Ameen Qudir

Published:
2017-05-30 19:16:22 BdST

স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে ৭ দফা


 


ডা:মেহেদী হাসান বিপ্লব
____________________________

স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে সরকারের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রয়োজন।

 

এ ব্যাপারে কিছু প্রস্তাবনা দেয়া হলো:

১।কর্মস্থলে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিৎ করার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যবস্থা গ্রহনে রাষ্ট্রকে বাধ্য করতে হবে।

এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পুলিশ বা আনসার নিয়োগ দেয়া যেতে পারে।

২।চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে শৃংখলা বজায় রাখার সার্থে চিকিৎসা সেবার সাথে জড়িত হাসপাতালে সকল কর্মচারী(নার্স/স্যাকমো/ওয়ার্ডবয়/আয়া)ঐ হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকের নিয়ন্ত্রনাধীন থাকতে হবে।অন্যথায় চিকিৎসা ব্যবস্থার চেইন অব কমান্ড বিঘ্নিত হয় এবং অরাজকতা চলতেই থাকবে, কারণ চিকিৎসকের অনিয়ন্ত্রিত কোন বিষয়ে তার পক্ষে জবাবদিহি করা অত্যন্ত কঠিন।

৩।জনসংখ্যা আধিক্যের কারণে স্বল্প সংখ্যক চিকিৎসক থাকা স্বত্বেও চিকিৎসক-রোগী অনুপাত ও সকল চিকিৎসা উপাদানের অসম বন্টনে শৃঙ্খলা আনার ক্ষেত্রে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে:

ক)জিপি কনসেপ্ট: ডাটাবেস তৈরি করে সকল রোগীকে তার জন্য জিপি চিকিৎসক নির্দিষ্ট করে দিতে হবে।তাদের রেফারেল ছাড়া যে কেউ চাইলেই বিশেষজ্ঞ দেখাতে পারবেন না।

খ)রেফারেল সিস্টেম: কোন রোগী তার জন্য নির্দিষ্ট জিপি ডাক্তারের রেফারেল ছাড়া কোন বিশেষজ্ঞ দেখাতে পারবেন না(একজন রোগীর জন্য সর্বোচ্চ ৩ জন জিপি ডাক্তার নির্ধারিত থাকবে)।

জিপি ডাক্তার সর্বোচ্চ জুনিয়র কনসালট্যান্ট/সহকারী অধ্যাপক পর্যায়ে রোগী রেফার করতে পারবেন।

একজন অধ্যাপক/সহযোগী অধ্যাপক সর্বোচ্চ ১৫-২০ টা রোগী দেখতে পারবেন এবং স্পেশালিস্ট রেফারেল ছাড়া তিনি কোন রোগী দেখতে পারবেন না।

এ ক্ষেত্রে রোগীদের অহেতুক রোগীর ভাষায় বড় ডাক্তার খোজার প্রবণতা বা প্রয়োজনীয়তা থাকবেনা এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগন রোগীর চাপ কম হওয়ায় অধিক মনোযোগ সহকারে চিকিৎসা দিতে পারবেন যার ফলে রোগীর সন্তুষ্টি অর্জন অধিক সহজ হবে।অধিকাংশ সহিংশতার ঘটনাই রোগীর পার্টির অসন্তুষ্টিকে কেন্দ্র করে ঘটছে, তাই জিপি ও রেফারেল সিস্টেম এ সমস্যা সমাধানে অত্যন্ত কার্যকরী হবে বলে মনে করছি।

৪।জিপি ও রেফারেল কার্যকরে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার:
ডাটাবেস তৈরি করে একটি সার্বজনীন সফটওয়ারের মাধ্যমে পুরো জিপি সিস্টেম ও রেফারেল সিস্টেম নিয়ন্ত্রন করা গেলে সুশৃঙখল স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিৎ করা সম্ভব।

৫।বেসরকারী স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে প্রতিটি সেবার জন্য হাসপাতাল/ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সেবার মূল্য সরকার কতৃক নির্ধারণ করে দিতে হবে।

৬।জনবল পদায়ন ও কর্মসংস্থান:

হাসপাতালে রোগী চিকিৎসক অনুপাত ও প্রয়োজনীয় জনবল অপ্রতুল।অনেক চিকিৎসক পাশ করার পর কর্মহীন হয়ে বসে থাকছে।এ বিপুল জনবল কাজে লাগাতে হবে।ডাক্তার ও নার্স নিয়োগ বাড়াতে হবে।

সাময়িক সমস্যা মোকাবেলায় এডহক বা কনট্রাক্ট বেসিসে নিয়োগ দিয়ে সমস্যা দ্রুত সমাধান করা যায় কিনা ভেবে দেখা যেতে পারে।

জিপি ও রেফারেল সিস্টেম কার্যকর করা গেলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেক চিকিৎসক জিপি করতে পারবে তাতে জনগণও হাতের কাছে তার জন্য নির্ধারিত চিকিৎসকের তত্বাবধানে থাকবেন তাতে সেবা গ্রহনে ধারাবাহিকতা বজায় থাকে,ভুল হবার সুযোগ কম থাকে।

এছাড়া এ ব্যবস্থায় প্রচুর চিকিৎসক চাকরী না করেও সৎভাবে স্বচ্ছল জীবনজাপন করতে পারবেন।

৭।গনমাধ্যমে চিকিৎসকদের বা চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
_______________________________

ডা:মেহেদী হাসান বিপ্লব,
শেবাচিম ৩৫তম
সদস্য,কেন্দ্রীয় কাউন্সিল,বিএমএ

আপনার মতামত দিন:


ক্যাম্পাস এর জনপ্রিয়