Ameen Qudir

Published:
2018-11-13 17:52:15 BdST

 বিএসএমএমইউ'র ভুয়া কনসালটেন্ট,এফসিপিএস তিনি! ক্রাইম পেট্রলকেও হার মানাবে এই কাহিনি


 

ডেস্ক ____________________

বিএসএমএমইউ'র সিনিয়র কনসালটেন্ট , এফসিপিএস , সিসিডি (বারডেম)পরিচয়ে রোগী দেখতেন তিনি
তার আসল পরিচয় জানতে পুলিশ হয়েছিল প্রচন্ড নাকাল। সে অভিজ্ঞতা বলছেন এসআই সাইফুল ইসলাম । তিনি জানান, গত কয়েকদিন থেকে রাজধানীর শনির আখড়ার আল আমিন মেডিক্যাল হলে রোগী দেখে আসছিলেন ওই ভুয়া চিকিৎসক। যাত্রাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী ওয়াজেদ আলী আদেশে
সাইফুল সেখানে গিয়ে দেখেন, তিনি ৫শ টাকা করে ভিজিট নিয়ে একের পর এক রোগী দেখে যাচ্ছেন। পুলিশের পরিচয় দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র ও চিকিৎসকের সার্টিফিকেট আছে কি না জানতে চাইলে বলেন, 'অবশ্যই'। এরপর বলেন, 'আপনি মোবাইল নাম্বার দিন অথবা ইমেইল ঠিকানা দিন আমি সব পাঠিয়ে দিচ্ছি।'

কিন্তু পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম অপেক্ষা করতে থাকেন। সব রোগী দেখা শেষ হলে ওই ভুয়া চিকিৎসককে সঙ্গে নিয়ে তার দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী প্রথমে যান গুলশান ১৫ নম্বর রোডের এক বিশাল বিল্ডিংয়ের সামনে। সেটা তার বাসা বললেও পরে জানান, এতো রাতে এখানে যাওয়া যাবে না। এরপর বলেন, তার বাসা উত্তরা। সেখানে গিয়েও কোনো ঠিকানা পাননি তারা। এরপর বলেন, ধানমণ্ডিতে তার স্ত্রী থাকেন। ওখানে তার সব কাগজপত্র আছে। পরে ধানমণ্ডি ২ নম্বর রোডে একটি বাড়ির পাশে গিয়ে এলোমেলো কথা বলতে থাকেন। এভাবে ঘুরতে ঘুরতে তখন বাজে রাত সাড়ে তিনটা।

এসআই সাইফুল ইসলাম মিডিয়াকে বলেন, তিনি প্রকৃতই চিকিৎসক কি না এটা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার করিনি। কিন্তু যখন আমার পুরোপুরি সন্দেহ হলো তিনি ভুয়া চিকিৎসক, তখন রাত সাড়ে তিনটার দিকে তাকে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় নিয়ে আসি। এরপর তিনি স্বীকার করেন, তার বাড়ি কুড়িগ্রাম। তিনি ৪ বছর ধরে ভুয়া ডাক্তারি করে আসছেন এবং কার্ডে দেওয়া তার পরিচয়ও সম্পূর্ণ ভুয়া।

তিনি এও স্বীকার করেন, টাঙ্গাইল, নরসিংদীসহ আরো বিভিন্ন জায়গায় এভাবে ভুয়া ডাক্তারি করতে থাকলে অনেকের কাছে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে একের পর এক স্থান বদলাতে থাকেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তার আসলে কোনো বাসা নেই। সায়দাবাদের আনোয়ার হোটেলে দৈনিক ৩শ' টাকা হিসেবে ভাড়ায় থাকতেন। তার স্ত্রী ও দুই সন্তান রুপনগর বস্তিতে মানবেতন জীবনযাপন করছে। তাদের সঙ্গে তার স্বামীর কোনো যোগাযোগ নেই। পরে দণ্ডবিধির ১৭০/৪১৯ ধারায় মামলা করে তাকে জেলহাজতে পাঠাই।

তার নাম প্রকৃত নাম আবদুল হান্নান মিয়া। ভিজিটিং কার্ডে লিখেছেন ডা. আবুল বাসার মিয়া। চিকিৎসা বিষয়ে তার নেই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। অথচ নামের সঙ্গে যোগ করেছেন এমবিবিএস, এফসিপিএস (মেডিসিন), সিসিডি (বারডেম) ডিগ্রি। পদবী হিসেবে লিখেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র কনসালটেন্ট (যদিও এই পদ সেখানে নেই) হিসেবে।

এমন এক ভুয়া চিকিৎসককে শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ। বর্তমানে তিনি জেল হাজতে আছেন।

যাত্রাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী ওয়াজেদ আলী বলেন, আমরা এই প্রতারক সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য জানতে রিমান্ডের আবেদন জানাবো।
তথ্য সূত্র :
১০ নভেম্বর দৈনিক কালের কন্ঠে প্রকাশিত সংবাদ

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়