Ameen Qudir

Published:
2017-03-12 02:37:05 BdST

ডা.ইকবাল আর্সলানের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ডা. বাহারুলের বক্তব্য


 



 

ডা. বাহারুল আলম
__________________________


কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে - নীরব থেকে সরব হওয়া ?
.............................................
শুরুতে নীরব থেকে মাঝপথে সরব হয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসক আন্দোলনে যে মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে- এ ভূমিকা চিকিৎসক আন্দোলনে কলঙ্কিত হয়ে থাকবে
...................................................
যে নাটক মঞ্চস্থ হবে না , উহাতে মহড়া দিয়ে কি লাভ ?

নীরবতা সুবিধাজনক অবস্থান । অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হয় যখন নীরবতা ভঙ্গ হয়। নীরব থাকার সংস্কৃতি নিয়ে যে নেতৃত্ব কেবল আশীর্বাদ-পুষ্ট হয়ে পদায়িত হয়, হঠাৎ করে সরব হওয়া চিকিৎসক আন্দোলনে তার অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। দীর্ঘদিনের চিকিৎসক আন্দোলন রাষ্ট্র ও তার নির্বাহী বিভাগের স্বাস্থ্যব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে। নেতার নীরবতা সেই প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির সমর্থক বলে আন্দোলনরত চিকিৎসকরা বিশ্বাস করে আসছে। বগুড়ার ইন্টার্ন চিকিৎসকদের আন্দোলনে যাওয়ার জন্য কেউ প্ররোচিত করে নি। কোমলমতি চিকিৎসকদের কাছ থেকে ফায়দা লোটার জন্য এ আন্দোলনে নবীন-প্রবীণ কোন চিকিৎসক বা তাদের সংগঠন সমর্থন দেয় নি।

 

তাহলে, কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে নীরব থেকে সরব হওয়া ?

চিকিৎসক সংগঠনের সুনির্দিষ্ট নেতৃত্বে অবস্থান করে , সংক্ষুব্ধ চিকিৎসকদের নেতৃত্ব পাশ কাটিয়ে, নীরব থাকার দু’একটি উদাহরণ বিশ্লেষণ করলে অনুধাবন করা যাবে তার দায়বদ্ধতা, প্রতিবাদ ও ঘটনাস্থলে ছুটে যাওয়া-

১) বগুড়ায় ইন্টার্ন চিকিৎসক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশের সকল চিকিৎসক যখন এ আন্দোলনের সমর্থনে এগিয়ে আসে ঠিক তখনই ‘কোমলমতি ইন্টার্ন চিকিৎসক’ ও ‘আন্দোলনে ফায়দা লোটার’ ধোয়া তুলে ছাত্রলীগকে সফর সঙ্গী করে চাপের মুখে ক্ষমা চাওয়া ও মন্ত্রীর ক্ষমা করে দেওয়া এক নাটক সৃষ্টি করা হয়। যা চিকিৎসক আন্দোলনে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।

গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া হাসপাতালে ডাঃ পবিত্র কুণ্ডু মাদ্রাসার ছাত্রদের চাপাতির আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হওয়া ও সাতক্ষীরার নারী চিকিৎসক ডাঃ শম্পা রানী কর্তব্যরত অবস্থায় লাঞ্ছনার ঘটনায় প্রতিবাদ করতে দেখা যায় নি। খুলনায় গভীর রাত্রে ডাঃ বাপ্পা অপহরণ হওয়ার পর, চিকিৎসক আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন কেন্দ্রে বসে দায়িত্ব নিয়ে এ আন্দোলনকে স্তিমিত ও নির্বাসনে পাঠানো হয় ।


২) ৮ম পে স্কেলের আন্দোলনের সময় রাষ্ট্রকর্তৃক সৃষ্ট চিকিৎসক পেশাজীবীদের প্রতি বৈষম্য ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সমগ্র বাংলাদেশে “কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয়” সহ ৬ দফার পেশাজীবী আন্দোলন শুরু হয়েছিল। সে আন্দোলনেও নেতৃত্ব না দিয়ে নীরব থাকে।

৩) অনেক লাঞ্ছনা, গঞ্জনার পর চিকিৎসকদের কর্মস্থল নিরাপদ রাখতে রাষ্ট্রের সুমতি এবং ‘স্বাস্থ্য সেবা আইন ২০১৬’ প্রণয়নে উদ্যোগী হলে এ নেতার সমর্থনে ও নীরবতায় আইনের খসড়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। রাষ্ট্রের এ আইন প্রণয়নের উদ্যোগে যখন চিকিৎসক সমাজ ফৌজদারি আইনের ঝুঁকিতে ভীত ও আতংকিত তখনও এ নেতা নীরব।

নীরব ছিল ভালই ছিল, তার এ মহাত্ম নিয়ে চিকিৎসকদের কোন মাথা ব্যথা ছিল না। সংকট সৃষ্টি হল যখন সরব হয়ে চলমান আন্দোলনের উদ্যোক্তা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের একাংশ ও ছাত্রলীগকে সাথে নিয়ে মন্ত্রীর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা দৃশ্যের অবতারণা করা হল।
অথচ ইন্টার্ন চিকিৎসক নির্যাতনের প্রতিকার দূরে থাক , নারী চিকিৎসকের উপর যৌন হয়রানির জন্য দায়ী ব্যক্তিকে বিচার বা শাস্তির আওতায় আনার কোন উদ্যোগ নেওয়া হয় নি। মন্ত্রীর মুখ থেকে এ সংক্রান্ত কোন কথাও উচ্চারিত হয় নি।

