Ameen Qudir

Published:
2018-02-13 17:34:07 BdST

নাগরিকত্ব পেলেন বাংলার নাইটিঙ্গেল লুসি হল্ট : যে দাবি প্রথম তোলেন ডাক্তাররা




 

 

ডা. অপূর্ব সাহা সৈকত

____________________________

বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেলেন বাংলার নাইটিঙ্গেল লুসি হল্ট । ডাক্তার প্রতিদিনের পাতায় ডাক্তার সমাজের পক্ষ থেকে এই মহান নাগরিকের বাংলাদেশ-নাগরিকত্বের জন্য আমরা আকুল আবেদন জানিয়েছিলাম।
অবশেষে সে দাবি পূরণ হয়েছে।
মিডিয়ায় লুস হল্টের জন্য বাংলাদেশের ভিসা মেয়াদ বাড়ানোর দাবি উঠলেও বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদানের দাবি প্রথম তুলেছে ডাক্তার প্রতিদিন ও দেশের চিকিৎসকবর্গ।
সে দাবিও পূরণ হয়েছে।

বরিশাল থেকে মিডিয়াকর্মীরা জানান,

দীর্ঘ ছয় দশক ধরে এদেশে বসবাসকারী ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হল্ট। ১২ ফেব্রুয়ারি সকালে আন্তঃ মন্ত্রনালয়ের এক বৈঠকে লুসিকে নাগরিকত্ব প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে বরিশালের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান স্থানীয় অক্সফোর্ড মিশনে লুসি হল্টের বাসায় গিয়ে এই সংবাদ পৌঁছে দেন। জানান ফুলেল শুভেচ্ছা। এদিকে, এমন সিদ্ধান্তে আবেগাপ্লুত লুসি হল্ট কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সকলের প্রতি।

লুসি হল্ট মানবসেবার মহান ব্রত নিয়ে দীর্ঘ ৫৭ বছর ধরে বাংলাদেশে কাজ করছেন। বাংলাদেশকে ভালোবেসে জীবনের প্রায় পুরো সময়ই এখানে কাটিয়ে দিয়েছেন লুসি হল্ট। মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধাহতদের সেবা করেছেন জীবনের মায়া ত্যাগ করে। বরিশাল অক্সফোর্ড মিশন চার্চে বসবাস করে তিনি এখন দুস্থ শিশুদের কল্যাণ ও সেবায় কাজ করে যাচ্ছেন।

এদেশের মানুষকে ভালোবেসে এখানেই সারাজীবন কাটানো লুসি হল্টের স্বপ্ন ছিলো বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার। এমনকি মৃত্যুর পর বরিশালের মাটিতেই সমাহিত হতে চান তিনি।

যদিও প্রতি বছর ভিসা নবায়নের মাধ্যমে এদেশে বসবাসের অনুমতি সংগ্রহ করতে হতো লুসি হল্টকে। সম্প্রতি বিষয়টি সামাজিক ও মূলধারার গণমাধ্যমে আলোচিত হয়। বাংলাদেশকে ভালোবেসে এদেশের রয়ে যাওয়া মহীয়সী এই নারীকে নাগরিকত্ব দেয়ার দাবি ওঠে।

Image result for লুসি হল্ট

 

গত ৮ ফেব্র“য়ারি বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে ১৫ বছরের জন্য ভিসা ফিমুক্ত পাসপোর্ট নেন লুসি। এসময় তাকে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়ার বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় লুসি হল্টকে নাগরিকত্ব প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বাড়ি গিয়ে লুসিকে এই সুসংবাদ জানান বরিশালের জেলা প্রশাসক।

দীর্ঘ প্রত্যাশার পর এমন প্রাপ্তিতে আবেগাপ্লুত লুসি হল্ট। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন সরকার, গণমাধ্যম ও মানুষের প্রতি। ১৯৬০ সালে প্রথম বাংলাদেশে আসেন লুসি হল্ট। ভিনদেশী এই মানবসেবীকে নাগরিকত্ব দেওয়ায় উচ্ছসিত বরিশালবাসী।

_______________________

 

Image result for লুসি হল্ট

 


বাংলাদেশের মাদার তেরেজা লুসি হল্টকে নাগরিকত্ব দিন
Published: 2018-02-09 12:27:01

 

 

 

ডা. অপূর্ব সাহা সৈকত
_______________________


বাংলাদেশের মাদার তেরেজা ; বরিশালের নাইটিঙ্গেল লুসি হল্টকে বাংলাদেশের সান্মানিক নাগরিকত্ব দিন । তাকে নাগরিক হিসেবে পেলে সম্মানিত হবে বাংলাদেশ।

৮ ফেব্রুয়ারি বরিশালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লুসি হল্টকে বিশাল জনসেবায় দাঁড়িয়ে সম্মান জানিয়েছেন।

দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী ১৫ বছরের মাল্টিপল ভিসাসহ
লুসি হল্টর হাতে তাঁর বৃটিশ পাসপোর্ট তুলে দিয়েছেন।


প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ , লুসি হল্টকে বাংলাদেশের অবস্থানের মর্যাদাপূর্ণ সুযোগ দেয়ার জন্য। এবার এই মানবতার দেবীকে যথার্থ সম্মান জানানোর পালা। এ জন্য রাষ্ট্র ও সরকার কর্নধারদের প্রতি আকুল আবেদন , লুসি হল্টকে নাগরিকত্ব দিন। তাতে সম্মানিত হব আমরা।

সরকার তাকে ভিসাসহ বৃটিশ পাসপোর্ট দিলেও
কিন্তু মিডিয়াকর্মী ও বুদ্ধিজীবীদের কাজ শেষ হয়ে যায় নি। মিডিয়াকর্মীদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ
তাঁর জনসেবার অমর মানবিক কাজকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরুন। তাঁর ব্যাপারে জানলে বিশ্বও তাকে সম্মান জানিয়ে ধন্য হবে।

