Ameen Qudir

Published:
2017-04-24 19:37:40 BdST

মডেল মেডিকেল ছাত্রীকে হত্যা : বাবার কান্না


 

 

 


সংবাদদাতা ________________________

 


রাজশাহীতে মালদ্বীপের মডেল ও ইসলামী ব্যাঙ্ক মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থী রাউধা আথিফের মৃত্যুর ঘটনায় ন্যায়বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তাঁর বাবা মোহাম্মদ আথিফ। তিনি বলেছেন, যারা এ ঘটনায় সত্য লুকানোর চেষ্টা করছে, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।


রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি মৃত্যুর ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড দাবি করে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন।

একজন বাবা হিসেবে নয়, একজন চিকিৎসক হিসেবে রাউধার দেহ পর্যবেক্ষণ করেছেন উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করলে যেসব চিহ্ন থাকার কথা, এর কোনোটিই রাউধার শরীরে পাওয়া যায়নি। তার মুখে কোনো স্যালিভার (লালা) চিহ্ন ছিল না। ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করলে জিব বের হয়ে আসবে, হাতের কনুই ও গোড়ালি থেকে নিচের দিকে রক্ত জমে কালো হয়ে যাবে। স্কার্ফ বা ওড়না দিয়ে ফাঁস দিলে গলায় যে ধরনের চিহ্ন হওয়ার কথা, তার গলায় পাওয়া চিহ্নের সঙ্গে তা মেলে না। গলা চেপে হত্যা করলে যে ধরনের চিহ্ন থাকার কথা, এর অনেকগুলোই পাওয়া গেছে।’


খুব অপেশাদারভাবে প্রথম ময়নাতদন্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে মোহাম্মদ আথিফ বলেন, ‘ময়নাতদন্ত করতে গেলে অনেকগুলো প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। কিন্তু কোনো প্রক্রিয়াই অনুসরণ করা হয়নি। গলায় আঘাতের চিহ্নগুলোর স্পষ্ট বর্ণনা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।’

দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত না করতে রাউধার মায়ের অনুরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘একজন মা হিসেবে আবেগ থেকে তিনি এ ধরনের কথা বলবেন, এটাই স্বাভাবিক। এটা তাঁর জন্য অনেক কষ্টের। একজন বাবা হিসেবেও আমি চাই না আমার মেয়ের দেহ আবার কবর থেকে তুলে কাটাছেঁড়া করা হোক। তবে তদন্তের স্বার্থে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করে যদি ভালো কোনো ফলাফল আসে, তদন্তে যদি কোনো সহযোগিতা দরকার হয়, তবে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত হতে পারে।’ তিনি দাবি করেন, ‘শুধু ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনই একমাত্র অনুষঙ্গ নয়, রাউধা যে হত্যাকাণ্ডের শিকার, তার জন্য আরও অনেক আলামত আছে।’

সিআইডির তদন্তে সন্তোষ প্রকাশ করে মোহাম্মদ আথিফ বলেন, ‘রাউধা যদি আত্মহত্যাও করে থাকে, তবে এর জন্য যৌক্তিক কারণগুলো তুলে ধরতে হবে। না হয়ে থাকলে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কারা জড়িত, কারা সত্য লুকানোর চেষ্টা করছে—সবাইকে চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে। এটা শুধু আমার মেয়ে বলেই বলছি না, না হলে এই সমাজে এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটতে থাকবে।’
সংবাদ সম্মেলন শেষে রাউধার বাবা একটি প্ল্যাকার্ড নিয়ে নগরের সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান। এতে লেখা ছিল, ‘মেডিকেল শিক্ষার্থী ও মডেল রাউধা আথিফ হত্যার সঠিক তদন্ত চাই। রাউধা হত্যার ন্যায়বিচার চাই।’
গত ২৯ মার্চ রাজশাহীর নওদাপাড়ায় অবস্থতি ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হোস্টেল থেকে রাউধা আথিফের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথম ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক, কলেজ কর্তৃপক্ষ এটিকে আত্মহত্যা বললেও রাউধার বাবা মোহাম্মদ আথিফ দাবি করে আসছেন, তাঁর মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি ১০ এপ্রিল রাজশাহীর আদালতে একটি হত্যা মামলার আবেদন জানান। আদালত আবেদন আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে গ্রহণ করার জন্য শাহ মখদুম থানার পুলিশকে নির্দেশ দেন। ১৪ এপ্রিল মামলাটি শাহ মখদুম থানা থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়। মৃত্যুর পর রাউধাকে রাজশাহীর হেতেম খাঁ কবরস্থানে দাফন করা হয়। সোমবার লাশ উত্তোলন করে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করা হবে।

আপনার মতামত দিন:


নির্বাচন এর জনপ্রিয়