Ameen Qudir

Published:
2016-12-19 16:23:19 BdST

সংসদ থেকে ফোন এসেছে , অবজেকশন আছে


 

 

 

ডা. শিরিন সাবিহা তন্বী

______________ _______________

 


অষ্টম পে স্কেল এ ক্যাডার বৈষম্য দূরীকরনে প্রকৃচি আন্দোলন তখন তুঙ্গে।একটা লেখায় লিখেছিলাম কাজী নজরুল ভর করেছেন আমার আঙ্গুলের ডগায়।নেহায়েৎ মিথ্যে নয়।
বঙ্গবন্ধুর কথা বলতে গেলে আমি তো অশ্রুসজল।বছরের শুধু নয়,জীবনের বেশীর ভাগ সময় তাঁকে কাটাতে হয়েছে জেল খানার অন্ধকারে।সত্য কথা বলতে গিয়ে,অধিকার আদায় আর অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তিনি অন্যায়কারীদের শত্রু হয়েছেন।নজরুল প্রতিবাদ করে শৃংখলিত হয়েছেন।শৃংখলিত অবস্থায় ও শৃংখল ভাঙ্গার গান ই করেছেন।
বেশ কয়েক মাস আগে একটি পেশাজীবী পেজের এডমিন ফোন করলেন,সংসদ থেকে ফোন এসেছে।আমার কোন একটা পোষ্টে অবজেকশন আছে।পোষ্ট রাখলে পেজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।উনি আমার মত জানতে চাইলেন।পেজের স্বার্থে মুছে দিতে বললাম।
কিছুদিনের মধ্যেই নির্বাহী কর্মকর্তার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের সাথে অভদ্রতা এবং কর্তব্যকালীন সময়ের অসদাচরন নিয়ে লিখলাম।বেশ কয়েকটা পেজে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় থেকে ফোন এসেছে।দু এক জন এডমিন সাহস করে পোষ্ট রেখেছে।কেউ ডিলিট করেছে।
আমি বিষয়টাকে সহজ ভাবে নিতে শিখেছি।আমার লেখায় কমেন্ট করতেও অনেকে সাহস পায় না।কারন আমি তাদের অন্যায়ের কথা লিখি যারা বিত্তবান।তারা অসহিষ্ণু গড ফাদার টাইপ।অপকর্ম করতে করতে এমন হয়ে গেছে যে এরা এদের অসদাচরনের বিপক্ষে কিছু শুনতেও নারাজ।এরা ভয়ংকর রকমের সংঘবদ্ধ।
একই লেখায় একজন পাঠক ইনবক্সে সহমত বলে জানান আর অন্যদিকে পোষ্টের কমেন্টে হম্বিতম্বি চলে - ভুল লিখেছি।এটা কি প্রমান করে?মুক্তিযুদ্ধকে মনে করিয়ে দেয়,বুদ্ধীজীবীরা যেন বলছেন - হে ছোট্ট মেয়েটি তন্বী।তুমি ঠিক পথেই রয়েছ।এগিয়ে চল।

