Ameen Qudir

Published:
2018-06-20 19:52:25 BdST

চিকিৎসা সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকের কিছু নিবেদন


 



অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক
_____________________________

সরকারি হাসপাতালের বাথরুম টয়লেটের দুর্গন্ধের কথা যথা যথই হতাশার সঙ্গেই উঠেছে।এর একটা অবিশ্বাস্য কারণের দিকে দৃষ্টি দিই। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৬০০ রুগী ভর্তি থাকার কথা। সেখানে রুগী ভর্তি থাকে গড়ে ৪৫০০/৫০০০ এর বেশী।দর্শন' প্রাথী তার ৫ গুন।
শুনলে অবাক হতে হয় এর অকল্পনীয় কারনটি সম্পর্কে। বহু বছর থেকে পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগ বন্ধ। সে প্রায় ১০ বছরের বেশী হয়ে গেছে।

সারাদেশে ৪০/৪৫ হাজার পরিচ্ছন্ন কর্মীর পদ খালি। এমন সর্বনাশা খবর জনগণ জানেন ই না। পরিচ্ছন্ন কর্মী ' নাই,তো বাথরুমকে পরিস্কার করবে? আর দুর্গন্ধ বন্ধ হবে কি ভাবে? এও কি সম্ভব? কিন্ত এ ভাবেই চলছে সারা দেশের সরকারী হাসপাতাল।খামখা বদনামের ভাগী হচ্ছেন চিকিৎসকরা।

সেদিন নিউরো সাইন্স ইনস্টিটিউটে গিয়েছি। সেখানকার এডিশনাল ডাইরেক্টর অধ্যাপক বদরুল আমার ছাত্র। কোনও সরকারি হাসপাতাল এতপরিস্কার , ঝক ঝকে/তকতকে কি ভাবে সম্ভব হলো, তার উত্তরে সে জানালো, এখানে নো বেড নো এডমিশন। ভাবা যায়! প্রচুর সংখ্যায় পায়খানা/প্রস্রাবের জায়গা করা হয়েছে।

হাসপাতাল তৈরির সময় ডাক্তার দের মতামত নেয়া হয়েছে। এসবের পরিচছন্নতা কর্মীআউট সোর্সিং এর মাধ্যমে কড়া শর্তে নেয়া । সন্তোষ জনক কাজ, না হলেই বিদায়। হাসপাতাল পরিচালনায় ,পরিচালকরা বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারেন।। চতুর্থ শ্রেনীর কর্ম'চারী নেতা, মন্ত্রীর কাধে হাত রেখে তাকে 'ভাই' বলার সুযোগ কল্পনাতীত। রুগি সন্তুষ্ট।
বাথরুমের দুর্গন্ধের কষ্ট , ত প্রধানতঃ ডাক্তার দেরই সইতে হয় ।

সুইপার নিয়োগ বহু বছর বন্ধ সারা দেশে, বছরের পর বছর । অদ্ভুত মনে হতে পারে। কারন , যারা এই কষ্টে প্রতি মুহূর্তে মর্মে ভুগছেন ,সেই, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্ম কর্তা, মায় সিভিল সার্জন যথার্থ ক্ষমতা হীন ।

উপজেলা ,সহ অন্য হাসপতালের কথা ভাবুন। সে খানে১০০ বেডের হাসপাতালে তা পরিচ্ছন্ন কর্মীর সংখ্যা ১ জনে নেমেছে। ১ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী ? রুগীর সংখ্যা ৩ গুন অর্থাৎ ৩০০ জন অন্তত।এবং প্রত্যেকের সঙ্গে ৪/৫ জন দর্শ'ন প্রাথী।ডাক্তার কি ভাবে সমাধান দিবেন। হাসপাতাল টির বাথরুম থেকে দুর্গন্ধ আসবে ,নাকি christian dior এর সুগন্ধ আসবে।

পরিচ্ছন্ন কর্মীদের ৪০০০০ পদ শূণ্য অর্থাৎ খালি। বছরের পর বছর।এটা যে একটা জলজ্যান্ত সমস্যা এটা মন্ত্রনালয় উপলব্ধি করে না। টেকনোক্রেটদের লাগসই ক্ষমতা না থাকলে ত এমনই অসম্ভব অবস্থা হবেই।

শুধু যত বেড, ততজন ভর্তি , এটা করা গেলেই পরিস্থিতির সহনীয় উন্নতি সম্ভব হবে। এটা আইনানুগও হবে। কিন্ত দরিদ্র দেশের বাস্তবতায় মৃত্যুর মুখে পড়া এমন রুগীকে ডাক্তার ফিরিয়ে দেন না।মানবিক কারণেই পারেন না।পারা যায় না।

তাহলে সমাধান হল ঢাকা মেডিকেলের মত আরও ৫ টা হাসপাতাল রাজধানীতে তৈরি করুন। এ সবে স্বায়ত্ত্ব শাসন দিন। মন্ত্রনালয় শুধু সহযোগিতা করুক।খবরদারি নয়।

এ সরকার এত বৃহৎ কাজ সাহসের সঙ্গে করছে। আর এটি করতে পারলে মানুষের মনে স্থায়ী শ্রদ্ধা পাবেন জনপ্রিয় প্রধান মন্ত্রী।

স্বাস্থ্য বিভাগের সমস্যা, আামাদের সংবেদনশীল জনগন ধারনাও করতে পারেন না। আর সব সমস্যা সমাধানের প্রকৃত মালিকেরা এসবে আগ্রহী নন।

সরকারের, অন্তত মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গুলোকে পুর্ণ স্বায়ত্ত্ব শাসন দেয়া উচিত। এগুলো এখন সৎ ও করিতকর্মা আর্মির এর বিগ্রেডিয়ার লেভেলের অফিসাররা চালাচ্ছেন।
_______________________________

অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক । দেশের প্রখ্যাত লোকসেবী চিকিৎসক। সুলেখক ।
FCPS FRCP(uk)DDV(austria)
Skin & Sexul medicine specialist
Popular Dhanmondi 2 ।

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়