Ameen Qudir

Published:
2018-03-12 17:28:32 BdST

বাংলাদেশে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বিষন্নতা ও আত্মহত্যার কারণ ৫০ বছর পুরনো কারিকুলাম


 

অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক
______________________________

বাংলাদেশের মেডিকেল ছাত্র/ ছাত্রীদের বড় অংশ ডিপ্রেশন বা বিষন্নতায় ভুগছেন।এমন কি আত্মহত্যার ঘটনা বাড়ছে।
আমি এজন্য আমাদের মেডিকেল পাঠ্যক্রমকে দায়ী মনে করি। এটা জন বান্ধবও নয়।আমাদের মেডিকেল কারিকুলাম ৫০ বছরের পুরানো ধরনের।চরম অবাস্তব।

যেমন ধরা যাক, ৯৯% ডাক্তারের কখনও কাজে লাগবে না এনাটমি নামের সাবজেক্টটি। এর বই ১০ কেজি ওজন। তাও পড়ানো হয় প্রায় নির্যাতনের মত করে। মুখস্থ কর, পরীক্ষার সময় বমি কর। two way communication বলতে যেটা জানি, তেমন নাই। পড়াশোনা একেবারে মাদ্রাসা স্টাইলে আনন্দহীন, রুক্ষ। অথচ সার্জন হবার MS না পড়লে এটা কোনও কাজেই লাগেনা। সে সময় এটা আবার নতুন করে একই ভাবে পড়তে হয়। তাহলে আআন্ডারগ্রাজুয়েট পর্যায়ে এটা এতই ডিটেইলস করে, কেন কল্পনাতীত কঠিন, করে পড়ানো হয় !! কেন ভীতিপ্রদ করে পড়ান হয় বুঝতে পারিনা । একটু দাড়ি কমা ভুল হলেই ফেল আর ফেল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের Harvard মেডিকেল স্কুলেও এটা শুধু ভাসা ভাসা করে পড়ানো হয়।সেখানে ৪ বছরের মেডিকেল গ্রাজুয়েশনে প্রথম ২ বছরের ভেতর anatomy /physiology /pathology /biostatics পড়ানো শেষ করা হয়। কারণ বিশেষজ্ঞ হবার সময় এটা তারা আাবার ডিটেলসএ পড়বে।

debates /seminer/group presentation / two way discussion এভাবে মুখরিত থাকে আানন্দময় পড়াশোনা।

তুলনা না করলে বোঝা যাবে না,মেডিসিন ও শিশু /মানসিক/নিউরোমেডিসিন/ এসব আরো মিলিয়েএ ৫ বছরে সব মিলিয়ে মাত্র ৫০০ ঘন্টা । এ জায়গায় এনাটমির জন্য ৭০০ ঘণ্টার অপচয় ।biochemistry, pathology এত details পড়ানো হয়, যেনো পাশ করেই প্যাথলজিস্ট হতে যাচ্ছে সবাই । অথচ পোস্ট গ্রাজুয়েশন ছাড়া এ শিক্ষা কোনও কাজেই লাগেনা।

ক্রিয়েটিভ বা সৃজনশীল চৌকষ ছাত্র/ছাত্রীরা, হোচট খায় শুরুতেই। এই নিরানন্দ(আর এখন ত মারাত্মক ভুত ভবিষ্যৎ হীন) পরিবেশে ৪০% মেডিকেল ছাত্র/ছাত্রী ডিপ্রেশনে ভুগছেন।সুইসাইড তো অসম্ভব কিছু নয়। বেসিক সাইন্সে এত অপ্রয়োজনীয় চাপ এর মুখ্য কারণ ।

দেশ প্রত্যাশা করে একজনএমবিবিএস ডাক্তার গ্রামের সীমিত রিসোর্সে , এক প্রসূতি মায়ের কম জটিল obstructive প্রসূতির সফল সন্তান প্রসব করাবেন, এক হাড় ভাঙ্গা রুগির প্রাথমিক ব্যাবস্থাপনা সুচারু ভাবে করে বড় হাসপাতালে পাঠাবেন, যক্ষ্মা ,কুষ্ঠ , arsenic ,syphilis , জরুরী মানসিক রুগীর তাৎক্ষনিক চিকিৎসা, প্রশান্তি দিবেন।ইসিজি দেখে রোগ কতোটা জটিল ,নির্ধারণ কোরবেন।
শিশুর pneumonia , diarrhea , এ ধরনের চিকিৎসা দিতে পারবেন।

আমাদের curriculam ,basic science অতিরিক্ত সময় দখল করায় তা এখন জনমানুষের প্রত্যাশা পুরণে বাধা । অতি মেধাবী হওয়ায় ডাক্তাররা নানা ট্রেনিং থেকে এসব ভালই রপ্ত করেছেন, কিন্ত আমাদের বেসিক science কে অনেক কমিয়ে, মেডিকেল পড়াশোনা আনন্দময় , বাস্তব মুখী সুচিকিৎসক গড়ে তোলায় অন্তরায় হতে দেয়া উচিত নয়।

ইন্ডিয়ান কারিকুলাম আামাদের মত হলেও তারা
ইন্টার্ন থাকার সময়েই এমডি এমএসে এপ্লাই করতে পারে । এমডি করতে লাগে ৩ বছর।কম বয়েসে বিশেষজ্ঞ হওয়ায় তারা আরও সুক্ষ্ন নানা জ্ঞান অর্জন করে। আমাদের চেয়ে ভালো করে।
______________________________

অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক । দেশের প্রখ্যাত লোকসেবী চিকিৎসক। সুলেখক ।
FCPS FRCP(uk)DDV(austria)
Skin & Sexul medicine specialist
Popular Dhanmondi 2

আপনার মতামত দিন:


নির্বাচন এর জনপ্রিয়