Ameen Qudir

Published:
2018-04-19 21:39:39 BdST

বর্নাঢ্য উৎসবে এনআইএমএইচ দিবস উদযাপন : এক সোনালী ইতিহাসের কথা



মিলনমেলায় সাবেক ও বর্তমান পরিচালক ও অতিথিবৃন্দ



সুশান্ত সাহা
____________________________


বর্নাঢ্য উৎসবে এনআইএমএইচ দিবস উদযাপন হল ১৮ এপ্রিল। এদিনটি ছিল জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এন্ড হাসপাতাল (এনআইএমএইচ ) প্রতিষ্ঠার শুভদিন।
২০০১ সালের এ দিনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানসিক রোগীদের আরোগ্যালয় হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানের নয়াভবন প্রতিষ্ঠা ও শুভ উদ্বোধন করেন।
কয়েক যুগ ধরে এই মনোরোগ আরোগ্যালয় লাখো রোগীকে সেবা দিয়ে এসেছে। দেশের রোগীসেবা সেক্টরে একটি মহান প্রতিষ্ঠান হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে।
১৮ এপ্রিল সে উপলক্ষে ছিল মিলনমেলা। এসময় প্রতিষ্ঠানের সাবেক পরিচালক-অধ্যাপকবৃন্দসহ বর্তমান ও সাবেক অধ্যাপক শিক্ষক মেডিকেল অফিসার ও অন্য কর্মকর্তাগন আনন্দমুখর পরিবেশে নানা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
দেশের শীর্ষ সকল মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এদিন মিলন মেলায় উপস্থিত ছিলেন।

২০০১ সালে শুরু শেরে বাংলা নগরের এই স্থাপনার; যা প্রায় ২ একর জমিতে অবস্থিত। ভবনের সংখ্যা ৩টি। হাসপাতালটিতেঅধ্যাপক শিক্ষক চিকিৎসক রয়েছেন আধাশতের বেশী ।

বর্নাঢ্য উদ্বোধন দিবসের

 


আরও পেছনের সোনালী ইতিহাস ----------------
অধ্যাপক হেদায়েতুল ইসলাম-আনোয়ারা সৈয়দ হক হয়ে ফারুক অালম-------------------
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট একজন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জানান, ১৯৮১ সালে তৈরি হয় অরগানাইজেশন অব ট্রেনিং মেন্টাল হেলথ (ওটিএমএইচ)। তখনো এই হাসপাতাল সেভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের একটি অংশ নিয়ে নিজস্ব কার্যক্রম পরিচালনা করত অরগানাইজেশন অব ট্রেনিং মেন্টাল হেলথ। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের জায়গায় সরকারি অনুমতি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কাজ চলত।

১৯৮১ সালের শেষের দিকে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (মিটফোর্ড হাসপাতালে) স্থানান্তরিত হয় এটি। ১৯৮৮ সালে মিটফোর্ড হাসপাতালে থাকার সময় একে ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড রিসার্চ (আইএমএইচএআর) হিসেবে নামকরণ করা হয়।

১৯৯০ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রতিষ্ঠানটি স্থানান্তরিত করা হয়। তবে বহির্বিভাগ ও আন্তবিভাগের সুবিধা তখন ছিল না। সেই সময় পরিচালক ছিলেন অধ্যাপক হেদায়েতুল ইসলাম। তখন হাসপাতালটিকে বড় করে করার চিন্তা করা হয়। ১৯৯২ সালে হেদায়েতুল স্যার অবসর গ্রহণ করেন। তখন অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা বেগম এর হাল ধরেন। তাঁর কঠিন পরিশ্রমে বর্তমানের শেরে বাংলানগরের জায়গাটি বরাদ্দ নেওয়া হয়। ১৯৯৭ সালে আনোয়ারা বেগম অবসর নেন।

এরপর ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠানটি অধিকতর উন্নত হয়ে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করেন। সেই সময় পরিচালক হন অধ্যাপক নাজমুল আহসান। ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত এটা ঢাকা মেডিকেলেই ছিল। এরপর ২০০০ সালে সরকার নির্ধারিত নিজস্ব প্রায় ২ একর জমিতে ভবন তৈরি হলো।

নয়াভবনের যাত্রা হল শুরু

 

 

নতুন জায়গায় হাসপাতালটি প্রথমে কেবল আউটডোর হিসেবে চালু হয়। এরপর ২০০১ সালে সব কর্মকর্তা নিয়োগের পর আউটডোর এবং ইনডোর এবং জরুরি বিভাগ চালু হয়।

বর্তমানে সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি চলে। এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিছু ফান্ড দেয়।

চিকিৎসা সেবার বিস্তারিত তথ্য সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফারুক আলমের সৌজন্যে জানা যায়,

