিভাবে উস্কানি দিলেন।
সংশ্লিস্ট মিডিয়াগুলো সে খবর ছেপে কিভাবে সমাজে কুৎসা, নিন্দা বিদ্বেষ তৈরী করে, এই প্রোপাগান্ডা তারই নিকৃষ্ট নমুনা।
____________________________
আহির ফা হিয়ান বুবকা । নির্বাহী সম্পাদক , ডাক্তার প্রতিদিন।
আপনার মতামত দিন: