Ameen Qudir

Published:
2018-09-13 17:37:05 BdST

বিশ্বের সেরা একটি ‘সুপার স্পেশালাইজড’ হাসপাতাল হচ্ছে বিএসএমএমইউতে


 


ডা.সুচিত্রা সাহা বীনা
__________________________

শুধু বাংলাদেশেরই সেরা নয়; শুধু উপমহাদেশ বা এশিয়ারই সেরার কাতারে নয়;বিশ্বের সেরা একটি ‘সুপার স্পেশালাইজড’ হাসপাতাল হচ্ছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় । আজ ১৩ সেপ্টম্বর ২০১৮ সেই ঐতিহাসিকক্ষণ। এদিন প্রধান মন্ত্রী শেখহাসিনা বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার একটি গৌরবের হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে যাচ্ছেন। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য তমসেরা মেডিকেল চিকিৎসালয় ও শিক্ষাগার বঙ্গবন্ধু শেুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় -
বিএসএমএমইউতে এই বিশাল হাসপাতাল কর্মযজ্ঞশুরু হওয়ার পালা। সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন।
দক্ষিণ কোরিয়ার সহযোগিতায় স্থাপিত হতে যাচ্ছে অত্যাধুনিক এই বিশেষায়িত (সুপার স্পেশালাইজড) হাসপাতাল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) এই হাসপাতালের ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এটির নির্মাণকাজের ভিত্তি স্থাপন করবেন।

বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা.কনক কান্তি বড়ুয়া আশাবাদ জানিয়ে বলেছেন,২০২১ সালেই আশা করি এটি মানবসেবার কাজ শুরু করবে। ১৩তলা এই হাসপাতালের এক ছাদের নিচেই মিলবে সবধরনের স্বাস্থ্য সেবা, যা হবে বাংলাদেশে প্রথম।

মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএসএমএমইউ উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী এই হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অব এক্সলেন্সের আওতায় আরো কয়েকটি নতুন প্রকল্পও উদ্বোধন করবেন।

নতুন হাসপাতালটি সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশে কম খরচে সর্বাধুনিক চিকিৎসাসেবার মডেল হবে এক হাজার শয্যার এই হাসপাতাল।

অত্যাধুনিক এই স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান হবে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালের মতো, যেখানে এক ছাদের নিচে মিলবে সব সেবা। এটা হবে সবুজে ভরা।
জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে বিদেশমুখী রোগীর ঢল ও নানা জটিল রোগের বিশ্বমানের সর্বশেষ চিকিৎসা মিলবে এখানে। বাংলাদেশের চিকিৎসকরা বিশ্বের সঙ্গেপাল্লা দিয়ে দক্ষ। তারা বিশ্বের সকল উন্নত দেশেই সম্মানের সঙ্গে সেবা দিচ্ছেন। এই দক্ষ জনশক্তি এখন থেকে দেশেথেকেই বিশ্বসেরা স্বাস্থ্য সেবা দেবেন। বর্তমান উপাচার্যের কর্মকালেই এই মহান হাসপাতাল কাজ শেষ হবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের হাসপাতাল এটি।

হাসপাতাল প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক জুলফিকার রহমান । তিনি বলেন, মা ও শিশুর সব ধরনের সেবা এখানে একই জায়গায় পাওয়া যাবে।
এখন আমাদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়, এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছোটাছুটি করতে হয়। কিন্তু এখানে সব ধরনের রোগের জন্য আলাদা আলাদা কেন্দ্র থাকবে, ফলে একটি জায়গাতেই সব সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।

তিনি জানান, নতুন এই হাসপাতালে সেন্টার ফর স্পেশালাইজড অটিজম অ্যান্ড ম্যাটারনাল অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, ইমারজেন্সি মেডিকেল কেয়ার সেন্টার, হেপাটোবিলিয়ারি অ্যান্ড গ্যাস্ট্রোএনটারোলজি সেন্টার, কার্ডিও অ্যান্ড সেরিব্রো-ভাসক্যুলার সেন্টার, কিডনি সেন্টার এবং রেসপিরেটরি মেডিসিন সেন্টারসহ আরো কয়েকটি সেন্টার থাকবে।

অধ্যাপক জুলফিকার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী এটিকে ‘গ্রিন হসপিটাল’ হিসেবে গড়ে তুলতে চারপাশ ঘিরে বাগান করা হবে। হাসপাতালের ছাদে বাগানাসহ থাকবে পরিবেশীবান্ধব নানা সুবিধা।
এই প্রকল্পে সহযোগিতা দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া, হাসপাতালের নকশাও তাদের করা।

 

বিএসএমএমইউর উত্তর পাশে ৩ দশমিক ৪ একর জায়গায় এক হাজার ৩৬৬ কোটি টাকায় নির্মিত হবে এই হাসপাতাল। এই নির্মাণব্যয়ের মধ্যে কোরিয়া দিচ্ছে এক হাজার ৪৭ কোটি টাকা দিচ্ছে ঋণ হিসেবে।

মাত্র শূন্য দশমিক শূন্য এক শতাংশ সুদে ৪০ বছরে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে, যার মধ্যে গ্রেস পিরিয়ড থাকবে ১৫ বছর।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী আরো যেসব প্রকল্প উদ্বোধন করবেন সেগুলো হচ্ছে- বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচতলা কনভেনশন সেন্টার এবং ডায়াগনস্টিক ও চিকিৎসকদের ডরমেটরি সুবিধাসহ নির্মিত নতুন ভবন।

১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সাবেক ইনস্টিটিউট অব পোস্টগ্রাজুয়েট মেডিকেল রিসার্চকে (আইপিজিএমআর, পিজি হাসপাতাল নামে পরিচিত) বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নামকরণ করা হয়।

 

বর্তমানে ১৯০০টি শয্যা রয়েছে এই হাসপাতালে, যার ৪৫ শতাংশ দরিদ্র রোগীদের জন্য সংরক্ষিত থাকে বলে জানান উপাচার্য কনক কান্তি। তাছাড়া এই হাসপাতালে রোগীদের কিছু কিছু ওষুধ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়।

এছাড়া যেসব রোগীর ৩০ টাকা মূল্যের টিকেট কেটে সেবা নেওয়ারও সক্ষমতা নেই, তাদের জন্য একটি তহবিল তৈরিতে প্রধানমন্ত্রী দুই দফায় ১৫ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন বলে তিনি জানান।

অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, তহবিলটির আকার বেড়ে এখন ২৬ কোটি টাকা হয়েছে এবং আমরা দরিদ্রদের বিনাখরচে চিকিৎসার পাশাপাশি রোগী প্রতি দশ হাজার টাকা করেও দিচ্ছি। হাসপাতাল থেকে তাদের চিকিৎসায় যেসব ওষুধ ও অন্যান্য জিনিসপত্র দেওয়া সম্ভব হয় না, তারা এই টাকায় সেগুলো বাইরে থেকে কিনে নিতে পারেন।
_____________________________

ডা.সুচিত্রা সাহা বীনা । প্রাক্তন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ।

আপনার মতামত দিন:


বিএসএমএমইউ এর জনপ্রিয়