Ameen Qudir

Published:
2017-01-14 14:43:03 BdST

বিএমএ তুমি কার? ডিজি অফিস তুমি কার?


 

ডা. নুরুল আমিন
___________________________


বিএমএ তুমি কার?
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তুমি কার??
ডিজি অফিস তুমি কার???
পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর তুমি কার?

 


আসলে কেউ কারো নয়? তুমি তোমার!! হওয়ার কথা সবাই সবার"!"

কিছু উদাহরণ_____________
উদাহরণ ১:
২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে ডিজি অফিসে গেছিলাম ব্যক্তিগত কাজে। গিয়ে দেখি ২০০৪-২০০৫ সেশনের এক বড় ভাই ( নাম, ব্যাচ,মেডিকেল কলেজের নাম ইচ্ছাকৃত গোপন রাখলাম) ডাক্তারি ( এমবিবিএস পাশ করা) পাস করে বিএমডিসির স্থায়ী নিবন্ধন এর জন্য আবেদন করেছিলেন। ভাইটি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন এবং মেধার স্বাক্ষর রেখে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।

কিন্তু বিধিবাম ৫ বছর পরে রাষ্ট্রসংঘ জানতে পারে অই ভাইটির বাবার মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট সম্পুর্ন জাল আর প্রতারণা মুলক। অই বড় ভাইয়ের বাবার নাম আর স্থানীয় সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধার নামের মিল হওয়াতে তিনি প্রতারণা করে কোটায় ভর্তি হয়েছিলেন।

অই দিন ডিজি অফিসের ফাইল চর্মচোখে দেখার সুযোগ হয়েছিল। সেখানে ডিজি অফিস থেকে অই বড় ভাইয়ের এমবিবিএস সার্টিফিকেট বাতিল সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছিল। আজো যুক্তি খুঁজে পাইনি কেমনে এটা বাতিল করবে? উনি ত রাষ্ট্রীয়ভাবে মিনিমাম চিকিৎসা শাস্ত্র শিক্ষা লাভ করেছেন। আগ্রহ থাকলেও পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ জানার সুযোগ হয়নি।

 

উদাহরণ ২:
একই বছর বিএমডিসিতে সাময়িক নিবন্ধন এর গেছিলাম। আলসেমির কারণে ব্যাচের সবার পরে একা একা করতে হয়েছিল। গিয়ে দেখি একাকার অবস্থা। এত ডাক্তার সেখানে উপস্থিত, দেশি বিদেশি সব দেশের। পরিচয় জানতে চাইলে বেশিরভাগের উত্তর একই। USTC,চট্টগ্রাম।

জীবনে প্রথম শুনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরাসরি এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জনের কথা। (আমরাও করেছি সবাই,কিন্তু একটু পেছিয়ে,কলেজ হয়ে এই আর কি।) আর এই প্রতিষ্ঠানের পরিচয় এই প্রথম শুনলাম। ( এটা আমারই ব্যর্থতা! কাউকে খাটো করতে নহে) ।


তারপর মিডিয়ার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির আদিঅন্ত জানার সুযোগ হয়। প্রতিষ্টানটির এত এত সফলতা যে বারবার মিডিয়ার শিরোনাম হয়েছে। জয়তু USTC এক জাতীয় অধ্যাপকের মালিকানাধীন এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশের রেগুলেটরি বডি সমুহকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আসছে।

অই ২০১১ সালেই এক ব্যাচে তাদের ২০০ জনের নাম নিবন্ধিত করে। আজো পর্যন্ত তাদের অনুমোদিত সিটের সংখ্যা দেশী -বিদেশী মিলিয়ে ৭৫ টি। কিন্তু প্রতিবছর তারা ৪০০- ৫০০ ছাত্রছাত্রী ভর্তি করে। বিএমডিসি আর ডিজি অফিস বসে বসে কানামাছি খেলে মনে হয়। এবার হিন্দুস্থান টাইমসের শিরোনাম বাড়তি পাওয়া। যদি দাদাবাবু দের মন পাওয়া যায় এবার। শুধুমাত্র জাতীয় অধ্যাপকের ক্ষমতার কাছে কি অসহায় নাকি?? অন্যকিছু পেছনে পেছনে চলে!! অবুঝ মন জানতে চায়!

