Ameen Qudir

Published:
2017-06-15 16:44:36 BdST

চিকুনগুনিয়া নির্মূল ও মশা নিধনে ১০ হাজার মেডিকেল শিক্ষার্থীর মহাযুদ্ধ


ডা. তাহমিনা তানিয়া

___________________________


চিকুনগুনিয়ার বাহক এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসের পাশাপাশি জমে থাকা পানি অপসারণ, চিকুনগুনিয়া সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার জন্য ১০ হাজার মেডিকেল শিক্ষার্থীকে মাঠে নামাচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ১৭ জুন শনিবার ঢাকার ৯২টি স্থানে নামবেন স্বাস্থ্য ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ে অধ্যয়নরত এই শিক্ষার্থীরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার বিভিন্ন মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন নার্সিং ইনস্টিটিউট, সব ধরনের প্যারামেডিকেল ইনস্টিটিউট ও হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (ম্যাটস্), জনস্বাস্থ্যবিষয়ক স্নাতকোত্তর চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হেলথ টেকনোলজি এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক লেখাপড়া করছেন এমন শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচিতে থাকবেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইডিসিআর) এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এই কর্মসূচিতে সহায়তা করবে। কর্মসূচিতে সিটি করপোরেশনের ফগার যন্ত্র ও স্প্রে ব্যবহার করা হবে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক সানিয়া তহমিনা বলেন, ‘ঢাকার চিকুনগুনিয়া পরিস্থিতি দেখে আমরা এই কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতিমধ্যে ঢাকার সব মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। ঢাকার ৯২টি স্থানে আমাদের ছাত্ররা এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসের পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করবে। ঈদের ছুটি শুরু হয়ে গেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে। তবু আমরা আশা করছি অন্তত ১০ হাজার ছেলেমেয়ে এই কর্মসূচিতে থাকবে।’

কোন কোন স্থানে এই কর্মসূচি পালিত হবে, আজ (বৃহস্পতিবার) সংবাদ সম্মেলন করে সবাইকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান সানিয়া তহমিনা।

 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৯টা থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়ে দুপুর পর্যন্ত চলবে। কর্মসূচি সফল করতে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে আজ ও আগামীকাল প্রচার চলানো হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মেডিকেল শিক্ষার্থীরা ঈদের ছুটি কাটাতে বাড়ি যাওয়া বিলম্বিত করে এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে রাজি হয়েছেন। অভিযান চলাকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি কাজের সমন্বয় করবেন।

অভিযানকালে নির্মাণাধীন বিভিন্ন ভবনের এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র চিহ্নিত ও ধ্বংস, মোটরযান মেরামতের দোকানগুলোতে গিয়ে পুরোনো টায়ার থেকে এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করা, সেগুলোতে যাতে পানি জমতে না পারে, সে জন্য পুরোনো টায়ারগুলো ফুটো করা, আবর্জনার ভাগাড়গুলোতে মশা প্রজননস্থল ধ্বংস করা হবে। সাধারণ মানুষকেও চিকুনগুনিয়া থেকে বাঁচতে করণীয় জানানো হবে।

চিকুনগুনিয়া প্রথম ধরা পড়ে ১৯৫২ সালে আফ্রিকায়, পরে বিশ্বের অন্য কেয়কটি দেশেও এর বিস্তার ঘটে। জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০০৮ সালে প্রথম এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এ বছর ঢাকায় তা ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পেড়েছে। ঢাকার নাগরিকদের অভিযোগ, সিটি করপোরেশন এবার মশা নিয়ন্ত্রণে যথাসময়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি বলেই ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে ।

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়