আন্তঃবিভাগ রয়েছে----

এডাল্ট সাইকিয়াট্রি বিভাগঃ ইউনিট-১, ইউনিট-২

চাইল্ড, এ্যাডোলেসেন্ট এন্ড ফ্যামিলি সাইকিয়াট্রি বিভাগঃ ইউনিট-১, ইউনিট-২

জেরিয়াট্রিক এন্ড অর্গানিক সাইকিয়াট্রি বিভাগঃ ইউনিট-১, ইউনিট-২

কমিউনিটি এন্ড সোসাল সাইকিয়াট্রি বিভাগঃ ইউনিট-১, ইউনিট-২

ফরেনসিক সাইকিয়াট্রি বিভাগঃ ইউনিট-১, ইউনিট-২

ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি, সাইকোথেরাপি এবং সাইকিয়াট্রিক সোসাল ওয়ার্ক বিভাগঃ ইউনিট-১, ইউনিট-২

এডিকশন সাইকিয়াট্রি বিভাগঃ ইউনিট-১, ইউনিট-২

বহিঃর্বিভাগ রয়েছে----------

সকাল ৮টা হতে দুপুর ২.৩০টা পর্যন্ত (সরকারী ছুটির দিন ব্যতিত)


সহযোগী বিভাগঃ

রেডিওলজি এন্ড ইমেজিং বিভাগ

ল্যাবরেটরী মেডিসিন বিভাগ

এ্যানেসথেসিওলজি বিভাগ

সমাজ কল্যাণ বিভাগ

মিলনমেলায় অংশগ্রহনকারীদের একাংশ

 

বিশেষ ক্লিনিক সেবাঃ (ছুটির দিন ব্যতিত)

পেইন ক্লিনিক (শনিবার)

সেক্স ক্লিনিক (রবিবার)

চাইল্ড গাইডেন্স ক্লিনিক (সোমবার ও বুধবার)

অটিজম ক্লিনিক (সোমবার)

জেরিয়াট্রিক ক্লিনিক (মঙ্গলবার)

মাদকাসক্তি ক্লিনিক (বুধবার)

শুচিবাই বা ওসিডি ক্লিনিক (বৃহস্পতিবার)

ট্রমা কাউন্সেলিং সার্ভিসেস (বৃহস্পতিবার)

নিউরোটিক গ্রুপ থেরাপি (রবিবার)

সাইকোএডুকেশন গ্রুপ থেরাপি (সোমবার)

প্যারেন্টিং গ্রুপ থেরাপি (বুধবার)

সূচীবাঈ বা ওসিডি গ্রুপ থেরাপি (বৃহস্পতিবার)

 

ডে-হসপিটালঃ

সকাল ৮.৩০টা হতে ২.০০টা পর্যন্ত (ছুটির দিন ব্যতিত)

 

অকুপেশনাল থেরাপি বা পুনর্বাসন সেন্টারঃ

স্নাতকোত্তর শিক্ষা সুযোগ

এম.ডি রেসিডেন্সি কোর্স-ইন-সাইকিয়াট্রি

এম.ডি কোর্স-ইন-সাইকিয়াট্রি

কোর্স-ইন-সাইকিয়াট্রি নার্সিং (প্রক্রিয়াধীন)

প্রশিক্ষণ সুযোগ

এফসিপিএস সাইকিয়াট্রি এর প্রশিক্ষণ

এম.ডি. সাইকিয়াট্রি এর প্রশিক্ষণ

এমসিপিএস সাইকিয়াট্রি এর প্রশিক্ষণ

এফ.ফিল. সাইকিয়াট্রি এর প্রশিক্ষণ

দেশী-বিদেশী চিকিৎসক, সাইকোলজিস্ট, নার্সেস ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ক্যারিয়ার প্রশিক্ষণ

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের সাইকোলজি, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি, সোসাল ওয়েলফেয়ার, সাইকিয়াট্রিক সোসাল ওয়ার্ক, অকুপেশনাল থেরাপিসহ অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ

প্রাইমারী হেলথ কেয়ার ফিজিশিয়ান ও জেনারেল ফিজিশিয়ান, হেলথ ওয়ার্কার, ইমাম, শিক্ষক, এন.জি.ও ওয়ার্কারসহ মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের প্রশিক্ষণ

 

গবেষণা সুযোগ

প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে মানসিক রোগ ও মাদকাসক্তিসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নিয়মিত গবেষণা

স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের গবেষণা

কর্মকর্তা / কর্মচারীদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে গবেষণা

 

প্রকাশনা, ম্যানুয়াল ও গাইডবুক

জার্নাল অব ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ

দূর্যোগ পরবর্তি মনোসামাজিক পরিচর্যা-নির্দেশিকা

ম্যানুয়াল অন মেন্টাল হেলথ ফর প্রাইমারী হেলথ কেয়ার ফিজিসিয়ানস

ম্যানুয়াল অন মেন্টাল হেলথ ফর নার্সেস

ম্যানুয়াল অন মেন্টাল হেলথ ফর হেলথ ওয়ার্কারস

ইন্ট্রিগ্রেশন অব মেন্টাল হেলথ উইথ প্রাইমারী হেলথ কয়ার

ফ্যামিলী গাইড বুক

শিশু বিকাশ ও চিকিৎসা সহায়িকা

মানসিক ও মাদকাসক্তিসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিভিন্ন প্রকাশনা।

আপনার মতামত দিন:


ক্যাম্পাস এর জনপ্রিয়