Ameen Qudir

Published:
2017-12-09 18:12:23 BdST

একটি জরুরী সংবিধান সংশোধনী আইন চাই...!


 

 

 

 

 

 

 

ডা. এনামুল হক চৌধুরী
মেমন মাতৃসদন হাসপাতাল
চট্টগ্রাম।
_________________________________

 

বাংলদেশের বিদ্যালয়- মহাবিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত যেই সকল ছাত্র-ছাত্রীর রোল নম্বর ০১ থেকে ১০ এর মধ্যে থাকবেন, তাঁরা কেউ বাংলাদেশের চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার যোগ্য হবেন না। অর্থাৎ শ্রেণী - কক্ষের প্রথম বেঞ্চে বসা কেউই আর ডাক্তার- ইন্জিনিয়ার হতে পারবেন না।

উপরোল্লিখিত বিষয়ে বাংলাদেশের মহান জাতীয় সংসদে এমন একটি আইন পাস করানোর জোর দাবি জানাই যা হবে পবিত্র সংবিধানের অংশ। এবং এর যথাযথ প্রয়োগ চাই।

জীবনের বিভিন্ন বয়সের রূপ, রস, গন্ধ ইত্যাদির মায়া ত্যাগ করে মোটা মোটা বই এ ডুব দিয়ে মেধাবীরা ডাক্তার-ইন্জিনিয়ার হবেন; আর তার বিনিময়ে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র লাথি-গুতো দিবেন, লাঞ্চণা- বঞ্চনার একশেষ করবেন; তা তো চলতে পারে না! এই বিষয়ে জাতির বিবেক কী বলে, বড্ড জানতে ইচ্ছে করে।

 

আর এক প্রকারের ছাত্র-ছাত্রী আছেন যাঁরা ছাত্র জীবনের পুরো অংশ হেসে-খেলে কাটিয়ে দেন। গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেড়ান। জীবনের রূপ, রস, গন্ধের সবটুকুই উপভোগ করেন। আবার কর্ম জীবনে এসে তাঁরাই জাতির হর্তা, কর্তা, বিধাতা তথা রাজা বনে যান! ধরাকে সরা জ্ঞান করেন! কারণ বাকীরা সবাই তাঁদের প্রজা শুধু নন, এক ধরণের গোলামও বটে! তাঁদের রাজসিক জীবন যাপনে এতটুকু ব্যত্যয় ঘটলেই তো সর্বনাশ!

 

তাঁদের চাওয়ার শত ভাগ পূরণ না হলেই যত বিপদ! সেই চাওয়া যত বেশি অন্যায়-অন্যায্য হোক না কেন! ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান যে -ই হোন না কেন, তাঁদের অন্যায় -অন্যায্য চাওয়া পূরণে কার্পন্য করলেই কুরুক্ষেত্র বানিয়ে ছাড়েন তাঁরা! তাঁদের রোখার কেউ -ই নেই, তাঁদের বিরুদ্ধে টু শব্দটি করার মতো কোনো শক্তিও নেই, এই দেশে! বাংলাদেশে চরম পরাক্রমশালী মন্ত্রী- এমপিদেরও জবাবদিহিতা আছে, পুরস্কার- তিরস্কার আছে। যেমন, বর্তমানে বিএনপির দুরাবস্থা এবং বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় আওয়ামীলীগের দুঃসহ অবস্থা, এর উৎকৃষ্ট প্রমান।


কিন্তু কী এক অজ্ঞাত কারণে, এই শ্রেণীর কর্মকর্তাদের সাত খুন মাফ হয়ে যায়, তাঁরা ধরা-ছোঁয়ার একেবারেই উর্দ্ধে! আর তাই, রোল ০১ থেকে ১০ এর ছাত্র-ছাত্রীরা এই শ্রেণীর কর্মকর্তা হলে জাতির কিছুটা হলেও শান্ত্বনা থাকবে। জাতিকে কিছু দিন বা না দিন, অন্তত পড়াশোনার জন্য গাধার মতো পরিশ্রম করা মেধাবীরা রাজকীয় জীবন যাপন করলে, মনকে কিছুটা হলেও বোঝানো যায়। সর্বোপরি, যোগ্য মেধাবীরা উপযুক্ত পদ-পদবী বহন করলে একদিকে যেমন 'কী আমি হনুরে' জাতীয় ভাব তাঁদের মধ্যে থাকবে না, ঠিক তেমনি অন্যদিকে তাঁদের কাছ থেকে জাতি কিছু না কিছু পাবেনই। এখন তো, পেছনের বেঞ্চের ছাত্র-ছাত্রীরা পদ-পদবী পেয়ে, যাঁদের কারণে কোনো দিন প্রথম বেঞ্চে বসতে পারেননি প্রথমেই তাঁদের উপর প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে চড়াও হন! সময়- সুযোগ মতো অপমান- অপদস্ত করার সুযোগ হাত ছাড়া করতে চান না!

 


এই সংবিধান সংশোধনী আইনটি যত দ্রুত পাস করানো যায়, জাতির জন্য ততই মঙ্গল। অভিভাবকেরা বাচ্চাদের পড়াশোনায় উৎসাহিত করার মতো উদাহরণ খুঁজে পাবেন- ঠিক মতো পড়াশোনা করে সামনের বেঞ্চে বসতে পারলেই জীবনটি রাজকীয় হবে। সব চেয়ে বড় কথা, বর্তমানে বাংলাদেশের ডাক্তার-ইন্জিনিয়ারেরা তাঁদের বাচ্চাদের সামনে আর বিব্রত হবেন না, পড়াশোনায় উৎসাহিত করতে গিয়ে ইঁচড়ে পাকা বাচ্চাদের জিজ্ঞাসু দৃষ্টি থেকে বড় বাঁচা বেঁচে যাবেন!

আপনার মতামত দিন:


নির্বাচন এর জনপ্রিয়