Ameen Qudir

Published:
2017-06-24 17:05:49 BdST

ডাক্তার প্রতিদিন ইদ সংখ্যাঅধ্যাপক ডা. ভাস্কর সাহার একগুচ্ছ কবিতা


অধ্যাপক ডা. ভাস্কর সাহার একগুচ্ছ কবিতা


________________________

পরাজিত প্রেম
ভাস্কর সাহা

তোমাকে পাবো না বলেই মেঘমনে সারারাত বৃষ্টি
তোমাকে পাবো না বলেই দু চোখে অন্ধতা; অনাসৃষ্টি।

তোমাকে চেয়েছিলাম উদার আকাশ নির্জন রাত্রির মতো করে
তোমাকে চেয়েছিলাম ধুলোহীন আঁচলের মতো অসুস্থতায়; অবসরে।

বাড়ানো হাতের রেখায় ছিলো না কোন পাপ; স্পর্ধিত কামনার জল
শুভ্রতার কাজলেই এঁকেছিলাম নক্ষত্রপথ; অখন্ড কোলাহল।

তবু হিংসুটে ঝড় এলো এলো উথাল পাতাল নদী; উন্মত্ত আস্ফালন
বেসামাল রুদ্র হাওয়ায় ভুলে গেলাম পথ; গন্তব্যের নিঁধুবন।

আজ যতোই নেচে উঠুক ধ্রুপদ নুপুর ধ্বনি জানি সে আমার নয়
অলক্ষ ভালোবাসায় ঋণি হয়ে আছি হোক সে আমার পরাজয়।

_____________________
২.

মাঝে মইধ্যে মনে কয় কেষ্টা হইয়া হুইয়া থাকি গরুর আতালে
রাধা নাম নিয়া নিয়া আন্দার পোহাই
যদি আহে রাই সখি খোঁজার বাহাসে
বাঁশি দিয়া ঝড় তুলমু পিরিত বয়ানে।

বয়স নাই, থোবরা গালের নীচে জঙ্গল ঝাড়
রক্তেও নাচন নাই তবুও ঘাই মাইরা কেন উতলায় দেহেরই অন্দর?

______________________

৩.

অদেখায়
ভাস্কর সাহা

যাকে আমি দিয়েছি সব সে কি তা জানে?
সেজেগুজে চাঁদ নেমে এলে কুসুমকোমল রাতে
তারে আমি ডাকি
তাকে ডাকি দিঘী জলে মৈথুন ধ্বনিতে
অনন্ত জোছনা গায়ে মেখে হেলে গেলে বিষাদ ভুবন
সে আমার ছায়া হয়,রোদ্দুর উড়িয়ে দু চোখে বুনে দেয় আকাশ!
দেখা না দেখায় কি বা এসে যায়?
নির্জন প্রপ্রাতের উৎসবে সে ই সখা রঙ, অনঙ্গ আলোর বীজ আমার!
তারে আমি চুপিচুপি খুলে দেই জোছনায় মোড়ানো ছিপি ; প্রমোদের ছবি

সাঁকো হয়ে সে ই আসে আমার যাপনে মধুমাস কাছে চলে এলে।

_____________________________

৪.

মাছজীবন
ভাস্কর সাহা

আমার জানলায় রোদ, রোদের কলহাস্য
বৈঠকি হাসিতে রাগের গম্ভীরা
আঁচল বুটিক নক্সা জড়ানো তোমার বারন্দার ঘের।
আমার মাথার উপরে বজ্র আমার মাথার উপরে চাবুক!
আমি ধরতে পারিনা ঘাসের সবুজ; দ্বীপের অন্তরা।
রাহুগ্রস্থ সময় আমাকে দাঁড়িয়ে রাখে পথে,

তুমি হাঁস হও, জলের অন্তঃপুর; আমাকে শিখিয়ে দাও সন্তরণ
আমি মাছ হয়ে বাঁচি, আমি কানকোতে শ্বাস নিয়ে বাঁচি।

_____________________________

৫.


বুঝলে না
ভাস্কর সাহা

ভুলের কাছে প্রতিদিন মাথা ঠুকে বলি আর যাবোনা, যাবোনা কদম্বতলা, মোল্লার হাট-
পালিত স্বপ্নগুলো দোলা দিয়ে গেলে প্রাণে, নড়েচড়ে উঠি
হায়, আর তো বেলা নেই কবে হবে সিদ্ধি আগুনের; চরৈবেতি চরৈবেতি খেলা!
মেঘগুলি চুপিচুপি নেমে এলে পাহাড় কিনারায় ভাবি এইতো বর্ষণবেলা এইতো শিস দিয়ে গেয়ে উঠবে পাখি
সবুজ শ্যামল চাদর পৃথিবির প্রান্ত ছুঁয়ে গেলে অনুরাগে গেয়ে উঠি প্রার্থনা সংগীত।

ভালোবাসার শেকল এঁটে পড়ে রইলে তুমি নিজস্ব ছায়ায়, দেখলে না বিরহী অন্ধও কেমন সেজে ওঠে বাঁশরি বেলায় সমবেত মুগ্ধ কলতানে!
ঝড়বৃষ্টি মাথায় নিয়ে অনেকটা এগিয়ে গেলেও আমি, দরোজায় খিল এটে রইলে তুমি
দৃষ্টির মায়াবী রেখাতেও রাখলে না প্রনয়ের কোন সুপ্ত আলাপন!
এভাবে কি এক তরফা চলে?

তবুও নৈমিত্তিকতার জেড়ে প্রতিদিন ফুলে ফেঁপে উঠি প্রতিদিন তোমার দুচোখে ভাসাই কাজল
তুমি জানলে না,
হৃদপিন্ডের রক্তাক্ত স্রোতেই ভেসে গেলো আমার গোটা হিমবাহ জীবন
তুমি বুঝলে না, বুঝলে না।

__________________________________

কবি ভাস্কর সাহা, অধ্যাপক ও অধ্যক্ষ , শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ, বরিশাল।

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়