Ameen Qudir

Published:
2018-02-17 15:59:14 BdST

ভিকারুন্নিসা নূন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতার প্রকৃত নাম ভিক্টোরিয়া : তিনি অস্ট্রিয়ান




 


ডা. সুজানা শরমিন

_______________________

ভিকারুন্নিসা নূন স্কুলের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা ছিল না। সম্প্রতি জানার সুযোগ হল বিশিষ্ট জনদের লেখায়।
বিস্ময়কর সব তথ্য জেনে আমি অভিভুত। অজানা এসব তথ্য সবার সঙ্গে শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারছি না।

তিনি একজন অস্ট্রিয়ান। প্রকৃতপক্ষে তার নাম ছিলো ভিক্টোরিয়া। তৎকালীন পাকিস্তানের সপ্তম প্রধানমন্ত্রী ফিরোজ খান নূনের সংগে বিয়ের সময় তিনি মুসলমান হন এবং ভিকারুননিসা নূন নামটি গ্রহণ করেন। আর তখন বাংলাদেশ বলে আলাদা রাষ্ট্র ছিলো না। মেয়েদের আধুনিক শিক্ষার উন্নয়ন ও প্রসারের জন্য তৎকালীন পূর্ব বাংলায় তিনি এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বিশাল হৃদয়ের অধিকারীই ছিলেন। শিক্ষা ও সমাজসেবায় তার বিশেষ অবদান রয়েছে।


কি বিস্ময়কর সব তথ্য। সাংবাদিক আলী আসগর স্বপন ভাইয়ের লেখায় এসব অজানা তথ্য পড়ে প্রাক্তন ভিখ নুন; সরি প্রাক্তন ভিক্টোরিয়ান হিসেবে গর্বিত বোধ করছি।


লেখক আশরাফুল ইসলাম আরও জানিয়েছেন এক লেখায়।
তার কাছে জানা যায় , তৎকালীন সময়ের খ্যাতনামা নৃত্যশিল্পী বুল বুল চৌধুরী ( প্রকৃত নাম রশীদ আহমদ চৌধুরী ১৯১৯-১৯৫৪) ভিকারুন্নিসা নূন এর সাথে দেখা করে একটি ললিতকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠার ইচ্ছার কাথা জানালে ভিকারুন্নিসা নূন প্রথমেই তাঁর হাতের সোনার বালাগুলো খুলে বুলবুলের হাতে দিয়ে বলেছিলেন-এ দিয়ে শুরু করেন। দেখি সাহেবকে বলে কী করা যায়। আজকের বুলবুল ললিতকলা একাডেমি (বাফা) তেও তাঁর প্রথম অবদান। বুলবুল পরবর্তীতে হয়েছিলেন পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক দূত।


সঙ্গীত শিল্পী শামসুল হুদা জানান ,

অস্ট্রিয়ায় জন্মগ্রহনকারী ভিক্টোরিয়া তথা ভিকারুন্নিসা নুন একজন নিবেদিতপ্রান সমাজকর্মী ছিলেন ।১৯৪৭ এর ভারত ভাগের পর তিনি তদানিন্তন পুর্ববাংলা সিন্ধু ও পান্জাবে বাস্তুহারা রিফিউজীদের কল্যানে কাজ করেন। তিনি রেডক্রস এর সাথেও সম্পৃক্ত ছিলেন। নারী শিক্ষার প্রসারে ঢাকার ভিকারুন্নিসা স্কুল,রাওয়াল পিন্ডির ভিকারুন্নিসা গার্ল্স স্কুল ও ভিকারুন্নিসা উইমেন্স কলেজ স্হাপন করেন। তিনি রাষ্ট্রদূত এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়ে ছিলেন। ভিকারুন্নিসা নুন ২০০০ সালে ইসলামাবাদে পরলোক গমন করেন।
এই মহিয়ষী নারীকে স্বচক্ষে দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল ১৯৫১ সালে বগুড়াতে। গভর্নর নুন সাহেবের সাথে এসেছিলেন হেলিকপ্টার যোগে ,বগুড়া জিলা স্কুলের মাঠে অবতরন করেছিলেন। পরনে ছিল লাল পাড়ের রাজশাহী সিল্কের অফ হোয়াইট শাড়ী , চোখে কালো সান গ্লাস। সারাদিন ব্যস্ত সময় পার করে বিকেলে ঢাকা ফিরে যান।

____________________

ডা. সুজানা শরমিন , ঢাকা মেডিকেল কলেজ ।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়