Ameen Qudir

Published:
2017-02-21 01:36:25 BdST

আমি পার্সেন্টেজ,রেফারেল, মাসোহারা নিই না


 

 

ডা. মোঃ শাব্বির হোসেন খান
______________________________

আমি প্রাইভেট প্র‍্যাকটিস করি না। আরো সঠিকভাবে বললে বলতে হয়, করতে চাই না। গত ১৩/১৪ বছর ধরেই এই না চাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

সেজন্যই আমার কোন সাইন বোর্ড নেই কোথাও, নেই কোন প্রেসক্রিপশন প্যাড ও । এরপরও কিছু রোগী আমাকে ছেড়ে যেতে চায় না; এর আগে প্রায় ১২ বছর প্র‍্যাকটিস করেছি আমার এই শহরেই।

সেই সময়ের কিছু "বাধা রোগী" আর তাদের আত্মীয় স্বজন আমাকে ছেড়ে যেতে চায় না। "কমলী ছোড়তি নেহী" অবস্থা! তাদেরকে চিকিৎসা না দিয়ে পারি না আমি।

এটা আমার লোভ না ব্যার্থতা, আমি জানি না। এদের ৬০-৭০% ই কিন্তু দরিদ্র- ভ্যান চালক/ সি এন জি চালক / রিক্সা চালক / দিনমজুর বা কারো বাসার গৃহকর্মী। এরা যা দেয়, আমি রেখে দেই, গুনে দেখি না কখনো। না দিলে নাই।

আমি নিজে একটা ল্যাব এবং একটা ক্লিনিকের অংশীদার। গর্বের সাথে মাথা উচু করে বলতে চাই, আমার ল্যাব এবং ক্লিনিক থেকে কাউকে কোন ধরনের পার্সেন্টেজ বা রেফারেল দেয়া হয় না।


আমি নিজেও এ'ধরনের শূয়োরের বিষ্ঠা খাই না। একটা ঘটনা বলি: ২০০৩ বা ২০০৪ এর কথা। সনোলজিষ্ট হিসাবে নিজের ল্যাবে কাজ করি। স্থানীয় হওয়ার কারনে এবং নীতিগতভাবে কিছু সামাজিক দায়বদ্ধতার কারনে আল্ট্রাসনোগ্রাফী করাতে আসা কুমারী ( অবিবাহিতা) মা কিংবা তাদের আত্মীয় স্বজনেরা আমার কাছে সহযোগিতা চাইলে তাদেরকে সঠিক জায়গায় যাওয়ার পরামর্শ দেই আমি।

গড়ে প্রতি মাসেই এরকম ২/৩ জনকে পরামর্শ দিতে হয় আমার। তো, সেবার স্থানীয় এক বড় এন জি ও ক্লিনিক থেকে একটা "খাম" নিয়ে এলো আমার কাছে। সাথে খাতা। দস্তখত করে খামটা রাখতে বললো বাহক। খাতায় দেখলাম আমার নামের পাশে তাদের কাছে বিগত ২/৩ মাসে আমার রেফার করা রোগীর সংখ্যা এবং "রেফারেল" এর হিসাব লেখা আছে।

রেফারেলের মোট টাকার পরিমান দেখলাম লেখা আছে ৭০০/-। কিছুটা অবাক ই হয়েছিলাম। আমাকে রেফারেল পাঠানোর সাহস এর আগে ওই এন জি ও ক্লিনিক বা আর কেউই কোনদিন দেখায় নি। কে পাঠিয়েছে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম, তাদের নূতন " ক্লিনিক ম্যানেজার স্যার" পাঠিয়েছেন। বাহককে শুধু বললাম, তোমার ম্যানেজার মনে হয় আমাকে চেনে না। তাকে বলে দিও জীবনে আর কোন দিন যেন... ইত্যাদি ইত্যাদি।

যাই হোক, এত কথার অবতারনা করলাম যেটা বলার জন্য, সেটা বলেই ফেলি এবারঃ

আমি, ডাঃ মোঃ শাব্বির হোসেন খান ( বিএমডিসি রেজি: নং- এ-২১২৭৮), এই মর্মে ঘোষনা দিচ্ছি যে, চিকিৎসা পেশায় আমি প্রফেশনাল ইথিকস মেনে চলার চেষ্টা করি এবং কোন ল্যাব / ক্লিনিক / হাসপাতাল / এন জি ও ক্লিনিক বা কোন ফার্মাসিউটিক্যাল / ফুড প্রোডাক্ট কোম্পানী কিংবা অন্য কারো কাছ থেকেই কোন ধরনের পার্সেন্টেজ/ রেফারেল / মাসোহারা কিংবা অন্য কোন সুযোগ সুবিধা গ্রহন করি না।

আর কে কে এই ঘোষনা দেবেন?
আসুন, শূয়োরের বিষ্ঠাখেকোদের কাছ থেকে নিজেদেরকে আলাদা করে রাখি!
যাদের ফেসবুক আছে, বুকে হাত দিয়ে যারা যারা আমার মত বলতে পারবেন, বলেই ফেলুন কথাগুলো নিজের টাইম লাইনে, ঘোষনা দিয়ে।

দেখি না, সংখ্যায় কয়জন হই আমরা!

____________________________

 

ডা. মোঃ শাব্বির হোসেন খান । লোকসেবী পেশাজীবী নেতা। সুবক্তা ও জনপ্রিয় কলামিস্ট।

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়