Ameen Qudir

Published:
2016-12-19 14:42:07 BdST

৪০০০০ এর পরেও চান্স পায়, এমন মেডিকেল কলেজ থাকার মানে নেই


 

আনোয়ার হোসেন জুয়েল
__________________________


বাংলাদেশে ৭০ টি মেডিক্যাল কলেজ থাকার তো কোন মানে নেই যেখানে ভর্তি যুদ্ধে ৪০০০০ এর পরের লোকও চান্স পায়! লেখাপড়ার মানদন্ড একমাত্র মেধা হওয়া বাঞ্ছনীয় আর অমেধাবী মেধাবীর জায়গা নিলে সর্বক্ষেত্রেই সর্বনাশ।


প্রাইভেট মেডিক্যালে পড়ে অনেকে অবশ্যই ভাল কিন্তু যোগ্যতাহীন বেশির ভাগের যায়গাও ওখানে হচ্ছে। ডাক্তারি পেশাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এখানে মেধা, ত্যাগ, আনুগত্য, সহিষ্ণুতা, উৎকর্ষসাধনের সক্ষমতা থাকা খুবই জরুরী। বাবার টাকা আছে বলেই যে কোন পেশা বা শিক্ষায় সম্পৃক্ত হওয়া বোকামি। টাকা এবং শখের সাথে প্রবল সংকল্প আর শ্রম, অনুশীলন থাকলে সেটি অবশ্যই গ্রহণযোগ্য কিন্তু একটি পেশাকে টার্গেট করে বিদ্যাপীঠ খুলে সেটিকে সনদ প্রিন্ট হাউজ বানিয়ে দেবার মানে হয় না।


দেশে ২৬ বছরে শ'খানেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে কিন্ত সেগুলোর অর্ধেকের মানই প্রশ্নবিদ্ধ কিন্তু মাত্র ৬/৭ বছরে এমন কি হলো যে ৭০ এর উপরে মেডিক্যাল কলেজ!!! এটি প্রকৃত প্রফেশনাল তৈরির চেয়ে যে ব্যবসা কেন্দ্রিকতায় বেশি নিমগ্ন সেটি সহজেই বোঝা যায়। এবং অমেধাবীরা এক সময় মেধাবিদের প্রাপ্যটুকু ছিনিয়ে নেয়।

আমি এমন অনেক দেখেছি। কোন কোন অমেধাবী ছাত্রের টাকা, ভাল ব্যাকাপ, রাজনৈতিক বাহুবল থাকলেও কেবল একটি ডিগ্রী সনদ না পাওয়াতে নিজের অবৈধ টার্গেটে যেতে পারতো না আগে। নেতা, ব্যাকআপ আর টাকার ব্যাগ নিয়ে গেলে শুনে আসতো বাবা আগে অমুক পাশের একটি সনদ নিয়ে এসো। সনদ আনলে তোমাকে আমি ঢুকিয়েই ছাড়ব। ব্যাস সনদেরর নীলক্ষেত খুলে গেল সারা দেশে। এবার সনদ নিয়েই বাগিয়ে নিচ্ছে পেশি ও অর্থশক্তিতে চাকুরি আর প্রকৃত পড়ুয়া মেধাবীটির জলজলে সনদ থাকার পরেও পিছিয়ে পড়ছে সেই টাকার সনদে।


এগুলো অবিলম্বে বন্ধ না হলে দেশের পেশাজীবীদের থেকে বিশেষজ্ঞ সার্ভিস পাওয়া যাবে না। একটি এ্যানেস্থেসিয়া অথবা সামান্য ট্রান্সফরমার বদলাতে ভারত চীন থেকে আনতে হবে চিকিৎসা ও প্রকৌশল সংক্রান্ত লোকবল আর যে ছেলেটি আয়ত্ত করেছে সব কিছু, হাতে কলমে মেধাকে জ্বালিয়েছে মশালের মতো সে চাকুরীহীন হয়ে হারিয়ে গেছে কৃষ্ণ গহবরে।


আমি একজন পদার্থবিদ্যানুরাগীকে চিনি যিনি জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানে উচ্চ শিক্ষা নিচ্ছেন। তিনি বলেন " আমি যদি পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক না হতে পারতাম তবে আমি কিছুই হতাম না এ পৃথিবীতে। আমাকে যদি অন্য আর কিছু হতে হতো তবে আমি আপচয়ের খাতে চলে যেতাম।" কপাল ভাল তার যে সে শিক্ষক হতে পেরেছে, বাংলাদেশের মেয়ে জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞান পড়ছে। এটি কিছুটা এ্যাডভেঞ্চার মনে হয় কিন্তু এমন মেধাবীদের সুযোগ হাজারে হাজারে নষ্ট হয়েছে " ভাস্তে একখান সনদ আনো বাকি আমি দেখছি" পদ্ধতির আড়ালে।
____________________________

 

লেখক আনোয়ার হোসেন জুয়েল । সুলেখক । সুচিন্তক ও মানবসেবী।

আপনার মতামত দিন:


ক্যাম্পাস এর জনপ্রিয়