Ameen Qudir

Published:
2017-03-05 20:16:55 BdST

দেশের ডাক্তারদের গালাগালি করে যারা গর্ব বোধ করেন: লেখাটা তাদের জন্যে


 

 https://www.facebook.com/mohammad.tapos/videos/10155044756314122/

 

মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা তাপস

_________________________


আপনি কি দেশের ডাক্তার দের গালাগালি করে গুষ্টি উদ্ধার করে গর্ব বোধ করছেন? লেখাটা আপনার জন্যেই !

"" রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হাসপাতাল, কোলকাতা RN Tagore Hospital, Kolkata !!! "" এই হাসপাতালের নাম উচ্চারণ করার সময় দেখি লোকজন আবেগে গদগদ হয়ে যান। চোখমুখ কেমন যেন ছলছল করে উঠে। আর ডাক্তার দেবি শেঠির নাম উচ্চারন করার সময় এমন ভাব করেন যেন খোদার পরেই তার স্থান । আমার মূল্যবান সময় দিয়ে ছবি ও ভিডিওটা আপ করছি আর লেখাগুলো লিখছি আপনাদের জন্যেই !

একটু মনোযোগ দিয়ে কষ্ট করে সম্পূর্ণ ভিডিও ক্লিপ টা দেখুন। স্টার প্লাস আর সনি চ্যানেলের বদৌলতে আমাদের দেশের ৪ বছরের বাচ্চাও এখন হিন্দি ভালই বোঝেন !!!

ঘটনা হচ্ছে একজন কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট পেশেন্ট কে নিয়ে। রুগীর রক্তের গ্রুপ "ও পজেটিভ"। প্লাজমা ফেরোসিস ছাড়া ( যেটা এই হাসপাতালের এই কম্পাউন্ডে করলে ৯০% ক্ষেত্রেই রুগি মারা যায় ) এই অপারেসান করতে গেলে ডোনারকেও " ও পজেটিভ" হতে হবে। সমগ্র প্রস্তুতি নিয়ে অপারেসান করার ঠিক আগ মুহূর্তে ধরা পড়ল ডোনার আসলে "বি পজেটিভ" অর্থাৎ রক্তের গ্রুপ কম্পেটেবাল না। দেখুন কান্ড !!!

 

ইন্ডিয়াতে একজন ইন্ডিয়ান কে কারো ডোনার হতে হলেও প্রথমে আইডি প্রুভ দিয়ে রুগীর আত্মীয় প্রমান দিতে হয়, অতঃপর হাসপাতাল থেকে সমগ্র টেস্ট কমপ্লিট করে যদি দেখা যায় এই অঙ্গ দান রুগী বা ডোনার কারোর জন্যেই ক্ষতিকর না তখন সে মেডিক্যাল ফাইল সকল লিগাল ডকুমেন্ট সহ ওদের স্বাস্থ্য ভবনে ( স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়) জমা দিতে হয় যা সম্পূর্ণ হাসপাতালের দায়িত্তে আর তত্ত্বাবধায়নে করতে হয়। এখানে রুগীর ব্যাক্তগত হস্তক্ষেপের কোন সুযোগ নেই। অতঃপর অনুমতি মিললেই হাসপাতাল অপারেশন করতে পারে। এখন ঘটনা হচ্ছে যেখানে ডোনারের আইডি তে রক্তের গ্রুপ লেখা আছে "বি পজেটিভ" সেখানে হাসপাতালের পরিক্ষায় তা "ও পজেটিভ" কিভাবে হয়ে গেল। একেবারে শেষ মুহূর্তে রুগীর একজন আত্মীয় যিনি পেশায় চিকিৎসক তিনি বিষয়টি ধরতে পারেন। আর রুগি রক্ষা পায় বড় ধরনের বিপদের হাত থেকে। আর এতা সম্ভব হয়েছে রিপোর্ট জালিয়াটির দ্বারা যাতে এখানকার উপর থেকে নিচ সবাই জড়িত !!!

 

এবার আসুন দেখি এই দুইনাম্বারি কেন !!! আর এটাই কি প্রথম কিনা !!!

জি না, এই কাজটা এই হাসপাতাল নিয়মিতই করে থাকেন আর করেন বাংলাদেশের নিরীহ রুগীদের সাথে। প্রথমত বাংলাদেশের রুগীদের একটা বৃহত্তর অংশ তাদের অবৈধ কিডনি প্রতিস্থাপন করেন ভারতের যে মহা দুই নাম্বারি হাতে গোনা কয়েকটা হাসপাতালে, "" রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হাসপাতাল, কোলকাতা RN Tagore Hospital, Kolkata "" লিস্টের সবার উপরে।

এদের আছে বাংলাদেশে সক্রিয় দালাল চক্র যাদের কাজ বাংলাদেশ থেকে অবৈধ ডোনার জোগাড় করে সবকিছু ঠিকঠাক করে রুগীকে বাংলাদেশ থেকে কোলকাতা অথবা ব্যাঙ্গালোরএ এদের প্রধান হাসপাতাল "" নারায়ণ রিদায়ালয়" তে পাঠানো।

অতঃপর খেলা শুরু। রুগী জানেন যে তিনি একটা অবৈধ কাজ করছেন হাসপাতালের দালালদের সহায়তায় জীবন বাঁচাতে। তাই এসকল রুগীদের সাথে এরা যা খুশি তাই করেন ইচ্ছা মত। রুগীর মুখ বন্ধ রাখা ছাড়া কিছুই করার থাকে না। আর এসকল ট্রান্সপ্লান্টের রিজেক্সান হয় বছরখানেকের ভেতরি। কিন্তু রুগিপক্ষের কিল খেয়ে কিল হজম করা ছাড়া কিছুই করার থাকে না।

তাই পারতপক্ষে এই বিখ্যাত "" রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হাসপাতাল, কোলকাতা RN Tagore Hospital, Kolkata "" কে এড়িয়ে চলুন। দেশের ডাক্তার দের উপর ভরসা রাখুন। যদি চিকিৎসার প্রয়োজনে দেশের বাইরে যেতেই হয়, তরে অন্তত দেশে ভাল এখন ডাক্তার এর সাথে পরামর্শ করে যান। অর্থ বাঁচবে আর জীবনটা রক্ষা পাবে।

বিশ্বাস করুন ভাই, একথাগুলো আমার প্রায় ১৫ বছরের প্রফেশনাল অভিজ্ঞতা থেকে লিখলাম আজ।

( বাংলাদেশ থেকে যারা শুধু নাম দেখে এই সকল নাম সর্বস্ব হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন তারা সতর্ক হবেন।)

নীচে ভিডিও দেখুন _

 https://www.facebook.com/mohammad.tapos/videos/10155044756314122/

https://www.facebook.com/mohammad.tapos/videos/10155044756314122/


______________________________

মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা তাপস । সুলেখক।
Managing Director at Advance Healthcare Solution Limited.

আপনার মতামত দিন:


ক্লিনিক-হাসপাতাল এর জনপ্রিয়