Ameen Qudir
Published:2017-04-14 14:00:48 BdST
একটা মা সবসময় স্পষ্ট ,কিন্তু বাপ যে কেউ দাবী করলেই হতে পারেনা
ডা. মিথিলা ফেরদৌস
___________________________
সত্যি! আমরা জাতি হিসেবে খুব সুখি।কোন বড় দুক্ষ আমাদের কখনও স্পর্শ করতে পারেনা।ছোট ছোট ব্যাপার নিয়ে কয়দিন পর পর আমরা উত্তেজিত হই,উৎসাহিত হই,উদ্বেলিত হই,উৎকন্ঠিত হই।সেইসব ব্যাপার নিয়ে আমাদের ক্রিয়েটিভিটি রীতিমতো চোখে পরার মত।ফেসবুক না থাকলে জানতেই পারতাম না আমরা কতটা বিজ্ঞ, রসালো আর আবেগপ্রবণ জাতি।
কয়দিন পর পর তাই মিডিয়াগুলো দায়িত্ব নিয়ে বিভিন্ন রসাত্মক কাহিনী উপহার দিয়ে আমাদের ব্যাক্তিজীবন তথা জাতীয় জীবনের বড় বড় দু:খ ভুলায় দিয়ে, নিজেদেরও কাটতি বাড়ায়।
প্রথম আলোর মত প্রথম শ্রেণীর(স্বঘোষিত)পত্রিকার,প্রথম পাতার, প্রথম খবর,কোন বাংলা ছিঃ নেমার নায়িকা হঠাৎ কোথা থেকে এক বাচ্চা কোলে নিয়ে লাইভে এসে,কান্নাকাটি করে টিভি সেন্টার ভাসায় চলে গেছে,তার সাথে এখন পুরা জাতি কান্দিয়া দেশ ভাসাইতেছে।
এই যদি হয় সার্বিক চিত্র,তাহলে আর মমতা ময়ীর নির্মম পানির দরকার কি আছে?কয়দিন পর পর এমন কোন নায়িকারে লাইভে আনলেই তো দেশের পানি সংকট মিটায় ওদেরকেই পানি সাপ্লাই দিতে পারবো, আমাদের আর অন্যের মুখপেক্ষি হতে হয়না।
ওইদিকে শিশুটির বাপ, যারে ঠিক বাপ বলেই মনে হয়না,সে শিশুটির বাপ দাবী করে নিজের পৌরুষত্ব প্রমাণে ব্যাস্ততা দেখে আমার মত মানুষের মনেও প্রশ্ন জাগে,হিজড়ারাও কি এখন বাপ হচ্ছে!!সে ছেলে মেনে নেবে,কারণ জাতিকে সে বুঝাতে চায় সে হিজড়া না,কিন্তু বাচ্চা হওয়ার জন্যে যে মায়ের প্রয়োজন তাকে সে মানতে নারাজ।আরে ওই মেয়ে যদি কয়দিন পর আবার লাইভে এসে বলে এই বাচ্চা অন্য কারো,তাহলেই তো প্রমাণ হয়ে যাবে তুই আসলে হিজড়াই ছিলি।কারণ একটা মা সবসময় স্পষ্ট ,কিন্তু বাপ যে কেউ দাবী করলেই হতে পারেনা।
মোটকথা এইসব প্রিন্টিং আর ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াগুলো আমার মত মেয়েকেও ওইসব ব্যাপারে ভাবতে বাধ্য করেছে।গোটা জাতি আজ তাদের কাছে কৃতজ্ঞ হতে বাধ্য।এদের মেধা, বুদ্ধিবিবেচনা নিয়ে আর কারো সংশয় থাকলে ও, আমার নাই।
_______________________________
লেখক ডা. মিথিলা ফেরদৌস । সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল।
আপনার মতামত দিন: