Ameen Qudir
Published:2018-02-13 15:30:39 BdST
কবি অধ্যাপক ডা. মোঃ আবদুর রহিমের ৮ টি নতুন বই বইমেলায়
ফাইল ছবি। ২০১৭ সালের বইমেলায়
কবি অধ্যাপক ডা. মোঃ আবদুর রহিমের বইয়ের মোড়ক উম্মোচন করছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয়
ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান
ডাকতার প্রতিদিন ডেস্ক
_____________________
কবি অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আবদুর রহিমের ৮ টি নতুন বই বইমেলায় । ৪টি কবিতার ,৪টি ছড়ার।
আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি শনিবারবিকাল পাঁচটায় সোহরাওয়ার্দি উদ্যান মঞ্চে অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আবদুর রহিমের এবারের (2018) প্রকাশিত গ্রন্থসমূহের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হবে।
জানিয়েছেন কবি ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয়
ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকতে সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন । কবি আশা করছেন, সবান্ধব উপস্থিতি অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তুলবে।
অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আবদুর রহিম দেশের একজন শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসক। তিনি বর্তমানে
চেয়ারম্যান, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, ঢাকা।
এবারে তার (2018) প্রকাশিত গ্রন্থসমূহঃ
কবিতাগ্রন্থঃ
1) স্মৃতির প্রান্তর
2) মেঘলা আকাশ
3) মায়াময় ছায়াময় স্নিগ্ধ কুঞ্জবন
4) মায়াবী পাহাড়
ছড়াগ্রন্থঃ
1) মেঘ পাহাড়ের দেশে
2) শৈশবের খেলাধুলা
3) ঝুমকোলতা
4) পিঠাপুলির দেশ
সদ্য প্রকাশিত গ্রন্থসমূহের সাথে পূর্ব প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ সীমিত সংখ্যায় পাওয়া যাচ্ছে।
প্রাপ্তিস্থানঃ
স্টল নং 410 (চন্দ্রছাপ)
আব্দুল হাই চত্বর
সোহরাওয়ার্দি উদ্যান
অমর একুশে গ্রন্থমেলা, 2018,
ঢাকা, বাংলাদেশ।
বই এর মোড়ক উন্মোচন ২০১৭
________________________
কবি অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আবদুর রহিমের বই থেকে ৫টি কবিতা প্রকাশ করা হল।
উত্কোচ-বিষবাষ্পে আচ্ছন্ন সমাজ,
ঘুসখোর ঘুস ছাড়া করেনাতো কাজ,
বিসর্জন দিয়ে যেন সব হায়ালাজ
সদম্ভে প্রকাশ্যে করে সমাজে বিরাজ।
সভ্যতার দৃশ্যমান এই অপমান
নির্বিচার নির্বিকার আদান-প্রদান
কোনক্রমে নাই আর সহ্যের সীমায়,
দিশাহারা জনগণ ভয়াবহতায়।
নীতিহীন অর্থলোভী ঘৃণ্য অমানুষ
ক্ষমতা প্রয়োগ করে নিয়ে থাকে ঘুস,
বিপর্যস্ত ভুক্তভোগী বড় নিরুপায়
বাধ্য হয়ে সাধ্যমতো ঘুস দিয়ে যায়।
উত্কোচ সামাজিক ঘৃণ্য আচরণ
বিরাজিত সংক্রামক ব্যাধির মতন
সুযোগ পেলেই এসে করে আক্রমণ
যে-কেউ আক্রান্ত হয় যখন-তখন।
দুষ্টচক্রে জর্জরিত ভয়াবহতায়
সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্বার ছড়ায়,
নিরুপায় জনগণ ক্রমশ জড়ায়,
টিকে থাকা সুকঠিন স্বচ্ছ সততায়।
উত্কোচ ভয়াবহ সামাজিক রোগ
সমাজে ছড়ায় দ্রুত প্রচন্ড দুর্ভোগ;
থাকে যদি দুর্নীতির আগ্রাসী বিস্তার
সহজে তখন কেউ পায়না নিস্তার।
ঘুস খেয়ে খেয়ে যদি বেড়ে যায় লোভ
ঘুস না-পেলে তখন মনে জাগে ক্ষোভ,
কপালের রেখাজুড়ে পড়ে যায় ভাঁজ
অবহেলা করে ফেলে রাখে সব কাজ।
মনে মনে ছক আঁকে ঘুস খাবে বলে
কাজ বিলম্বিত করে নানাবিধ ছলে,
অথচ যে-কাজ দ্রুত করা প্রয়োজন
অগ্রিন না-পেলে কিছু গলেনাতো মন।
ইচ্ছাকৃত কলুষিত মানসিকতায়
অন্তরায় সৃষ্টি করে স্বাভাবিকতায়,
ঘুস পেলে তড়িঘড়ি ব্যস্ত হয়ে অতি,
গতিহীন নথিপত্রে নিয়ে আসে গতি।
অবৈধ জঘন্য ঘৃণ্য আদান-প্রদান
সমাজে কখনো বয়ে আনেনা সম্মান,
অর্থলাভ করে ঘৃণ্য জঘন্য পন্থায়
সুখশান্তি আসেনাতো স্বীয় মর্যাদায়।
অভিশপ্ত ঘুষখোরে ভরা এ ধরায়
ক্ষোভের আগুনে জ্বলে জ্বলন্ত জ্বালায়
ভুক্তভোগী জনগণ ক্ষুব্দ নিরুপায়
প্রাণপণে খুঁজে ফিরে মুক্তির উপায়।
প্রবণতা দূর করে লোভলালসার
আচরণ প্রয়োজন স্বচ্ছ সততার;
নৈতিকতা-বিমন্ডিত দক্ষ প্রশাসন
করে যেতে পারে গুরু দায়িত্ব পালন।
২___________
চোরে চোরে ভরা যদি থাকে কোন দেশ
থাকবে কেমন করে সুস্থ পরিবেশ ?
