Ameen Qudir

Published:
2018-02-20 02:38:23 BdST

বিশাল আয়োজনে বিএসএমএমউর সমাবর্তন : ৭ সম্মাননা , ১২১৬ জনের উচ্চতর ডিগ্রি


 

 

ডা. সোনালী সাহা, ডা. সজীব ও ডেস্ক
_______________________________


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় সমাবর্তন হল বর্নাঢ্য আয়োজনে। বিশাল পরিসরে। দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব উন্নয়নের স্বাক্ষর রাখল এই সমাবর্তন। প্রথম বারের মত ১২১৬ জন উচ্চতর ডিগ্রী অর্জনকারী চিকিৎসক সমাবর্তনে অংশ নিয়ে তাঁদের সনদ গ্রহণ করেন।
স্মরণীয় এই অনুষ্ঠানে দেশের প্রথিতযশ ৭ জন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসককে সম্মানসূচক পিএইচডি দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এখন দেশের জনগণের আস্থা ও ভরসাস্থল। তিনি তাঁর ভাষণে চিকিৎসাপেশাকে চিকিৎসা সর্বশ্রেষ্ঠ মহৎ পেশা উল্লেখ করে রোগীরা যাতে হতাশ হয়ে ফিরে না যায় সর্বান্তকরণে সে চেষ্টা করতে চিকিৎসকবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন মানুষ রক্ষার ডাক্তার চাই। সেরকম গুণী ডাক্তার হতে হবে। গ্রামের মানুষকে চিকিৎসাসেবা দেয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে। শীঘ্রই আরো ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হবে।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, এমপি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব নুরুল ইসলাম নাহিদ, এমপি, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন সাবেক আইপিজিএমএন্ডআর (বর্তমানে বিএসএমএমইউ)-এর পরিচালক, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক এ. এইচ. এম তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান। সমাবর্তন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোঃ আলী আসগর মোড়ল, বেসিক সায়েন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান, সার্জারি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়–য়া, মেডিসিন অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ, প্রিভেনটিভ এন্ড সোশ্যাল মেডিসিন অনুষদের ডীন অধ্যাপক সৈয়দ শরীফুল ইসলাম, নার্সিং অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. অসীম রঞ্জন বড়–য়া, ডেন্টাল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. গাজী শামীম হাসান। ধারাভাষ্য প্রদান করেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান।

তৃতীয় সমাবর্তন ৭ জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ও গুণী চিকিৎসককে সম্মানসূচক পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হয়। সম্মানসূচক পিএইচডি ডিগ্রিতে ভূষিত হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নেফ্রোলজি বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মতিউর রহমান, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মাহমুদ হাসান, শিশু বিশেষজ্ঞ ও ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড এন্ড মাদার হেলথ-এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক এম কিউ কে তালুকদার, অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক শামসুদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ডা. এ কে এম নুরুল আনোয়ার, ঢাকা ডেন্টাল কলেজের অর্থোডনটিকস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মোঃ ইমদাদুল হক এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যানেসথেশিওলজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আফজালুন নেছা।

সমাবর্তনে সংক্ষিপ্তভাবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, চিকিৎসা, গবেষণা ও উন্নয়নমূলক কর্মকা- নিয়ে একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শণী করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ এ অনুষ্ঠানে সনদ অর্জনকারীদের মধ্য থেকে ছয়টি অনুষদ থেকে সর্বোচ্চ নম্বরধারী ছয়জনকে স্বর্ণ পদক প্রদান করা হয়। স্বর্ণপদক প্রাপ্তরা হলেন-সার্জারি অনুষদ থেকে ডা. অনিন্দতা দত্ত, মেডিসিন অনুষদ থেকে ডা. হোসনে আরা, বেসিক সায়েন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদ থেকে ডা. এনামুল কবীর, ডেন্টাল অনুষদ থেকে ডা. দাউরিকা প্রসাদ, প্রিভেনটিভ এন্ড সোশ্যাল মেডিসিন অনুষদ থেকে ডা. মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, নার্সিং অনুষদ থেকে মাহমুদা আক্তার। ৬টি অনুষদের ১২ জন কৃতি শিক্ষার্থীকেও মাহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর সনদপত্র প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন-বিএমএ-এর সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রাণ গোপাল দত্ত প্রমুখসহ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মাননীয় মন্ত্রীবর্গের সদস্যবৃন্দ, মাননীয় সংসদ সদস্যগণ, মাননীয় রাষ্ট্রদূত, মহামান্য রাষ্ট্রপতির সফরসঙ্গীবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যবৃন্দ, সাবেক উপাচার্যবৃন্দ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ, একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, সনদ অর্জনকারী শিক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকবৃন্দ, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ-স্বাচিপের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দসহ দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।


শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে নতুন প্রজন্মকে আধুনিক বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে তৈরি করা এবং সে লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ভর্তি পরীক্ষা অত্যন্ত সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। মেধাবী চিকিৎকরা এখান থেকে চিকিৎসা পেশায় উচ্চতর শিক্ষা লাভের সুযোগ পাচ্ছেন।

সমাবর্তন বক্তা স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক এ. এইচ. এম তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী বলেন, যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি কাজ হলো বিভিন্ন বিষয়ে কোর্স চালু করা, মানসম্মত পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করা এবং গবেষণা।

তিনি বলেন, ভালো চিকিৎসক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে অতিরিক্ত গুণ থাকতে হবে। রোগীদের জন্য সহমর্মিতা থাকতে হবে। অনেক সময় রোগীরা অপ্রাসঙ্গিক কথা বলে অথবা অদ্ভূত আচরণ করেন। এতে চিকিৎসকের ধৈর্য্য হারালে চলবে না, রোগীকে প্রকৃত অবস্থা বোঝানোর চেষ্টা করতে হবে। তিনি আরো বলেন, চিকিৎসকদের ভুলত্রুটি হলে সেটাকে স্বীকার করে নিয়ে ভুলগুলো পর্যালোচনা করে নতুন করে শিখতে হবে। প্রফেশনাল জেলাসি পরিহার করে হেলথি কমপিটিশনের দিকে যেতে হবে।

আপনার মতামত দিন:


বিএসএমএমইউ এর জনপ্রিয়