Ameen Qudir

Published:
2017-08-10 19:41:59 BdST

যশোর জেনারেল হাসপাতাল:বাঁশের ঠেকনা দেওয়া ভবনে রোগীরা


 

 


যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বাঁশের ঠেকনা দিয়ে রাখা দোতলা ভবনটি ব্যবহার না করার জন্য চিঠি দিয়েছে গণপূর্ত বিভাগ। গত মঙ্গলবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি এসে পৌঁছালেও রোগীরা এখনো ঝুঁকিপূর্ণ ওই ভবনেই আছেন।

১৩৭ জন রোগী এখনো ওই ভবনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, রাতে ভয়ে গা ছমছম করে। নিচতলার ভাঙা অংশের পাশেই রয়েছে শৌচাগার। শৌচাগারে যেতে ভয় লাগে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে সবসময় পাঁচ শতাধিক রোগী ভর্তি থাকেন। ওয়ার্ড রয়েছে ১১টি। এর মধ্যে ৩টি ওয়ার্ড পড়েছে ঝুঁকিপূর্ণ ওই ভবনে, যেখানে কক্ষ রয়েছে ৪টি। নিচতলার পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডের পূর্ব পাশের কক্ষে থাকা ১৬ জন রোগীকে মঙ্গলবার রাতেই সরিয়ে পশ্চিম পাশের কক্ষে রাখা হয়েছে। নিচতলা ও দোতলার নারীদের মেডিসিন ও গাইনি ওয়ার্ডে এখনো ১৩৭ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।


বুধবার বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, দোতলা ভবনটির নিচতলার ছাদ ধসে পড়ছে। ১০টি বাঁশ দিয়ে ওই ছাদের জরাজীর্ণ অংশ ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে। বাঁশের গায়ে সতর্কতামূলক বার্তা লেখা একটি কাগজ ঝুলতে দেখা গেল। তাতে লেখা, ‘সতর্ক সংকেত: রোগীসহ রোগীর লোকজন বাথরুমে যাবেন বাম পাশ দিয়ে। কারণ ডান পাশ ঝুঁকিপূর্ণ।’

নিচতলায় ভর্তি রোগী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘রাতে পূর্ব পাশের কক্ষ থেকে সরিয়ে আমাদের পশ্চিম পাশের কক্ষে এনে রাখা হয়েছে। কিন্তু বাথরুম তো আগের জায়গাতেই আছে। সরিয়ে এনে কী লাভ হলো? তা ছাড়া ভবন তো সেই একই। ভেঙে পড়লে গোটা ভবনই ভেঙে পড়বে।’

ভবনটি ব্যবহার না করার জন্য গত মঙ্গলবার যশোর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ফ্রান্সিস আশীষ ডি কস্টা স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ১৯৪০ সালে ভবনের নিচতলা ও ১৯৭০ সালে ভবনের দোতলা নির্মাণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েক দফায় ভবনটির সংস্কার করা হয়েছে। ভবনটি পরিদর্শন করে দেখা গেছে, দোতলায় প্রচুর রোগী ও তাঁদের স্বজন ঝুঁকিপূর্ণ বারান্দা ব্যবহার করছেন, যা যেকোনো সময় বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে। তা ছাড়া ভবনের অভ্যন্তরীণ বিম ও ছাদের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। বর্তমান অবস্থায় ভবনটি প্রয়োজনীয় মেরামতকাজের মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগী করা যায় কি না, তা জানার জন্য নকশা বিশেষজ্ঞ বিভাগে চিঠি পাঠানো হয়েছে। জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে ভবনটি ব্যবহার না করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

গণপূর্তের সতর্ককীরণ চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ কে এম কামরুল ইসলাম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নিচতলার পূর্ব পাশের অংশ থেকে রোগী সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দোতলার ওই অংশের মেডিসিন নারী ওয়ার্ড থেকেও রোগী সরিয়ে নেওয়া হবে। তবে ওই ভবনের পশ্চিম পাশের অংশটি আপাতত ব্যবহার করা হচ্ছে। ঢাকা থেকে নকশা বিভাগের প্রকৌশলীরা শিগগির পরিদর্শনে আসবেন। তাঁদের আসার আগ পর্যন্ত রোগীদের ওই ভবনেই রাখা হচ্ছে। রোগীদের সরিয়ে নেওয়ার মতো জায়গা হাসপাতালে এ মুহূর্তে নেই বলে জানান কামরুল ইসলাম।


দৈনিক প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর।

আপনার মতামত দিন:


ক্যাম্পাস এর জনপ্রিয়