বিশেষত থাকে যদি স্বঘোষিত চোর
আলোর ভুবনে নামে অন্ধকার ঘোর।
দৃশ্যমান বিদ্যমান কত ভদ্রলোক
অথচ চুরির প্রতি নিদারুণ ঝোঁক,
বুঁদ হয়ে থাকে যেন চুরির নেশায়,
সুযোগ পেলেই মাতে চুরির খেলায়।
অনেকে প্রয়োগ করে ছলচাতুরীর
সুযোগ গ্রহণ করে পুকুর চুরির,
দেখে যেন মনে হয় যত বড় চোর
শাসনে ভাষণে তার তত বেশি জোর।
পৃথিবীটা যেন আজ চোরের ভুবন
অপাঙক্তেয় হয়ে রয়েছে সুজন,
চারিদিকে শোনা যায় চোরের কূজন,
সে কূজনে সুজনেরা হয় যে কুজন।
নিয়োজিত থেকে থেকে চুরির পেশায়
বুঁদ হয়ে গেছে যেন চুরির নেশায়,
চৌর্যবৃত্তি নিয়ে নিত্য প্রতিযোগিতায়
ছোটো চোর কালক্রমে শীর্ষ স্থান পায়।
চোরেরা হয়েছে যেন পরাক্রান্ত বীর
প্রচন্ড প্রতাপে চলে উঁচু করি শির,
চোরে চোরে মিলেমিশে চোরের মেলায়
পৃথিবীটা কলুষিত চুরির খেলায়।
৩.
বিশ্বমাঝে বিদ্যমান ধূর্ত ধুরন্ধর
স্বঘোষিত উত্তেজিত উগ্র শক্তিধর
দেখাতে প্রচন্ডতর ক্ষমতা জবর
অনুক্ষণ ব্যগ্রতায় থাকে তত্পর।
করতে পেরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ
করে যেতে চায় যেন বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ,
অহংকারে করে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ
করতে পারেনা আর আত্মনিয়ন্ত্রণ।
ক্ষমতার অধিকারী যেন সর্বময়
যেকোন কাজেই ভাবে নিশ্চিত বিজয়,
ভাবটা এমন যেন দিলে নির্দেশন
এক বাক্যে মেনে নেবে তামাম ভুবন।
কেউ যদি করে কোন আপত্তি কখন
ধমকের সুরে করে ভয় প্রদর্শন,
ক্ষমতার দাপটের স্বৈরাচারিতায়
বাধ্য করে নির্দেশনা মানাতে যে চায়।
কখনো জঘন্য কোন ভুল সিদ্ধান্তের
মূল্য দিয়ে যেতে হয় তামাম বিশ্বের,
মেনে নিয়ে স্বৈরাচারী ক্রুদ্ধ প্রতিশোধ
বিশ্বব্যাপী শুরু হয় তীব্র প্রতিরোধ।
বিপর্যয় শুরু হয় সারা বিশ্বময়
কখনোবা ঘটে থাকে জঘন্য প্রলয়,
ঐকান্তিক উচ্ছ্বসিত আবেগীয়তায়
উত্তাল জনতা কত প্রাণ দিয়ে যায়।
অযাচিত অবাঞ্ছিত মোড়লিপনার
অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের হঠকারিতার
বিশ্বব্যাপী দৃশ্যমান প্রভাব বিস্তার
নিদারুণ পরিহাস নব্য সভ্যতার।
সভ্যতার যেন কত ধারক বাহক
বিশ্ব জনতার কত বিশ্বস্ত সেবক!
