Ameen Qudir

Published:
2018-08-04 16:27:30 BdST

সাবাস! ঘুমিয়ে পড়া সমাজকে জাগিয়ে দিয়েছিস! বাঁচতে হলে যে এবার জাগতেই হবে


 


ডা.এস এম মুইজ্জুল আকবর চৌধুরী
_________________________________

সাবাস!
ঘুমিয়ে পড়া সমাজকে জাগিয়ে দিয়েছিস।
বাচতে হলে যে এবার জাগতেই হবে।

তোদের আন্দোলনে আজ জাতির বিবেক কিছুটা হলেও নড়েচড়ে উঠেছে।নিয়মে পরিনত হওয়া অনিয়মগুলোর অন্তত গুটিকয়েক আজ চিহ্নিত। মেঘমুক্ত সুর্য্যের আলোয় উজ্জ্বল দিনের মত সবার সামনে পরিস্কার দৃশ্যমান ।এখন সংশ্লিষ্টদের বদলে যাওয়ার, বদলে নেয়ার, বদলে দেয়ার সুযোগ ।আর বাচতে চাইলে ওদেরও এই সু্যোগ কাজে লাগাতে হবে। তাই নিয়মে পরিনত হওয়া অনিয়মগুলো উপড়ে ফেলার দ্বায়িত্ব এখন রাষ্ট্র ও সমাজকে নিতেই হবে।

কিন্তু সাবধান।
সামান্য ভুলে অনেক বড় অর্জন হারিয়ে যেতে পারে। তাই এই আন্দোলনে কোন ভুল করা যাবেনা। ভুল হলেই যে আমাদেরকে আধারে আবার পথের দিশা খুজতে হবে।

যেকোনো নৈতিক ও যৌক্তিক আন্দোলন স্বাভাবিক নিয়মেই উত্তাল হয়। উত্তাল আন্দোলনের উম্মাদনাকে কখন আরো বেগবান করতে হবে আর কখন রাশ টানতে হবে তার সঠিক সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে সাফল্য।
এই নির্ভেজাল নিঃস্বার্থ নৈতিক আন্দোলন যেন নোংরা রাজনীতির বিষে নীল হয়ে না যায় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। কারন এদেশে সুযোগসন্ধানীর অভাব নাই।সেই সাথে আছে সব কিছুতেই অপরাজনীতির কু ঢুকে যাবার আশং'ঃকা।মুহূর্তে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অশান্ত হয়ে যেতে পারে, রূপ নিতে পারে সহিংসতায়। নস্ট রাজনীতির অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে যে কোন সময়। কারন ওরা সবকিছুতে ফায়দা লুঠার ধান্দায় থাকে। ওদের থেকে সতর্ক থাকতে হবে।কৈশোর না পেরোনো শিক্ষার্থীদের এই দ্রোহের বিজয় সবাইকে নিয়েই নিশ্চিত করতে হবে। নইলে এই জাতি আবার পথ হারিয়ে ফেলতে পারে।

আন্দোলনের মুল লক্ষ্য মুহুর্তের জন্যও বিশ্রূত হওয়া যাবেনা। সময়ের সাথে পাওয়া অর্জনগুলোর সঠিক বিশ্লেষণ ও পরবর্তী ধাপ যথার্থভাবে নির্ধারণ করাই যোক্তিক আন্দোলনের সফল পরিনতির নিয়ামক। ইতিমধ্যে যা অর্জন তার মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হল এই আন্দোলনে সমাজকে জাগিয়ে তোলা গেছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনের দাবীর প্রতি সন্মান জানিয়ে একাত্ম হয়ে সব দাবী পুরনের আশ্বাস দিয়েছেন। কিছু তাৎক্ষণিকভাবে পুরনও হ্য়েছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ভুমিকা অনেক সংযত, অনেক ক্ষেত্রে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে জানান দিচ্ছেন তারাও পরিবর্তনের পক্ষে। সব কিছুই হয়েছে শিক্ষার্থীদের নির্মল দেশপ্রেমের কারনে।

তোরা আমাদের আগামী!
তোরাই পারবি দেশটাকে বদলে দিতে।
কৈশোরের এই দ্রোহ-ই হবে জাতির রক্ষা কবজ।

অনেকটুকু পথ হাটা হয়েছে।এখনই আন্দোলনের সাময়িক বিরতি আনা উচিত।
এখন কিছু বিরতি দিয়ে দেখা দরকার রাস্ট্র কিভাবে কত দ্রুত সব দাবী বাস্তবায়ন করে।
আর রাস্ট্রকে সময় না দিলে সুযোগ সন্ধানীদের অপরাজনীতির সুযোগ করে দেয়া হবে আর তখন অর্জনগুলো হারিয়ে যেতে পারে। সহপাঠী শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে হায়েনার হাসিতে নিয়াজীর নির্লজ্জ দা^তগুলো হুংকার ছাড়তে পারে।

আমার মনে হয়,এখনই সময় আন্দোলনে কৌশলগত কিছুটা বিরতি নেয়ার। রাস্ট্র ও সমাজকে পর্যবেক্ষণ করার।দেখা দরকার দাবীগুলো নির্ধারিত সময়ে যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা।না হলে আবার যে কোন সময় আন্দোলনের ডাক দেয়ার প্রস্তুতিও রাখতে হবে। তাই বলব,আন্দোলনের সাফল্যের জন্য এই মুহুর্তে রাজ পথে থাকার দরকার নাই। আমরা চাই সমাধান, নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তা।
মনে রাখতে হবে কোন ষড়যন্ত্রে বা অপ রাজনীতিতে আন্দোলনের যথার্থতা মলিন হয়ে না যায় তার জন্য শক্তিটুকু জমা রাখা উচিত।
তাই বলছি তোরা ফিরে যা,
তোদের স্বাভাবিক দৈনন্দিন জীবনে ফিরে যা।
স্কুল-কলেজ,বই-খাতা,বাড়ী-ঘর, বাবা-মা নিয়ে মানুষ হওয়ার স্বাভাবিক নিয়ম যুদ্ধে তোরা এবার ফিরে গিয়ে পরবর্তী অবস্থা পর্যবেক্ষণ কর তবে
দ্রোহের শক্তিটাকে বুকের ভিতর জাগিয়ে রাখিস আর দ্রোহের সলতেটা জ্বালিয়ে রাখিস।
রাষ্ট্র যদি ব্যর্থ হয় তবে আবার এই দ্রোহের আগুনটাকে দাউ দাউ করে জ্বালাতে হবে।
মৃত্যুর উপত্যকায় নিয়াজীর হাসিতে আমাদের স্বদেশ চোখের জল ফেলুক তা হতে দিতে পারিনা।
এই লড়াইয়ে জিততে হবে।

____________________________

ডা.এস এম মুইজ্জুল আকবর চৌধুরী
সাংগঠনিক সম্পাদক,
বিএমএ, চট্টগ্রাম

সহকারী অধ্যাপক
হৃদরোগ বিভাগ,

চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজ

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়