#প্রসঙ্গ_মানহীন_চিকিৎসক_তৈরীর_কারখানা

আমি মানুষটাই এমন যে কাউকে আঘাত করে ফেললে নিজে কষ্ট পাই।অনেকদিন লিখছি।তাই অনেক সমস্যার বিষয়ে অনেকে ইনবক্সে জানান।বার বার কিছু দেখলে হয়ত লিখি।আমার বক্তব্য ক্লিয়ার।ভাবনাও।কওমের স্বার্থে অনেকে - বিশেষত যারা প্রাইভেট মেডিকেলের মালিক,প্রশাসনিক কর্মকর্তা,চিকিৎসক এবং ছাত্র ছাত্রী এরা এই পোষ্টের বিরুদ্ধে আদা জল খেয়ে নামবেন।
"ঠাকুর ঘরে কে?আমি কলা খাই না" র মত মানহীন শব্দটা অনেকের বুকে জ্বালা ধরায়।
# ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের এতটুকুন একটা দেশে ত্রিশটি সরকারী মেডিকেল কলেজের সাথে সাথে সত্তর টা মেডিকেল কলেজের কোন দরকার নেই।এটাই আমার বক্তব্য।
# যদি ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতিতে এ ভূল থাকে তো বদলানো হোক।কিন্তু একি পরীক্ষা দিয়ে প্রথম তিন হাজার চান্স পাবার পর ঐ দেশেই বাকী চল্লিশ হাজার তম পর্যন্ত কেবল টাকা থাকলেই সেই সাফল্য পাওয়া যায় যা প্রথম তিন হাজার পেয়েছে এটা কি করে সম্ভব???তার মানে ভাল ফলাফলকারীদের ফলাফলের মূল্য যারা চান্স পেল না তাদের বাবার কিছু লক্ষ টাকার সমান !!!
# কালচারাল আর উচ্ছৃংখল এক নয়।আমি নিজে স্কুলে কলেজে বার বার অভিনয়,আবৃত্তি,বিতর্ক,বক্তৃতা,গল্পবলা,রচনালিখন বিষয়ে বার বার পুরস্কৃত হয়েছি।মেডিকেল কলেজে চান্স না পেলে আমি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম এবং ওখানকার শিক্ষক হবার চেষ্টা করতাম।প্রাইভেটে পড়ে ডাক্তার নয়।
# একজন টাকা দিয়ে পড়তে পারছে বলেই এত টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন ফাঁসের মত কলঙ্কিত ব্যাপার আমরা দেখেছি।টাকা খরচ করে ডাক্তার হওয়া যায় - এই নোংরা কনসেপ্ট ডেভলপ না করলে বাংলাদেশে এমন সৎ টাকার মালিক কজন আছেন যিনি পাঁচ দশ লক্ষ টাকা দিয়ে প্রশ্ন কিনবেন।এ সব ই এক নীতিহীনতার দুষ্টু চক্র।
আমি বলছি মেভিকেল এডুকেশনের গৌরবময় ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হলে লোভ,হিংস্রতা,ব্যবসা পরিহার করে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ গুলোর উপযুক্ত মনিটরিং,হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা,ক্যাম্পাস,আগ্রহী এবং যোগ্য শিক্ষার্থী বাছাই - এমন অনেক বিষয়ে নজর দিতে হবে।
প্রশ্নফাঁস বন্ধ করতে হবে।
নবসৃষ্ট সরকারী মেডিকেল কলেজ গুলোর অবকাঠামো গত উন্নয়ন এবং শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতেই হবে।
সরকার চাইছেন গ্রামে গঞ্জে দোরগোঁড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌছাতে।আর অনেকে ভাবেন তারা প্রাইভেট থেকে পাস করে পোষ্ট গ্রাজুয়েশন করে রাজধানীর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে লিড দেবেন আর সরকারী থেকে পাস করে দেশের উপজেলার স্বাস্থ্য খাত সামলাবে - এই স্বপ্ন যারা দেখছেন - তাদের জন্য কেবল শুভকামনা।কারন,এই সত্যটা আজ উন্মোচিত হওয়া জরুরী।
আর সত্য অন্বেষনে রোষানলে পরার ইভেন্ট আমার লেখালেখিতে পুরনো।কিন্তু আমার দেশের ছাত্ররা আগের মতই দেশে বিদেশে দর্পের সাথে এই পেশার সুনাম অক্ষুন্ন এই আশাবাদ এবং চেষ্টা আমার আমৃত্যু থাকবে।

___________________________

লেখক
ডা. শিরিন সাবিহা তন্বী । লোকসেবী ডাক্তার । মেডিকেল অফিসার, শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল্ ।

আপনার মতামত দিন:


ক্লিনিক-হাসপাতাল এর জনপ্রিয়