Ameen Qudir

Published:
2018-03-13 01:32:48 BdST

নেপালে ইউএস বাংলার বেদনাবহ বিমানে ছিলেন ১৪ মেডিকেল শিক্ষার্থী ও ১ জন ডাক্তার



ডেস্ক রিপোর্ট
________________

নেপালে শোকাবহ দুর্ঘটনা কবলিত ইউএস বাংলার বিমানের হতাহতের ঘটনায় এখন শোক বিশ্ব জুড়ে।
এই ট্রাজেডির শিকার যাত্রীরা প্রায় সবাই উপমহাদেশের । বেশির ভাগ বাংলাদেশের ও নেপালের।
ঘটনায় উপমহাদেশ জুড়ে শোকের কালো চাদর। ইউএস বাংলার বেদনাবহ বিমানে ছিলেন ১৪ মেডিকেল শিক্ষার্থী ও ১ জন ডাক্তার ।
তারা কে কি পর্যায়ে আছেন , সর্বশেষ খবর জানা যায় নি। তবে কেউ কেউ সুস্থ আছেন বলে আশা করা হচ্ছে। বিমানটির-
ড্যাস কিউ৪০০ এর ২ পাইলট প্রিথুলা রাশিদ এবং আবিদ সুলতান আর বেচে নেই বলে কোন কোন খবরে জানা যায়। । ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের এই বিমানটির বয়স ১৭ বছর।

বিবিসি জানায়,
নেপালে বাংলাদেশী বিমান দুর্ঘটনায় অন্তত ৫০ নিহত।
নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বাংলাদেশী একটি বিমান বিধ্বস্ত হলে কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের ঢাকা থেকে ৭১ জন আরোহী নিয়ে বিমানটি রানওয়েতে অবতরণ করার পরপরই এই দুর্ঘটনা ঘটে। তখন বিমানটিতে আগুন ধরে যায়।

নেপালের পুলিশ জানিয়েছে, ৩১ জন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন। আরো ৯ জন পরে হাসাপাতালে মারা গেছেন।

এখনও আটজন নিখোঁজ রয়েছে। বাকিদেরকে হাসপাতালে চিকিৎসা করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই গুরুতর।

পাইলট আবিদ সুলতান

 

বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের একজন নেপালের একটি সংবাদপত্রকে বলেছেন, বিধ্বস্ত বিমানটির জানালা দিয়ে তিনি বের হয়ে আসেন। এবং তিনি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করছেন।

তিনি বলেছেন, বিমানের ভেতরে তিনি প্রথমে প্রচণ্ড জোরে একটা ধাক্কা অনুভব করেন এবং পরে খুব জোরে বিস্ফোরণের একটি শব্দ শুনতে পান।
দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায় নি।
যাত্রীদের মধ্যে কতোজন বাংলাদেশের নাগরিক সেটাএখনও নিশ্চিত করে জানা যায় নি।

নিহতদের পরিচয় সম্পর্কেও এখনও পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের তরফে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

দুর্ঘটনার সাথে সাথে বিমানটিতে আগুন ধরে যায় এবংউদ্ধারকর্মীরা সেখান থেকে মৃতদেহ বের করে আনেন।

নেপালি প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্ম অলি এই দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করে এর তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

পাইলট প্রিথুলা রাশিদ 

 

কিভাবে ঘটে এই দুর্ঘটনা:

বিমান চলাচলের একটি ওয়েবসাইট থেকে দেখা যায় বিমানটি স্থানীয় সময় ১৪:২০ এ অবতরণ করে।
নেপালে বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক সঞ্জীব গৌতম বলেছেন, বিমানটিকে দক্ষিণ দিক থেকে নামার অনুমতি দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু এটি নামে বিমানবন্দরের উত্তর দিক থেকে।

তবে তিনি বলেন, "বিমানটির অস্বাভাবিক এই অবতরণের কারণ সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত করে এখনও কিছু বলতে পারছি না।"

বেঁচে যাওয়া একজন যাত্রী হাসপাতালে শুয়ে বলেছেন, খুব স্বাভাবিকভাবেই ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করেছিলো বিমানটি। কিন্তু কাঠমান্ডু এয়ারপোর্টের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় এটি অদ্ভুত আচরণ করতে থাকে।

কাঠমান্ডু পোস্টকে তিনি বলেন, 'হঠাৎ বিমানটি প্রচণ্ড জোরে কাঁপতে থাকে এবং তারপর বিকট জোরে শব্দ হয়। আমি জানালার পাশেই বসেছিলাম। এবং জানালা ভেঙে বাইরে বের হয়ে আসতে সক্ষম হই।"

নামার সাথে সাথে বিমানটি কাঁপছিলো

নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অপেক্ষমাণ বাংলাদেশী একজন যাত্রী বলেছেন, বিমানটি রানওয়েতে নামতে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।

দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর তিনি বলেন, অবতরণ করার সাথে সাথেই বিমানটি কাঁপছিলো। তারপরই তিনি দেখতে পান, তার ভাষায়, হঠাৎ একসময় তাতে আগুন ধরে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী বাংলাদেশী ছাত্র আশীষ কুমার সরকার বলেছেন, তিনি বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছিলেন বাংলাদেশে ফেরার জন্যে। ইউ-এস বাংলার এই বিমানে করেই তার ঢাকায় ফেরার কথা ছিলো।

"আমার চোখের সামনেই সবকিছু হলো। বোর্ডিং পাস হাতে নিয়ে আমি অপেক্ষা করছিলাম। এসময় এই দুর্ঘটনা ঘটে," বলেন তিনি।

মি. সরকার বলেন, "এসময় আমি মোবাইল ফোন দিয়ে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের ছবি তুলছিলাম। আমি দেখলাম ল্যান্ড করার সাথে সাথে বিমানটি কাঁপছিলো। মনে হচ্ছিলো যে ওটা মনে হয় ঠিক মতো ল্যান্ড করতে পারছিলো না। তারপর দেখলাম যে হঠাৎ করে বিমানে আগুন ধরে গেছে।"

মি. সরকার জানান, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই এসব ঘটলো। কিন্তু শুরুতে কেউই যেন বুঝতে পারছিলো না যে আসলে কি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সেসময় যেসব বিমান অবতরণ করার জন্যে রানওয়ের কাছাকাছি চলে এসেছিলো এরকম কয়েকটা বিমানকে তিনি অবতরণ করতে দেখেছেন।

কিন্তু এর কয়েক মিনিট পর থেকে তিনি আর কোন বিমানকে উড়তে বা নামতে দেখেন নি।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই তিনি কোনো উদ্ধার তৎপরতা দেখতে পান নি।

মি. সরকার নেপালে বেড়াতে গিয়েছিলেন। দুর্ঘটনার তিন ঘণ্টা পর তিনি জানান যে ইউএস-বাংলার কোনো কর্মকর্তা তখনও পর্যন্ত অপেক্ষমাণ যাত্রীদের সাথে যোগাযোগ করেনি। তাদের কাউন্টারও বন্ধ ছিলো বলে তিনি জানান।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়