Ameen Qudir

Published:
2017-09-10 18:14:30 BdST

কর্তব্যরত চিকিৎসকের আর্ত চিৎকার আপনাদের হৃদয় ও বিবেককে নাড়া দিবে কি




 

ডা. বাহারুল আলম

_________________________________

মাননীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক মন্ত্রী ও মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর-এর দৃষ্টি নিবদ্ধ করার অনুরোধ জানাচ্ছি - খুলনা জেলার ডুমুরিয়া হেলথ কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক লাঞ্ছিত হওয়ার সাথে বরিশালের আগৈলঝারা উপজেলার ইউএনও-এর জামিন বাতিল পরবর্তী ঘটনার- বিমাতাসুলভ এ দৃষ্টিভঙ্গি কতকাল চলবে?


লাঞ্ছিত চিকিৎসকের হয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত সাংবাদিকের প্রতিবেদনের দিকে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছি। আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষিত হবে কিনা , কর্তব্যরত চিকিৎসকের আর্ত-চিৎকার আপনাদের হৃদয় ও বিবেককে নাড়া দিবে কিনা – এ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে ক্রমান্বয়ে প্রত্যাশার আবেদন ক্ষীণ হয়ে আসছে।

ডুমুরিয়া হেলথ কমপ্লেক্সের লাঞ্ছিত চিকিৎসক ডা সবুজ সাহা রাত ১১টায় থানা থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে ফিরে আসে নিজ কর্মস্থলে । পরদিন তাকেই বাদী হয়ে ডুমুরিয়া থানায় লাঞ্ছনার বিচার চেয়ে মামলা রুজু করতে হয়।

লাঞ্ছিত হওয়ার সময় সে কর্তব্যরত ছিল –রাষ্ট্র ও সরকারের পক্ষে। অথচ সেই রাষ্ট্র ও সরকারের প্রশাসন বাদী হয়ে অদ্যাবধি কোন মামলা থানায় দায়ের করে নি। এ নিষ্ঠুরতার কারণ কি এবং জবাব কার কাছে পাওয়া যাবে , কে দিবে ? কার কাছে জবাব চাইব? – সকলেই নীরব, কোন সাড়া নেই। কেবল চিৎকার আছে , ‘কর্মস্থলের নিরাপত্তা না থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসক কেন নিজেকে প্রত্যাহার করে নিবে? লাঞ্ছিত হও ক্ষতি নেই , চিকিৎসা দাও- তোমার লাঞ্ছনার চিৎকার কে শোনে”? তা না হলে জনগণের কাছে রাষ্ট্র ও প্রশাসনের ইজ্জত থাকে না।

তারা বড়ই বেকায়দায় পড়ে । ‘লাঞ্ছিত হওয়ার সকল ঝুঁকি মাথায় নিয়ে চিকিৎসকরা রোগী দেখ’ – এটাই তাদের নির্দেশ। কর্মস্থলে রোগীর সামনে চিকিৎসক মাইর খেলে রাষ্ট্র ও তার প্রশাসনের কোন ইজ্জত যায় না।

অথচ মাননীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক মন্ত্রী অনেকবার ওয়াদা করার পরেও ডুমুরিয়ার চিকিৎসক লাঞ্ছনার ঘটনায় সংক্ষুব্ধ হয়ে একবারও ঘোষণা দেন নাই, ‘বাংলাদেশে সকল হাসপাতালে চিকিৎসকদের কর্মস্থল নিরাপদ করা হল’। অনেক বড় বড় সিদ্ধান্ত নেন মাননীয় মন্ত্রী, কেবল এই ক্ষুদ্র সিদ্ধান্ত নিতেই যত অনীহা । রাষ্ট্রে অনেক মহারথীদের নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা দিতেই কেবল চাদরের ঘাটতি পড়ে। স্বাস্থ্য সেবার শীর্ষে বসা আরেকজন ব্যক্তি হলেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। নিরাপত্তাহীন চিকিৎসকদের অভিভাবকত্বের দায়িত্ব নিয়ে তিনি মন্ত্রীর নিকট হতে নিরাপত্তার কোন সিদ্ধান্ত আজ অবধি আদায় করতে সক্ষম হন নি।

আমরা গভীরভাবে অবলোকন করেছি, বরিশালের আগৈলঝারা উপজেলার ইউএনও- এর জামিন বাতিল হওয়া পরবর্তী রাষ্ট্র ও প্রস্বানের প্রতিক্রিয়া। প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গির এ বৈষম্যের বিচার কোথায় পাওয়া যাবে !সকল লাঞ্ছনা গঞ্জনা সহ্য করে কেবল চিকিৎসকদেরই কর্মস্থলে থাকতে হবে । এ অন্যায় অবিচার কতদিন চলবে?

এতসব দায়িত্বহীনতার মধ্য থেকে চিকিৎসকদের কর্মস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার বিষয়টি অপেক্ষায় আছে - ‘একটি বড় ধরণের আন্দোলনের মুখোমুখি হওয়ার জন্য’। চিকিৎসকদের সে পথে হাঁটা ছাড়া আর কোন পথ খোলা নাই। মন্ত্রী, মহাপরিচালকদের আশ্বাস বিশ্বাস সম্পূর্ণ অকার্যকর ।


_________________________________

ডা. বাহারুল আলম। লোকসেবী চিকিৎসক ও প্রখ্যাত পেশাজীবী নেতা।

আপনার মতামত দিন:


ক্লিনিক-হাসপাতাল এর জনপ্রিয়