উদাহরণ ৩::
২০০৮ সালের বিশেষ সময়ে কিছু কিছু মেডিকেল কলেজের ছাত্র কল্যাণ পরিষদের রোজনামচা ছিল "" এই পরিষদ শুধু তোমাদের জন্ম দিতে পারে না! বাকী সব কিছুই পারে."" এতই ক্ষমতা তাদের।
আমাদের বিএমএর একমাত্র কাজ মনে হয় " কোন হাসপাতালে চিকিৎসক - কর্মচারী আক্রান্ত হলে তাদের পক্ষ থেকে দ্রুত সম্ভব মিউচুয়াল এর আয়োজন করা। আর কোন কাজ তাদের নেই। (ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। আমাদের খুলনা অঞ্চলের চিকিৎসক নেতা ডাঃ বাহারুল আলম স্যারকে। যিনি চিকিৎসকদের স্বার্থ রক্ষায় আপোষহীন) আর বাকী সবাই রাজনীতির মাঠ থেকে কি উদ্ধার করতে চান বিএমএ জানে!!""

 

উদাহরণ ৪::
ভর্তি পরীক্ষায় ৪০ নাম্বারের নীচে প্রাপ্ত কেউ মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তির অযোগ্য। এই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সারাদেশের কয়েকটি মেডিকেল কলেজের ন্যায় ঢাকার কয়েকটি কলেজ ছাত্রছাত্রী ভর্তি করিয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেকামির জন্য তাদের সে উদ্যোগ অক্সিজেন সংকটের মুখোমুখি হয়। সাহস করে এই প্রতিষ্ঠানটি লিভ টু আপিল করে নিজেদের মেরুদন্ডের প্রমাণ দিয়েছে। আর আমাদের বিএমডিসি, ডিজি অফিস, আর বিএমএ কিসের লোভে সেই আইন বাস্তবায়ন থেকে বিরত থাকলো বুঝে আসে না।

 

আরো অবাক হবেন _________ডিজি অফিস আর বিএমডিসি টাকার ছলনায় ৪০ নাম্বারের নীচে প্রাপ্ত অধম্য মেধাবীদের ভর্তি করিয়ে পরের বছর ভর্তি পরীক্ষায় ৪০ পেলে তাদেরকে আগের ব্যাচের সাথে ক্লাস, পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়। এই শীতলীকরণ শুধুমাত্র মাজাশক্ত ডিজি আর বিএমডিসির পক্ষেই সম্ভব। তাদের কিসের যেন অভাব?


আর এটা ত কোন অজানা বিষয় নয়, ঢাকার প্রতিটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ নির্ধারিত আসনের চেয়ে ২০-২৫ জন ছাত্রছাত্রী বেশি ভর্তি করায়। মেডিকেল কারিকুলামের মাধ্যমে তারা প্রতিবার পার পেয়ে যায়। ৬ মাস পরপর প্রফেশনাল পরীক্ষা থাকায় অই সময় তাদেরকে নিবন্ধন করায়। মাঝখানে কিছু ছাত্রছাত্রী তাদের সিষ্টেমের বলিরপাঠা হয়।

উদাহরণ ৫::
২০০৪-২০০৫ সেশনে স্বনামধন্য এক চিকিৎসকের মেধাবী কন্যা দেশের কোন সরকারি মেডিকেলে চান্স পাননি। ত কি হয়েছে?? পরের বছর সেই অধম্য মেধাবী বোনটি ২০০৫-২০০৬ সেশনে সার্কভুক্ত দেশের ফরেন কোটায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হয়ে দেখিয়ে দিয়েছে সিষ্টেম জানা থাকলে সবই সম্ভব এদেশে। সেই চিকিৎসকের পরিচয় গোপন রাখলাম স্বজাতির স্বার্থে।

বাকি অংশ আগামী কাল পড়ুন

________________________________

লেখক ডা. নুরুল আমিন
Assistant Surgeon, Zakiganj, Sylhet,
Assistant Surgeon / Medical Officer at BCS (health)
Worked at M A G Osmani Medical College & Hospital
Former Foundation Training at Bangladesh Academy for Rural Development
Studies at Bangabandhu Sheikh Mujib Medical University-BSMMU
Studied at Bangladesh College of Physicians and surgeons
Studied at Bangladesh Institute of Child health(BICH)
Studied at Rangpur Medical College
Studied at Sylhet MAG Osmani Medical College

আপনার মতামত দিন:


নির্বাচন এর জনপ্রিয়