Ameen Qudir

Published:
2018-05-14 02:37:17 BdST

‘স্বেচ্ছামৃত্যু’র অধিকার পেলেন বিজ্ঞানী : মারাও গেলেন স্বেচ্ছায়


“আমি মনে করি, আমার মতো বৃদ্ধ মানুষের স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকারসহ অন্যান্য সব নাগরিক অধিকার থাকা উচিত।”: বিজ্ঞানী ডেভিড


ডেস্ক ________________

অস্ট্রেলীয় বিজ্ঞানী ডেভিড গুডাল (১০৪) সুইজারল্যান্ডের একটি ক্লিনিকে তার স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকার ও বাস্তবায়ন পেয়েছেন। মৃত্যুর অধিকার বিষয়ক সংস্থা ‘এক্সিট ইন্টারন্যাশনাল’ এমনটি জানিয়েছে।

বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে চারটায় বাসেল শহরের ক্লিনিকটিতে এই প্রখ্যাত পরিবেশবিদ ও উদ্ভিদবিদের স্বেচ্ছামৃত্যু কার্যকর হয়।

বুধবার শেষবার জনসম্মুখে এসে ডেভিড সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “আমি আর বেঁচে থাকতে চাই না। কেউ চাইলে, আমার এই বয়সে, এমনকি আমার চেয়েও কম বয়সে… তার স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকার থাকা উচিত ।”

স্বেচ্ছামৃত্যু কার্যকরের জন্য গুডাল অস্ট্রেলিয়া থেকে সুইজারল্যান্ডে আসলে বিশ্বজুড়েই তা মনোযোগ আকর্ষণ করে। জনগণের এই মনোযোগ তাকে বিস্মিত করেছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

ডেভিডের প্রাণঘাতী কোন অসুখ ছিলো না। তাই অস্ট্রেলিয়ায় তার স্বেচ্ছামৃত্যুর সিদ্ধান্ত কার্যকর করার বৈধ উপায় ছিলো না। অস্ট্রেলিয়া ছাড়তে হওয়ায় নিজের অসন্তুষ্টিও প্রকাশ করেছিলেন তিনি।

অস্ট্রেলিয়ার একটি রাজ্যেই কেবল স্বেচ্ছামৃত্যু বৈধ, কিন্তু এর জন্য একজন ব্যক্তির প্রাণঘাতী কোন অসুখে আক্রান্ত হতে হবে, অর্থাৎ যে রোগীর আর সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা নেই তিনিই স্বেচ্ছামৃত্যু গ্রহণ করতে পারবেন।

এর আগে এক বুধবার, মৃত্যু আলিঙ্গন করতে অস্ট্রেলিয়া থেকে সুইজারল্যান্ড আসেন বিজ্ঞানী ডেভিড।

অস্ট্রেলিয়ার এবিসি টিভিকে তিনি বলেছিলেন, এই সুন্দর দেশ ছেড়ে আমি সুইজারল্যান্ডে যেতে চাই না। কিন্তু আমি স্বেচ্ছামৃত্যু গ্রহণ করতে চাই। আর অস্ট্রেলিয়া সেটা সমর্থন করে না। এবং আমি খুব বিরক্ত।

“আমার বয়স এখন ১০৪ বছর। স্বাস্থ্য দিনকে দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে।”

গুডাল প্রথম আলোচনায় আসেন পার্থের এডিথ কোনান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিতর্কিত ঘটনায়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সহযোগী ছিলেন গুডাল। ২০১৬ সালে ওই বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করে গুডাল আর তার গবেষণাকাজের জন্য উপযোগী নন।

যদিও বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীদের সমালোচনার মুখে ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। জানা যায়, গুডাল তখনও গবেষণার কাজ করছেন। তখনও বাস্তববিদ্যা গবেষণাপত্র সম্পাদনা করছেন।

গত মাসে নিজের জন্মদিনে এবিসি টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডেভিড গুডাল বলেছিলেন, এতো বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকায় আমার খুবই অনুতাপ হয়। আমি সুখী নই। আমি মরতে চাই। সেটা দুঃখজনক না। দুঃখজনক হবে যখন কাউকে মরতে বাধা দেওয়া হবে।

“আমি মনে করি, আমার মতো বৃদ্ধ মানুষের স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকারসহ অন্যান্য সব নাগরিক অধিকার থাকা উচিত।”

গুডালকে স্বেচ্ছামৃত্যুতে সহায়তাকারী ‘এক্সিট ইন্টারন্যাশনাল’ সম্প্রতি তাদের ওয়েবসাইটে জানায়, সম্মানের সঙ্গে মৃত্যুবরণ করতে গুডালের মতো একজন বর্ষীয়াণ ও সম্মানিত নাগরিককে অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে আধা দুনিয়া পাড়ি দিয়ে অন্য দেশে যেতে হচ্ছে, যা অবিচার।

“একটি শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনক মৃত্যু পাওয়ার অধিকার সবারই থাকা উচিত। এর জন্য ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা উচিত না।”

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়