Ameen Qudir

Published:
2019-02-16 11:04:53 BdST

গ্রামে যাওয়া চিকিৎসকদের ৪ লাখ টাকারও বেশী বেতন দেবে ভারত


 

 

ডেস্ক , ঢাকা
____________________

বাংলাদেশে যখন ডাক্তারদের গ্রামে নিতে নানা নাটক ও টানা হেঁচড়া, ঠিক তখন উপমহাদেশের বৃহত্তম দেশ ভারতবর্ষে ঠিক অন্য কল্যাণী উদ্যোগ। ডাক্তারদের গ্রামে যাওয়ার জন্য ভারত সরকার ও রাজ্য সরকার সম্মানজনক উচ্চ বেতন ঠিক করেছে। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের কয়েকটি রাজ্যে ডাক্তারদের জন্য উচ্চ বেতনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। রাজ্য হলো: ঝাড়খণ্ড, ত্রিপুরা, মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, ছত্তিশগড় ও কর্নাটক।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবর মতে অনুযায়ী, ভারতে গ্রামে যেতে সম্মত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা প্রতিমাসে ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ রুপি আয় করতে পারবেন। যা বাংলাদেশের টাকায় ৩ লাখ ৬০ হাজার থেকে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা।
পত্রিকাটি জানায়,
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে স্বাস্থ্যসেবায় অনগ্রসর এসব রাজ্যের মধ্যে ঝাড়খণ্ডে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের জন্য একটি বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। যেখানে চিকিৎসকরা তাদের নিজস্ব বেতনও গ্রহণ করতে পারবেন।

রাজ্যটিতে চিকিৎসকদের জন্য সর্বোচ্চ বেতনের ঘোষণা দেওয়া হয়। সেখানে এজন চিকিৎসক প্রতি মাসে ৩ লাখ রুপি আয় করতে পারবেন। আর ছত্তিশগড়ে চিকিৎসকদের প্রতি মাসে আয় হবে ২ লাখ ৪৭ হাজার রুপি। যদিও সর্বোচ্চ বেতনের বিষয়টি জ্যেষ্ঠতার ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। তবে সকল চিকিৎসকের বেতনই গড়ে ২ লাখের ওপরে হবে।

রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অপেক্ষাকৃত ছোট ও দূরবর্তী এসব অঞ্চলে পোস্টিংয়ের জন্যে ঘোষিত বেতনের এ পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি।

ত্রিপুরা রাজ্য সরকার একজন বিশেষজ্ঞ সার্জনের বেতন ৩ লাখ রুপি নির্ধারণ করেছে, আন্দামান ও নিকোবার অঞ্চলে ২ লাখ ৫০ হাজার রুপি এবং দাদরা ও নাগার হ্যাভালি অঞ্চলে তা ২ লাখ ২৫ হাজার রুপি।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, এ সিদ্ধান্তের আগে এসব অঞ্চলে চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ বেতন ছিল ৪০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা।

বিহারে বর্তমানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ রুপি প্রদান করা হচ্ছে। উড়িষ্যায় ৮৩ হাজার ৯৩ হাজার, হিমাচল প্রদেশে ৪০ হাজার থেকে ৭৩ হাজার ৭৫০, অন্ধ্র প্রদেশে ৫২ হাজার ৫০০ থেকে ১ লাখ ৫২ হাজার ২৫০ ও গুজরাজে ৫৫ হাজার ১২৫ থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার রুপি দেওয়া হচ্ছে। আর ত্রিপুরায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দেওয়া হচ্ছে ৭৫ হাজার থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার রুপি।

জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব মনোজ ঝালানি বলেন, ‘আমরা মৃত্যুহার কমাতে ও রোগ প্রতিরোধ করতে চাই। উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য স্বাস্থ্যব্যয় আরও বাড়াতে হবে। নাগরিকদের মূল্যবান জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত আমরা।’

২০১৭ সালে গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিসংখ্যানের এক প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞ সার্জনের অপ্রতুলতার বিষয়টি উঠে এসেছে। সেখানে দেখা যায়, সার্জন, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, ফিজিশিয়ানস ও গাইনি বিশেষজ্ঞের অনুমোদিত ২২ হাজার ৪৯৬টি জনের এর বিপরীতে ১৮ হাজার ৩৪৭টি পদেই খালি ছিল। এর মধ্যে ৫ হাজার ৬২৪ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ পদের মধ্যে খালি ৪ হাজার ৫৫৪টি। সাধারণ চিকিৎসকের ৪ হাজার ৭৬০টি, গাইনি বিশেষজ্ঞের ৪ হাজার ১৭০টি ও সার্জনের ৪ হাজার ৮৬৬টি পদ শূন্য।


জ্যেষ্ঠ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের আওতায় বর্ধিত বেতনের বিষয়টি অনুমোদন করা হয়েছে, যাতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের গ্রামীণ এলাকায় নেওয়ার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যায়। অন্যথায় জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের সক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব হবে না। এটা সহজেই অনুমেয় যে, বেসরকারি খাতে চিকিৎসকদের সন্তোষজনক সম্মানি দেওয়া হয়। এ অবস্থায় তুলনামূলক ভালো বেতন ছাড়া গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের যুক্ত করা যাবে না। সে কারণে কিছু কিছু অঙ্গরাজ্য তাদের যথাযথ সম্মানির ব্যবস্থা করেছে।

 

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়