আমরা গ্লোবের অন্ধকারে পড়ে আছি। আর কেবল নানা বিষয়ে রাজা উজির মারছি।
বাস্তবে বিশ্ব আমাদের অমরত্ব পাওয়া মানুষগুলো সম্পর্কে সবিশেষ জানে না।

বিশ্বের দরবারে লুসি হল্টকে তুলে ধরা দরকার।

 

Related image

ইতোপূর্বে ডাক্তার প্রতিদিনে লুসি হল্টকে নিয়ে মানবিক প্রতিবেদন
___________________

বাংলাদেশেই সমাহিত হতে চান বাংলাদেশের মাদার তেরেজা লুসি হল্ট

 

 

 

 

Published: 2018-01-22 12:19:30

 

 

 


সংবাদদাতা , বরিশাল।

____________________________


বয়স তার নব্বইয়ের কোঠায়। ৫৭ বছর ধরে এ দেশে মানুষের সেবা করছেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নিজের জীবনের মায়া তুচ্ছ করে যুদ্ধাহত ব্যক্তিদেরও স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছেন। অবসর মিললেও লোককল্যাণ থেকে নেননি অবসর। ফিরেননি জন্মভূমিতে। এ দেশের মাটি, মানুষ আর বাতাস ভালোবেসে রয়ে গেছেন এখানেই। ব্রিটিশ নারী এই লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট। বাংলাদেশের মা। মাদার তেরেজা।

 

১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হ্যালেন্সে জন্ম হয় লুসি`র। ১৯৬০ সালে তিনি প্রথম বাংলাদেশে আসেন। যোগ দেন বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে। ১৯৭১ সালে যশোর ক্যাথলিক চার্চের স্কুলে শিশুদের ইংরেজি পড়াতেন সিস্টার লুসি। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে চার্চটি বন্ধ করে মিশনের সবাই খুলনায় নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। কিন্তু পালিয়ে না গিয়ে নিজের জীবন বিপন্ন করে লুসি ছুটে যান পাশের ফাতেমা হাসপাতালে। সেখানে আহত অসংখ্য নারী, পুরুষ, শিশুর কান্না দেখে আপ্লুত লুসি অসহায় মানুষদের সেবা দিতে চান। অন্য দেশের এক নারীর এমন আগ্রহ দেখে চিকিৎসকরা বিস্মিত হলেও সম্মতি দেন। এরপর থেকেই মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যুদ্ধাহত ব্যক্তিদের শুশ্রূষা দিতে থাকেন লুসি।

 

তারপর অনেক বছর কেটে গেছে। কিন্তু এখনো মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন ৮৭ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নারী। এমনকি নিজের জন্মভূমিতেও ফিরে যাননি। ২০০৪ সালে অবসর গ্রহণের পর এখনো বাংলাদেশকে ভালোবেসে বরিশাল নগরের অক্সফোর্ড মিশনে দুস্থ শিশুদের অবৈতনিক ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। লুসি’র শেষ ইচ্ছা তাকে যেন এই বাংলার মাটিতেই সমাহিত করা হয়। আর তাই মৃত্যুর আগে এই দেশের নাগরিকত্ব পেতে চান লুসি।

কিন্তু যে দেশকে ভালোবেসে তিনি পড়ে আছেন, সেই দেশে বেশ কয়েকবার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেও বিফল হয়েছেন তিনি। মাত্র ৭৫ পাউন্ড অবসর ভাতা পেয়ে অক্সফোর্ড মিশনের একটি জরাজীর্ণ কক্ষে থাকেন তিনি এখন। এই স্বল্প আয় থেকেই টাকা জমিয়ে দ্বৈত নাগরিকত্বের জন্য বেশ কয়েকবার আবেদন করেছেন এই জনহিতৈষী নারী। কিন্তু প্রত্যাশিত সাড়া মেলেনি। তবু লুসির বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি তার ব্যাপারে জানতে পারেন তাহলে নিশ্চয়ই তাকে নাগরিকত্বের অনুমতি দিয়ে দিবেন।

 

মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখায় গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে লুসিকে সম্মাননা দেয় বরিশাল মহানগর পুলিশ।

 

লুসি বলেন, বাংলাদেশের জন্ম ১৬ ডিসেম্বর আর আমার জন্মও একই দিনে। এটা কাকতালীয় হলেও বিষয়টি আমাকে খুব ভাবায়। হয়তো এটা ঈশ্বরের খেয়াল! অবসর গ্রহণের পর সবাই দেশে ফিরে যায়। কিন্তু আমি এই দেশকে এত ভালোবেসে ফেলেছি যে, এর মায়া ছেড়ে যেতে মন সায় দেয়নি। তাই জীবনের সেরা সময়গুলো কাটানো এই বরিশালেই ফিরে এসেছি। মৃত্যুর পর এখানের মাটিতেই সমাহিত হতে চাই।

 

লুসি আরও বলেন, বেশ কয়েকবার এ দেশে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছি। প্রতিবছর অনেক টাকা দিয়ে ভিসার মেয়াদ বাড়াতে হচ্ছে। গেল বছর ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করতে ৩৮ হাজার টাকা লেগেছে। আমি এখন অবসর ভাতা পাচ্ছি ৭৫ পাউন্ড, যা বাংলাদেশের সাড়ে সাত হাজার টাকার সমান। সামান্য এই অর্থ থেকে বাঁচিয়ে আমাকে ভিসার জন্য ব্যয় করতে হয়।

আপনার মতামত দিন:


নির্বাচন এর জনপ্রিয়