এ নেতার বিবেচনায় চিকিৎসক আন্দোলন যদি অপরাধ হয়ে থাকে, ক্ষমা করে দেওয়ার আগে মন্ত্রীর মুখ দিয়ে চিকিৎসকদের কর্মস্থল নিরাপদ করা ও ‘স্বাস্থ্য সেবা আইন ২০১৬’ - এ কালো আইন বাতিল করার অঙ্গীকার করাতে পারলে, তার দায়বদ্ধতাসহ ঘোষিত অন্যান্য কৃতিত্বের সঠিকতা প্রমাণ হত।
#ডাঃ ইকবাল আর্সলান এর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে।
____________________________
ডা. বাহারুল আলম । লোকসেবী প্রখ্যাত পেশাজীবী নেতা। সুলেখক। সুবক্তা।

 

 

 

 

এখানে ডা. ইকবাল আর্সলান এর বক্তব্য হুবহু পূণ: প্রকাশ করা হল।

Iqbal Arslan
March 7 at 4:22pm ·

বেশ কিছু দিন আগে আমি কোন একটি বিষয় নিয়ে স্টাটাস দেবার পর কিছু সহকর্মী চিকিৎসক সেটা নিয়ে দু'শিবিরে বিভক্ত হয়ে স্টাটাস যুদ্ধ শুরু করায় ফেসবুকে লেখা থেকে বিরত ছিলাম ।

আমি আজ লিখছি নিজেকে দায় মুক্ত করার জন্য নয়, সত্যটা জানানোর জন্য ।

আমি ফেসবুকে সচারচর যাই না সে জন্য এবং শুক্রবার ব্যাক্তিগত কারনে ফোন বন্ধ রাখায় বগুড়া'র বিষয়ের গভীরতা জানতে পারিনি, আমার সমালোচকরা বলতেই পারেন এটা আমার ব্যর্থতা ।

একটি গোষ্ঠী যারা এসব কোমলমতি শিক্ষানবিস চিকিৎসকদের ব্যবহার করে ফায়দা লোটার, নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার বা স্বাচিপ, বিএমএ এর ভাব মুর্তি ক্ষুণ্ণ করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন পরিস্থিতি শান্ত করার পরিবর্তে উস্কে দেয়ায় ব্যস্ত ছিলেন তাঁরা এবং তাঁদের অনুসঙ্গীরা যে সমস্ত অরুচিকর, অসত্য, বিভ্রান্তি মুলক, অশ্রাব্য পোস্ট প্রদান করছেন তাতে না লিখে আর পারলাম না ।

শুক্রবার রাতে বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেছি এবং জানার পর এ বিষয়টা সমাধানের ও মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়কে শিক্ষানবিস চিকিৎসকদের উপর আরোপিত শাস্তি মুলক সিদ্ধান্ত বাতিল করাতে চেষ্টা করেছি মাত্র। এখানে বলে রাখি, অতীতে যেখানেই কোন ঘটনা ঘটুক না কেন কারো ডাকের অপেক্ষায় বসে থাকিনি, নিজে থেকেই এগিয়ে গেছি সমাধানের জন্য ।

সিদ্ধান্ত নেই চট্টগ্রামে এ বিষয়ে মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় এর সঙ্গে কথা বলবো । চট্টগ্রামের মাননীয় মেয়র সহ আমরা সবাই বিষয়টা পুনঃবিবেচনার অনুরোধ জানাই । ঢাকlতে ফিরে আসার পর সে রাতেই টেলিফোনে আবlরো মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয় ।

পরদিন রবিবার বিকালে বগুড়া মেডিকেল কলেজের প্রথম থেকে শেষ ব্যাচ এর সকল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বৃন্দ আমার সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেন এবং আমার হস্তক্ষেপ কামনা করেন, আমি তাঁদের কথা দেই সেই রাত্রের মধ্যেই আমার পক্ষে যা কিছু করা সম্ভব আমি করবো । আমি রাতেই মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের বাসায় যাই, দীর্ঘ আলোচনার পর তিনি শাস্তি প্রত্যাহার করতে রাজি হন এবং নিজেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমাকে জানান । তার পরের টুকু আপনারা সবাই জানেন ।

চট্টগ্রাম বিএমএ এর অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় বিএমএ নেতৃ বৃন্দ মন্ত্রীকে বর্জন করেছেন না অন্য কোন কারনে যান নাই সেটা আর কেউ না জানুক চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ জানেন ।

আর বিরাজিত সমস্যা সমাধানে কারো কারো উস্মার কারন আপনাদের মত মেধাবীরা সহজেই অনুমান করতে পারেন ।

আপনারা আনেকেই আমার যা খুশি তাই সমালোচনা করতেই পারেন তা আপনাদের গণতান্ত্রিক অধিকার । আমি আমার বিবেচনায় আমার নৈতিকতায় আমার বিশ্বাসে কাজ করি, যা আমি সব সময়ে করেছি, আপনারা ১/১১ এর আগে-পরেও দেখেছেন। আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে দায়বদ্ধ, আমার সংগঠনের কাছে দায়বদ্ধ, সমগ্র চিকিৎসক সমাজের কাছে দায়বদ্ধ, অন্য কারো কাছে নয় ।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ।

আপনার মতামত দিন:


বিএসএমএমইউ এর জনপ্রিয়