মুখে যেন ঝরে মধু, অন্তরের বিষ
সভ্যতাকে গ্রাস যেন করে অহর্নিশ।
আর কত অযাচিত মোড়লিপনায়
বিপর্যস্ত হবে বিশ্ব স্বেচ্ছাচারিতায়?
বিশ্বজুড়ে প্রত্যাশিত ঐক্য জনতার
সমাপ্তি ঘটাতে পারে মোড়লিপনার।
৪.
অসততা
অসততা দুরারোগ্য সামাজিক রোগ
সমাজে ছড়িয়ে থাকে চরম দুর্ভোগ,
লালসার বিষবাষ্পে বিষায়িত মন
দুর্বিষহ করে তোলে সমাজ জীবন।
অসততা সামাজিক নগ্ন পরিহাস
বিপর্যস্ত সমাজের জঘন্য প্রকাশ,
দুষ্টচক্রে ঘনীভূত আরো বিপর্যয়
সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রসারিত হয়।
অসতেরা ভেবে থাকে হবে লাভবান
সমাজে অর্জিত হবে ব্যাপক সম্মান,
লোভনীয়তার ফাঁদে ধরা দিয়ে মন
প্রলোভিত ভ্রান্ত পথে করে বিচরণ।
অসত্ পন্থায় করে অর্থ উপার্জন
সমাজে করতে চায় প্রতিষ্ঠা অর্জন,
ভাবে হয়ে যাবে যেন কত লাভবান
প্রতিষ্ঠিত হবে স্বীয় দৃঢ অবস্থান।
লোভাতুর পথে পথে মায়া-মরীচিকা
সৃষ্টি করে সামাজিক নগ্ন বিভীষিকা,
অসততা জর্জরিত সৃষ্ট সমস্যায়
জীবন বিপন্ন নষ্ট মানসিকতায়।
অসত্ পন্থায় থেকে লাভের আশায়
কর্মফল যুক্ত হয় ক্ষতির খাতায়;
বিপর্যস্ত ভুক্তভোগী ব্যগ্র নিরুপায়
খুঁজে ফিরে প্রত্যাশিত মুক্তির উপায়।
অসততা বলয়ের বিকৃত জীবন
সুখের সন্ধান দিতে পারে কি কখন?
আপাতত মনে হয় কোন প্রাপ্যতায়
এ জীবন ভরে যাবে সুখের ছোঁয়ায়।
সুখের আশায় থেকে সতত উন্মুখ
আসেনা কখনো আর প্রশান্তির সুখ,
অসংযত জীবনের সীমাহীন পাপ
আজীবন সাথি করে রাখে অভিশাপ।
ধৈর্য ধরে অসততা করে পরিহার
দৃষ্টান্ত স্থাপন করে স্বচ্ছ সততার
জীবন তাদের হয় সুখ সমৃদ্ধির
সাফল্য-সোনায় ভরা স্নিগ্ধ প্রশান্তির।
৫.____________
কেউ যদি একেবারে বেশি বেড়ে যায়
শাস্তি পেয়ে যায় কভু এই দুনিয়ায়,
কখনোবা পৌঁছে যায় ধ্বংসের সীমায়
একেবারে জলজ্যান্ত অস্তিত্ব হারায়।
কেউ যদি ভাবে নিজে বড় শক্তিধর
প্রকাশ করতে থাকে শক্তির খবর,
ভুলে গিয়ে স্বীয় গন্ডি সীমাবদ্ধতার
খোরাক জোগাতে থাকে বাগবিতন্ডার।
কেউ যদি দাবি করে স্বীয় শ্রেষ্ঠত্বের
একচ্ছত্র আধিপত্য আর রাজত্বের,
মনে যদি থাকে দম্ভ আর অহংকার
চড়া মূল্য দিতে হয় ভ্রান্ত ধারণার।
ভুলে গিয়ে আধিপত্য মহান স্রষ্টার
বিশ্বজুড়ে সাময়িক নগ্ন স্বৈরাচার
অযাচিত আস্ফালন করে বার বার
প্রকাশ ঘটাতে চায় স্বীয় ক্ষমতার।
যতই ক্ষমতাধর থাক এ ধরায়
একদিন অবশ্যই ধরা পড়ে যায়,
এত শক্তিমত্তা আর এত আস্ফালন
সহায়ক ভূমিকায় থাকেনা তখন।
ক্ষমতা যেহেতু কারো নয় সীমাহীন
ক্ষমতার আস্ফালন নয় সমীচীন;
শাস্তিযোগ্য ভাগ্যলিপি দুর্ভাগ্যের দিন
না-জানি কখন এসে হয় সম্মুখীন।
আপনার মতামত দিন: