Ameen Qudir

Published:
2017-05-30 17:29:50 BdST

আমাদের সকলের সে কি মন খারাপ ! কি যে কান্না


 

 

ডা. শিরিন সাবিহা তন্বি

 

কালচে সবুজ রঙা গাছগাছালি আর ধূসর মেঘের ছাওয়া আঁতুড়ে প্রভাতটি একটু একটু করে আলোর মুখ দেখছিল।ক্ষনে ক্ষনে একটু ঠান্ডা মিষ্টি বাতাস যেন অকারন শিহরন বইয়ে দিচ্ছিল।
অনুভূতি টা ঠিক ভয়ের কিনা বুঝতিছি না।কাল বিকেল থেকেই বার বার খবর জানছি,ধেয়ে আসছে ঘূর্নিঝড় "মোরা"।
ঝড় জলোচ্ছাসের দেশ বাংলাদেশ।প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে সংগ্রাম করেই আমাদের বেঁচে থাকা আমাদের সফলতা,বিজয়!
ছোটবেলাটাকে বড্ড মনে পড়ে।তখন এত ভালো কমিউনিকেশন ছিল না।একবার আব্বু দাদা বাড়ীতে গেল।যেদিন তার আসবার কথা সেইদিন ছিল দশ নম্বর মহা বিপদ সংকেত।মোবাইল ছিল না বলে জানাতে পারেনি সে আসছে কি আসছে না।আস্তে আস্তে রাত বাড়ছিল।ঝড় বাড়ছিল।আমাদের সকলের সে কি মন খারাপ!কি যে কান্না!

জীবনের কাটিয়ে আসা সে দিনগুলোতে ঝড় বন্যা জলোচ্ছাস যাই হোক না কেন,বাবা আর সব বোনরা দিনের কাজ শেষে বাড়ীতে ফিরতে পারলেই শক্তি পেতাম।
আজ তেমনি এক দশ নম্বর বিপদ সংকেতের দিনে জীবন জীবিকার প্রয়োজনে ছোট্ট পরিবারটি ই থাকছে বহু জায়গায় ছড়িয়ে।
বরগুনাতে শুনলাম পাঁচশ শতাধিক নৌকা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে বিপদ সংকেত পেয়ে তিনশ নৌকা ফিরেছে।বাকী দুই শতাধিক নৌকা গভীর সমুদ্রে।তাদের সাথে আনুমানিক তিন হাজার জেলে!তার মানে কত গুলো পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তিটি তাদের ধরা ছোয়া ভাবনার অনেক বাইরে!
ঘুর্নিঝড় মোরা কিছু বুঝে উঠবার আগেই কেড়ে নিতে পারে তাদের প্রিয়জনের জীবন।
উপকূলীয় মানুষ গুলো এই বিপদকে মাথায় নিয়ে অহর্নিশ যুদ্ধ করে বেঁচে থাকে।ঘর ভেসে যায়।আবার চোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে ঘর তোলে,সংসার গড়ে।
ঝড়ের পূর্বাভাসে লক্ষ লক্ষ মানুষ ঘর বাড়ী ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে।
আট নম্বর বিপদ সংকেত মাথায় নিয়ে আমি রোজকার মত একটি আলোকিত সকালের মুখ দেখেছি।"মোরা" এখন কি করছে জানা নেই।

তবে আমরা যেন একতাবদ্ধ থাকি।বিপদ কারো হলে বিপদ গ্রস্তদের পাশে থাকি।ঘূর্নিঝড়ের তান্ডবকে মানবতার ঝান্ডা উড়িয়ে জয় করে নেই।

সব অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে আমরা যেন জয়ী হই।।

____________________________

ডা. শিরিন সাবিহা তন্বি , লোকসেবী চিকিৎসক। শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল্ সুলেখক।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়